শেষ আপডেট: 21st July 2024 12:16
দ্য ওয়াল ব্যুরো: নির্ধারিত সময়ের ৫ মিনিট আগেই ধর্মতলার শহিদ মঞ্চে হাজির হলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। শহিদদের উদ্দেশে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানালেন। ঘড়ির কাঁটায় ঠিক বেলা ১২টায় শুরু হল তৃণমূলের ঐতিহাসিক শহিদ সমাবেশ।
রবিবার দলের ২১ জুলাইয়ের শহিদ সমাবেশের আগে এনিয়ে দলীয় মুখপত্রে একটি নিবন্ধও লিখেছেন অভিষেক। সেখানে ২১ জুলাইয়ের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট বর্ণনার পাশাপাশি আরও বেশি করে মানুষের হয়ে কাজ করার বার্তা দিয়েছেন দলের নেতা, কর্মীদের। অভিষেকের কথায়, '২০২৪ সালের লোকসভা ভোটের ফলাফল উপভোগ করার, কিন্তু আত্মসন্তুষ্টি নয়।'
স্বভাবতই, মঞ্চ থেকে অভিষেক কী বার্তা দেন, তা নিয়ে কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে তো বটেই, দলের নেতৃত্বর মধ্যেও কৌতূহল রয়েছে।
চোখের চিকিৎসার জন্য বেশ কিছুদিন বিদেশে ছিলেন তিনি। ২১ জুলাইয়ের সভায় আদৌ থাকবেন কিনা, তা নিয়েও অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছিল। তবে যাবতীয় জল্পনায় জল ঢেলে শুক্রবার শহরে ফেরেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপরই স্পষ্ট হয়ে যায়, ২১ এর শহিদ মঞ্চে থাকবেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক।
ইতিমধ্যে লোকসভা ভোটে বিপুল জয়লাভ এবং তারপরে বিধানসভার উপ নির্বাচনে সবকটি আসনে জয়ের পর প্রশাসনের অন্দরে বড় ঝাঁকুনি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সরকারি জমি দখলের প্রশ্নে যে কাউকেই রেয়াত করা হবে না, তার স্পষ্ট প্রমাণ শিলিগুড়ির দুই দাপুটে তৃণমূল নেতাকেও জেলে ঢোকাতে কিন্তু বোধ করেননি নেত্রী। মনে করা হচ্ছে, এবারের ২১ এর মঞ্চ থেকে সমাজসেবার প্রশ্নে ফের একবার নেতা, কর্মীদের 'পার্টি ক্লাস' নিতে পারেন দলনেত্রী।
দলীয় মুখপত্রের নিবন্ধেও অভিষেক অনেকটা তেমনই ইঙ্গিত দিয়েছেন। ২৬ এর বিধানসভা ভোটে যাওয়ার আগে একদিকে যেমন সংগঠনকে ঢেলে সাজানোর পরোক্ষ ইঙ্গিত রয়েছে তেমনই আরও বেশি করে মানুষের কাজ করার বার্তা স্পষ্ট করা হয়েছে।
অভিষেকের কথায়, "লোকসভা ভোটের ফলাফলে ‘আত্মতুষ্টি’ চলে এলে তাতে দল এবং প্রশাসন— দুয়েরই ক্ষতি হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা। কাজ করতে হবে মন্ত্রী এবং আমলাদেরও।" দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ মেনেই যে দলে পরিচালিত হবে, তাও আরও একবার নিজের লেখায় স্পষ্ট করেছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক।
কালীঘাট ঘনিষ্ঠদের মতে, এবারের শহিদ সমাবেশের প্রেক্ষাপট গত বারের তুলনায় ভিন্ন। গত বছর দলের মূল অভিমুখ তথা লক্ষ্যই ছিল লোকসভা ভোটে বিজেপিকে ঠেকাতে মরিয়া চেষ্টা করা। তাই গতবার মমতার বক্তৃতায় অনেক বেশি প্রাধান্য পেয়েছিল, কেন্দ্রের আর্থিক অবরোধ, সিবিআই-ইডির মতো এজেন্সির অপব্যবহারের অভিযোগ ইত্যাদি। একই সঙ্গে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও বাংলার বিরুদ্ধে কেন্দ্রের বঞ্চনাকে একুশের মঞ্চ থেকেই নতুন উচ্চতা দিয়েছিলেন। বকেয়া আদায়ের দাবিতে দিল্লি চলোর ডাক দিয়েছিলেন তিনি। বঞ্চনা ও বকেয়া আদায়ের দাবি এবারও যে উঠবে না তা নয়। বরং বঞ্চনার জবাব যে মানুষ এই ভোটে দিয়েছেন, তা দাবি করতে পারেন অভিষেক। তবে অনেকের মতে, সেটাও মুখ্য হয়ে উঠবে না। মুখ্য হয়ে উঠতে পারে ‘সংস্কারের’ বিষয়আশয়।