শেষ আপডেট: 1st August 2023 09:12
দ্য ওয়াল ব্যুরো, হুগলি: ধর্মঘটের দিন স্কুলে না আসায় ন’জন মিডডে মিল রাঁধুনিকে কাজ থেকে বসিয়ে দিল হুগলি (Hooghly) গার্লস স্কুল কর্তৃপক্ষ। কাজ হারিয়ে বিক্ষোভ করতে করতেই কান্নায় ভেঙে পড়লেন ওই মহিলারা। পরিস্থিতি সামাল দিতে স্কুলে যায় পুলিশ। তাঁরা তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর দ্বন্দ্বের শিকার হয়েছেন বলে দাবি।
৯ মার্চ ডিএ এর দাবিতে ধর্মঘট ছিল সরকারি কর্মচারীদের (School sacks nine cooks on strike over DA's demands)। হুগলি গার্লস স্কুলের মিডডে মিলের রাঁধুনিরা অস্থায়ী। সামান্য ভাতায় কাজ করেন তাঁরা। সেই ধর্মঘটের দিন স্কুলে উপস্থিত হননি। স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা-সহ অন্য অনেকেই সেদিন স্কুলে অনুপস্থিত ছিলেন। কিন্তু কেন ধর্মঘটের দিন স্কুলে আসেননি তা নিয়ে শোকজ করা হয় নয় জন রাঁধুনিকে। তার জবাবও দেন তাঁরা।
মঙ্গলবার তাঁরা কাজে এলে স্কুল থেকে বের করে দেওয়া হয়। এরপরই স্কুলের সামনে বিক্ষোভ শুরু করেন রাঁধুনিরা। কান্নায় ভেঙে পড়েন। স্বনির্ভর গোষ্ঠীর ওই মহিলারা জানান, তাঁরা দীর্ঘদিন ধরে স্কুলে রান্নার কাজ করছেন। একদিন স্কুলে না আসায় তাদের কাজ থেকে বসিয়ে দেওয়া হল। তৃণমূলের স্থানীয় কাউন্সিলর ঝন্টু বিশ্বাস ছিলেন স্কুলের সভাপতি। তাঁকে সরিয়ে বিধায়ক অসিত মজুমদার স্কুল কমিটির সভাপতি করেন সঞ্জনা সরকারকে। ঝন্টু আর সঞ্জনার দ্বন্দ্বের শিকার হয়েছেন মিডডে মিল রাঁধুনিরা, এমনই অভিযোগ।
অভিযোগ স্কুল সভাপতির সঙ্গে প্রধান শিক্ষিকা চক্রান্ত করেছেন। মিডডে মিল রাঁধুনি জয়তি বিশ্বাস বলেন, “ধর্মঘটের দিন বড়দি সহ অন্যান্য শিক্ষিকারাও স্কুলে আসেনি। আর আমাদের কাজ চলে গেল। আমরা ঝন্টু বিশ্বাসের সঙ্গে থাকি তাই সভাপতি আমাদের সঙ্গে এমন করল।”
যদিও সঞ্জনা সরকারের দাবি এটা স্কুল কমিটির সিদ্ধান্ত। তিনি বলেন, “রাঁধুনিদের বিরুদ্ধে খাবার সরানোর অভিযোগ আছে। আবার ধর্মঘটের দিন তারা কিছু না বলে স্কুলে আসেননি। সেদিন যে বাইশটা বাচ্চা স্কুলে এসেছিল তাদের খাবার কিনে দিতে হয়েছে।”
স্কুলের প্রধানশিক্ষিকা গার্গী মিত্র বলেন, “কাজ থেকে ওঁদের বসিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত আমার একার নয়। স্কুল পরিচালন কমিটি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।” ধর্মঘটের দিন তিনি নিজেও অনুপস্থিত ছিলেন বলেও স্বীকার করেন। তবে হুগলি চুঁচুড়া পুরসভার পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর ঝন্টু বিশ্বাস বলেন, “এটা একটা অমানবিক এবং স্বৈরাচারী সিদ্ধান্ত। আমার রাজনৈতিক জীবনে এরকমটা দেখিনি। বাম আমল থেকে এই গরিব অসহায় মহিলারা একটা সাম্মানিক ভাতায় রাঁধুনির কাজ করতেন। হঠাৎ করে তাদের এইভাবে কাছ থেকে বসিয়ে দেওয়া হল। একবার ভাবা হল না, কী করে ওদের সংসার চলবে।”
আরও পড়ুন: মহম্মদ রফির গান গেয়ে সাইকেলে চেপে ঘুরছেন পরমেশ্বর, গুরুকে এভাবেই শ্রদ্ধা ভক্তের