শেষ আপডেট: 17th July 2024 13:17
দ্য ওয়াল ব্যুরো: মুম্বই বিমানবন্দরে ফাইফরমাশ খাটার কাজের লোক নিয়োগের সরাসরি ইন্টারভিউয়ে জড়ো হওয়া জনস্রোতে হাজির বাণিজ্যে স্নাতকোত্তর, বিবিএ এবং বিকম পাশ স্নাতকরাও। মাত্র ২২ হাজার টাকার মাইনের চাকরি পেতে দূরদূরান্ত থেকে এসেছেন, কেউবা রাতের মধ্যেই চলে এসেছিলেন সেখানে।
সম্প্রতি এয়ার ইন্ডিয়া এয়ারপোর্ট সার্ভিসেস লিমিটেড মুম্বই বিমানবন্দরে মালবাহক বা ফাইফরমাশ খাটার লোক চেয়ে আবেদন করেছিল। যে চাকরির জন্য সরাসরি যোগাযোগের কথা ছিল বিজ্ঞাপনে। সামান্য বেতনের এবং শিক্ষাভিত্তিক কম মর্যাদার এই কাজের পরীক্ষাতেও হাজার হাজার কর্মপ্রার্থী জড়ো হন। অবস্থা এমন পর্যায়ে পৌঁছায় যে, পদপিষ্ট হওয়ার জোগাড় হয়।
এনডিটিভি জানাচ্ছে, চাকরিপ্রার্থীদের অনেকেই ছিলেন উচ্চশিক্ষিত। বিমানবন্দরের লোডার এবং হ্যান্ডিম্যানের পদের জন্য ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা লাগে। বেতনক্রম ২০-২৫ হাজার টাকা মাসে। তবে শারীরিক সক্ষমতা পুরোদমে প্রয়োজন। কারণ তাঁদের কাজই হচ্ছে, মালপত্র ওঠানো-নামানো, ব্যাগেজ বেল্ট অপারেশন এবং ভিতরে চলাচলকারী ট্রাক্টর চালানো।
এই সরাসরি সাক্ষাতের ডাক দিয়েছিল এয়ার ইন্ডিয়া এয়ারপোর্টস সার্ভিসেস লিমিটেড। আর সেই চাকরি পেতেই মুম্বইয়ের কলিনায় জড়ো হয়েছিলেন হাজার হাজার চাকরিপ্রার্থী। যেমন এসেছিলেন প্রথামেশ্বর। তিনি এসেছিলেন ৪০০ কিমি দূরের বুলধানা জেলা থেকে। প্রথামেশ্বর বিবিএ-র দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র।
তিনি বলেন, হ্যান্ডিম্যানের চাকরির জন্য এসেছিলাম। ওরা মাসে ২২ হাজার ৫০০ টাকা বেতনের কথা লিখেছিল। তাঁকে এনডিটিভি-র প্রতিবেদক প্রশ্ন করেন, চাকরি পেলে কি আপনি পড়াশোনা ছেড়ে দেবেন? জবাবে বলেন, আমরা কী করব? দেখতে পাচ্ছেন না চারিদিকে কত বেকার ঘুরে বেড়াচ্ছে! সরকারের কাছে আমাদের বিনীত আবেদন, দয়া করে চাকরি সুযোগ বাড়ান, না হলে না খেয়ে মরতে হবে।
বিএ পাশ আরেক পরীক্ষার্থীর কথায়, আমি জানিও না হ্যান্ডিম্যান কাকে বলে, কাজটাই বা কী? কিন্তু, আমার এখনই একটা চাকরি চাই। ঠিক একইভাবে খোঁজ মিলল সুদূর রাজস্থানের আলোয়ার থেকে আসা এক চাকরিপ্রার্থীর। তাঁর পকেটে ছিল এম-কম ডিগ্রি। এই কাজে খুব কম শিক্ষাগত যোগ্যতা লাগে জেনেও কাজের খোঁজে তিনি এখানে এসে পৌঁছান। তিনি বলেন, আমি সরকারি চাকরির প্রস্তুতি নিচ্ছি। একজন বলল, এখানে ভালো মাইনে মিলবে। তাই আমি চলে এসেছি।
ঘণ্টার পর ঘণ্টা খাবার ও জল ছাড়া দাঁড়িয়ে থাকায় বহু যুবক অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। শেষে পরিস্থিতি বেগতিক দেখে নিয়োগকারীরা চাকরিপ্রার্থীদের আবেদনপত্র জমা দিয়ে বাড়ি চলে যেতে বলেন।