শেষ আপডেট: 1st March 2024 14:56
দ্য ওয়াল ব্যুরো: সুব্রত বক্সী তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি। দলের জন্ম মুহূর্ত থেকে এই পদে রয়েছেন। কিন্তু এহেন বক্সীদা শেষ কবে জেলা সফরে গিয়েছেন তা তৃণমূলের অনেকেই স্মরণ করে বলতে পারবেন না। কেউ বলতে পারেন, এই তো সেদিন ব্যারাকপুরে অর্জুন সিংয়ের সঙ্গে মিটিং করতে গেছিলেন। সেখানে আবার সোমনাথ শাম এলো না। তা শুনে দলের মধ্যে থেকেই জবাব আসতে পারে ধুর, ব্যারাকপুর তো বৃহত্তর কলকাতার মধ্যেই পড়ে।
সে যাক। মোদ্দা বিষয় হল, একুশের ভোটের সময়ে সুব্রত বক্সী নন্দীগ্রামে ভোট ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে ছিলেন। তার তিন বছর পর শুক্রবার ফের জেলা সফরে গিয়েছেন তিনি। এবং তাঁর প্রথম জেলা সফরে যে কাণ্ড ঘটেছে, তা নিয়ে হই হই পড়ে গেছে দলের মধ্যে।
কেন?
১০ মার্চ ব্রিগেডে জনগর্জন সভা করবে তৃণমূল। সেই সভার জন্য জেলায় জেলায় সংগঠনের প্রস্তুতি বৈঠক শুরু হয়েছে। সুব্রত বক্সী এদিন পূর্ব মেদিনীপুরে সাংগঠনিক বৈঠক করতে গিয়েছেন। কিন্তু সেই বৈঠকে ডাকা হয়নি জেলার সাংগঠনিক দায়িত্বে থাকা রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষকে।
একুশের বিধানসভা ভোটের পর থেকে কুণাল তমলুক, কাঁথিতে সংগঠন দেখভাল করছেন। আকছার তাঁকে নন্দীগ্রামে যেতে দেখা যায়। কিন্তু সাংগঠনিক বৈঠকে ডাক না পাওয়ায় কুণাল ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন। এতটাই যে টুইটার বায়ো থেকে তাঁর রাজনৈতিক পরিচয় মুছে দিয়েছেন। তারপর পুলিশি নিরাপত্তাও ছেড়ে দিয়েছেন।
অনেকের মতে, কুণালকে ওই বৈঠকে না ডাকার একটা কারণ রয়েছে। সুব্রত বক্সী হয়তো বিতর্ক এড়াতে চেয়েছেন। গত ১ জানুয়ারি তৃণমূলের প্রতিষ্ঠা দিবসের কর্মসূচি ছিল। সেখানে বক্তৃতায় সুব্রত বক্সী বলেছিলেন, “অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আমাদের সর্ব স্তরের ভারতবর্ষের রাজনীতিতে সাধারণ সম্পাদক। স্বাভাবিক ভাবেই এই নির্বাচনে যদি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় লড়াই করেন, নিশ্চিত ভাবে আমাদের ধারণা, উনি লড়াইয়ের ময়দান থেকে পিছিয়ে যাবেন না। যদি লড়াই করেন, তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সামনে রেখে লড়াই করবেন উনি”।
বক্সীর এই কথা নিয়ে প্রকাশ্যে আপত্তি করেন কুণাল। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, সুব্রত বক্সীকে সম্মান করি। কিন্তু ওনার বাক্য গঠন নিয়ে আমার আপত্তি রয়েছে। সেই সঙ্গে বলেন, “অভিষেক তো লড়াইয়ের ময়দানেই রয়েছেন। অভিষেক যে কথা বলতে চান, তা শুনলে দলের মঙ্গল হবে”।
কুণাল এভাবে খোলাখুলি বক্সীর সমালোচনা করায় রাজ্য সভাপতি কিছুটা অস্বস্তিতেই পড়েন। পরে শোনা যায়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও বক্সীকে বলেন, অভিষেককে নিয়ে ও কথা বলার কী দরকার ছিল!
অনেকে মনে করছেন, এই সব বিতর্ক যাতে না হয় সেই কারণে কুণালকে এড়াতে চেয়েছেন সুব্রত বক্সী। কিন্তু তা নিয়েও এবার জলঘোলা শুরু হল।