দ্য ওয়াল ব্যুরো: ঘড়ির কাঁটার সময় পারফেক্ট। আবহাওয়াও অনুকূল। পৃথিবীর মাটি ছাড়াল স্পেস এক্সের ফ্যালকন ৯ রকেট। ক্রু ড্রাগন ক্যাপসুলের ভেতরে দুই নভশ্চর রবার্ট বেনকেন ও ডগলাস হার্লেকে নিয়ে শুরু হয়েছিল কাউন্টডাউন। ইস্টার্ন টাইম ৩টে ২২ মিনিট নাগাদ ফ্লোরিডার কেনেডি স্পেস সেন্টারের ৩৯ এ লঞ্চপ্যাড থেকে মহাশূন্যে উড়ে যায় ফ্যালকন।
ঐতিহাসিক মহাকাশযাত্রার কাউন্টডাউন (ভারতীয় সময়)
১২টা ০৫ মিনিট- ড্রাগন ক্যাপসুলে ঢুকে যান দুই নভশ্চর অ্যাস্ট্রো-বেনকেন ও অ্যাস্ট্রো-হার্লে। রকেটের যান্ত্রিক ব্যবস্থা পরীক্ষানিরীক্ষা শুরু।
১২টা ২১ মিনিট- প্রপেলান্ট লোডিং শুরু। আবহাওয়ার অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে রিপোর্ট দেন বিশেষজ্ঞরা।
১২টা ২৮ মিনিট- জ্বালানি ভর্তি করা হয় রকেটের চেম্বারে।
১টা ০১ মিনিট- ৩৯ এ লঞ্চপ্যাড থেকে ফ্যালকন ৯ রকেটের উৎক্ষেপণ।
১টা ০৭ মিনিট-ফ্যালকন ৯ রকেট থেকে আলাদা হয়ে বেরিয়ে গেছে ড্রাগন ক্যাপসুল। গতি বাড়িয়ে এগিয়ে যাচ্ছে পৃথিবীর কক্ষপথের দিকে। প্রতি ঘণ্টায় ১৭ হাজার মাইল বেগে ক্যাপসুল পাড়ি দেবে আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনের দিকে। পৌঁছতে সময় লাগতে পারে ১৯ ঘণ্টা।
https://twitter.com/NASA/status/1266812876125323267
https://twitter.com/NASA/status/1266812660374528001
স্পেস এক্সের এই মহাকাশ যাত্রাকে ঐতিহাসিক আখ্যা দিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। কারণ ২০১১ সালের পরে মহাকাশে ফের মানুষ নিয়ে যাওয়ার বড়সড় কর্মযজ্ঞ শুরু হয়েছে। এবার আর অন্য দেশের সাহায্য নয়, মার্কিন বেসরকারি গবেষণা সংস্থাই গোটা মিশনের উদ্যোগ ও পরিকল্পনা সাজিয়েছে। এই উদ্যোগে স্পেস এক্সের হাত ধরেছে নাসাও।
https://twitter.com/NASA_Johnson/status/1266805519165132800
https://twitter.com/SpaceX/status/1266798486256676864
https://twitter.com/NASA/status/1266798361593688070
নাসা প্রধান জিম ব্রিডেনস্টাইন জানিয়েছে, প্রথমবার কোনও বেসরকারি মহাকাশ গবেষণা সংস্থা মহাকাশ মিশনের এত বড় উদ্যোগ নিয়েছে। দেশের জন্য এটা গর্বের মুহূর্ত। ঠিক সময় স্পেসক্রাফ্ট যাত্রা শুরু করলে বেনকেন ও হার্লের আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনে পৌঁছতে সময় লাগবে ১৯ ঘণ্টার মতো। প্রাথমিকভাবে ঠিক হয়েছে ২১০ দিন তাঁরা কাটাতে পারবেন স্পেস স্টেশনে। তবে এখনই এই সময়টা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। নভশ্চররা স্পেস স্টেশনে পা রাখার পরেই পরবর্তী পরিকল্পনা ঠিক হবে।
পৃথিবীর কক্ষপথের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে ড্রাগন ক্যাপসুল
https://twitter.com/NASA/status/1266814646796931074
https://twitter.com/NASA/status/1266816059656544264
স্পেস এক্স প্রধান ইলন মাস্ক বলেছেন, এই ঐতিহাসিক মহাকাশ যাত্রা নাম দেওয়া হয়েছে ‘ডেমো ২’। এটা ডেমোনস্ট্রেশন মিশন যা প্রমাণ করবে স্পেস এক্স শুধু স্পেসক্রাফ্ট বানাতেই দক্ষ নয়, নিরাপদে মহাকাশে মানুষও নিয়ে যেতে পারে। এই ক্রু ড্রাগন ক্যাপসুল যার মধ্যে দুই নভশ্চর থাকবেন, এর নকশাও বিশেষ ভাবে বানানো। দীর্ঘ সময় মহাকাশযাত্রার জন্য নাসার উদ্যোগে এমন স্পেস-ক্যারিয়ার বানানো হয়েছে।
https://twitter.com/SpaceX/status/1266806054639173632
প্রথমবার ২০০৮ সালে পৃথিবীর কক্ষে ফ্যালকন ১ রকেট পাঠিয়েছিল স্পেস এক্স। সেটাই ছিলপ্রথম মহাকাশ মিশন। ২০১০ সালে পরীক্ষামূলকভাবে ড্রাগন স্পেসক্রাফ্ট মহাকাশে পাঠিয়েছিল তারা। এরপরে ২০১৫,২০১৭ সালে ফ্যালকন ৯ রকেট পাক খেয়েছে পৃথিবীর কক্ষে। ২০১১ সালে প্রথমবার আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনে নামে স্পেস এক্সের ড্রাগন স্পেসক্রাফ্ট। তারপর থেকে দীর্ঘ সময়ের বিরতি। ৯ বছর পরে নাসার সঙ্গে হাত মিলিয়ে ফের আইএসএস-এ নভশ্চর পাঠানোর প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে স্পেস এক্স।
৪৮ বছরের অ্যাস্ট্রো-বেনকেন ও ৫৩ বছরের অ্যাস্ট্রো-হার্লে দু’জনেই দক্ষ মার্কিন নভশ্চর। হার্লে মার্কিন নৌসেনার ফাইটার জেটের পাইলট। বেনকেন ফ্লাইট টেস্ট ইঞ্জিনিয়ার। আগে মার্কিন বায়ুসেনায় ছিলেন। পরে নাসায় যোগ দেন। এর আগেও ২৯ দিন মহাশূন্যে কাটানোর অভিজ্ঞতা রয়েছে বেনকেনের।