শেষ আপডেট: 21st August 2020 18:30
দ্য ওয়াল ব্যুরো: বিশ্বে প্রথম করোনার ভ্যাকসিন নিয়ে আসার দাবি করেছে রাশিয়া। তাদের তৈরি ‘স্পুটনিক ভি’ ভ্যাকসিন নিয়ে টানাপড়েনের মাঝেই দ্বিতীয় ভ্যাকসিনের কথা সামনে আনল পুতিনের দেশ। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের তত্ত্বাবধানে স্পুটনিক ভ্যাকসিন তৈরি করেছে গ্যামেলিয়া রিসার্চ ইনস্টিটিউট। দ্বিতীয় ভ্যাকসিন ‘এপিভ্যাককরোনা’ (EpiVacCorona) বানিয়েছে ভেক্টর স্টেট রিসার্চ সেন্টার অফ ভাইরোলজি অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি। এই ভ্যাকসিনের তৃতীয় স্তরের ট্রায়াল চলছে। জানা গেছে সেপ্টেম্বরেই ট্রায়াল শেষ হবে। স্পুটনিক ভি হল ভেক্টর ভ্যাকসিন। অ্যাডেনোভাইরাসের দুর্বল স্ট্রেনের সঙ্গে করোনার প্রোটিন মিশিয়ে ভ্যাকসিন ক্যানডিডেট ডিজাইন করেছে গ্যামেলিয়া রিসার্চ ইনস্টিটিউট। এপিভ্যাককরোনা ঠিক কীভাবে তৈরি হয়েছে সে বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য এখনও সামনে আনেনি রাশিয়া। তবে এই টিকার প্রথম স্তরের ট্রায়ালের রিপোর্ট সামনে এসেছে। ভেক্টর স্টেট রিসার্চের ভাইরোলজিস্টরা বলেছেন, প্রথম দফায় ৫৭ জনের শরীরে টিকা দেওয়া হয়েছিল। কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি। প্রথম ডোজ দেওয়ার ১৪-২১ দিনের মাথায় দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হয়। দেখা গেছে, প্রত্যেকের শরীরেই অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে। টিকার কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও নেই। গত ১১ অগস্ট রাশিয়া ঘোষণা করে, বিশ্বে প্রথম করোনার টিকা নিয়ে আসছে তারাই। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন জানিয়েছিলেন, এই টিকা মানুষের শরীরে সুরক্ষিত। তাঁর মেয়েকেও টিকা ইনজেক্ট করা হয়েছে এবং কোনওরকম পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি। প্রথমে সেপ্টেম্বরে টিকা নিয়ে আসার কথা জানিয়েছিল স্বাস্থ্যমন্ত্রক, পরিবর্তিত গাইডলাইনে জানানো হয়েছে অগস্টের শেষেই টিকা নিয়ে আসা হবে। স্পুটনিক ভি ভ্যাকসিনের সুরক্ষা ও কার্যকারিতা নিয়ে তুমুল বিতর্ক চলছে আন্তর্জাতিক মহলে। প্রথম পর্যায়ে মাত্র ৭৬ জনের শরীরে পরীক্ষামূলক প্রয়োগ করেই কীভাবে ভ্যাকসিন নিয়ে আসার কথা বলছে রাশিয়া, এই নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে নানা মহলেই। টিকার সুরক্ষাবিধিতেই এবার বড়সড় প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন খোদ রাশিয়ারই অভিজ্ঞ ডাক্তার এবং এথিক্স কাউন্সিলের অন্যতম প্রধান ডক্টর আলেক্সান্ডার। তাঁর অভিযোগ, ভ্যাকসিন তৈরি ও তার ট্রায়ালের দায়িত্বে থাকা প্রধান দু’জন নিয়ম ভেঙে বেআইনিভাবে টিকার প্রয়োগ করেছেন। তাঁরা হলেন গ্যামেলিয়া রিসার্চ ইনস্টিটিউটের ডিরেক্টর ভাইরোলজিস্ট আলেক্সান্ডার গিন্টসবার্গ এবং রুশ সেনার মুখ্য ভাইরোলজিস্ট অধ্যাপক সার্গে বোরিসেভিক। সরকারের এথিক্স কাউন্সিলের নিয়ম ভেঙে টিকার প্রয়োগ হয়েছে দাবি করে কমিটি থেকে পদত্যাগও করেছেন ডাক্তার আলেক্সান্ডার। যদিও রাশিয়ার ক্লিনিকাল ট্রায়াল অর্গানাইজেশনের ডিরেক্টর ভেতলানা জ়্যাভিডোভা বলেছেন, একসঙ্গে প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল করা হয়েছে ভ্যাকসিনের। দাবি, দুই পর্যায়তেই সাফল্য মিলেছে। স্বেচ্ছাসেবকদের শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হতে শুরু করেছে।