শেষ আপডেট: 22nd May 2024 11:09
দ্য ওয়াল ব্যুরো: দশ বছর আগে আনুষ্ঠানিক ভাবে রাজনীতিতে যোগ দিয়েছেন দেব তথা দীপক অধিকারী। দশ বছর পর এই প্রথম বার কোনও সাক্ষাৎকারে দেব জানালেন তাঁর পরিবারের কে কোন দলের সমর্থক ছিলেন। বাবা, ছেলে, মা ও বোন ভোট ভোট দিতেন আলাদা আলাদা দলকে।
দেবের জন্ম পশ্চিম মেদিনীপুরের কেশপুরের এক গ্রামে। সে গ্রামের নাম মহীষা। বাবা গুরুদাস অধিকারীর বামপন্থী মতাদর্শে আস্থা ছিল। পরে কাজের সূত্রে তিনি মুম্বই চলে যান। মা মৌসুমী অধিকারী ছিলেন গৃহবধূ।
সাক্ষাৎকারে তাঁদের রাজনৈতিক সত্ত্বার কথা উঠে আসে অন্য একটি সূত্রে। সম্প্রতি দেব ও মিঠুন চক্রবর্তীর পারস্পরিক হৃদ্যতার সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কুণাল ঘোষ বলেছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মিঠুন চক্রবর্তীকে গদ্দার বলছেন। কিন্তু দেব বলছেন, গদ্দার বলতে পারব না। তার মানে উনি তো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়েরই বিরোধিতা করছেন।
সাক্ষাৎকারে দেবকে এই ‘গদ্দার’ প্রসঙ্গে কিছু জানতে চাওয়া হয়নি। তবে প্রশ্ন করা হয়, এই যে দেব বলেন, মিঠুন চক্রবর্তী তাঁর পিতৃতুল্য। সাধারণত মধ্যবিত্ত পরিবারে দেখা যায়, বাবা ও ছেলে পৃথক রাজনৈতিক বিশ্বাস নিয়ে চললে খাওয়ার টেবিলে বা খবরের কাগজ পড়ার সময়ে তর্ক হয়। তেমন তর্ক কি কখনও মিঠুন চক্রবর্তীর সঙ্গে তাঁর হয়েছে? বা মিঠুন কি তাঁকে কখনও বলেছেন যে, আমি তৃণমূল থেকে বিজেপিতে চলে এসেছি, তুইও চলে আয়।
এ কথা শুনেই দেব বলেন, “আমার মা শিবসেনা করত, আমরা যেহেতু বম্বেতে থাকতাম। তার পরে বিজেপি হয়ে গেছে। আমি ২০১৪ সালের কথা বলছি।” এখানেই না থেমে দেব বলেন, “আমরা একই টেবিলে খাচ্ছি, বাবা সিপিএমের ভোটার, মা আর বোন তখন বিজেপি হয়ে গেছে, আমি তখন সবে তৃণমূল কংগ্রেসে নাম লিখিয়েছি।”
দেব বলেন, “আমি প্রত্যেকটি মানুষের ব্যক্তি সত্ত্বাকে আমি সম্মান করি”।
মিঠুনের প্রসঙ্গে দেব বলেন, “আমরা দুজনেই একে অপরের মতামতের ব্যাপারে শ্রদ্ধাশীল। ও যদি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে ইয়ার্কি মারতো আমার সঙ্গে বা আমি যদি মোদীজিকে নিয়ে ইয়ার্কি মারতাম ওঁর সঙ্গে, তাহলে এই সম্পর্কটাই থাকত না।”
দেবকে মিঠুনের ডায়লগ নিয়েও প্রশ্ন করা হয়। বলা হয়, এই যে মিঠুন বেলেবোড়া, জলঢোরা ইত্যাদি বলছেন, বা বলছেন চিমটি কাটব এখানে, লাগবে এখানে ওখানে সেখানে। আপনি কি মিঠুন চক্রবর্তীকে কখনও বলেছেন, দাদা এ সব কী বলছ? জবাবে দেব বলেন, “মিঠুনদার এ ধরনের ডায়লগ শোনার হয়তো লোক আছে।”
তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, আপনার অন্যতম ছবি ছিল ‘রংবাজ’। কই আপনাকে তো কখনও বলতে শোনা যায়নি, “আমি ঘাটালের সবচেয়ে বড় রংবাজ।”
ঘাটালের তৃণমূল প্রার্থী এর উত্তরও দিয়েছেন নমনীয় ভাবে। তিনি বলেন, এটা সবই নির্ভর করে বিশ্বাসের উপর। আমি কি বিশ্বাস করি। মিঠুনদার বিশ্বাস ওটাই, হয়তো উনি ভাবেন এটা বলে তাঁর ভোটারদের মোটিভেট করতে পারবেন। সেটা তাঁর ব্যাপার”। দেব পষ্টাপষ্টিই বলেন, “মিঠুন দা যতটুকু আমার সঙ্গে ততটুকু মিঠুন দা আমার। মিঠুন দা বাইরে কী করছেন তার দায়িত্ব তো আমার না”।