শেষ আপডেট: 13th November 2020 18:30
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ব্রিটেনে জরুরি ভিত্তিতে টিকা আনা হবে কিনা সে নিয়ে কথাবার্তা চলছিলই। তবে অক্সফোর্ড জানিয়ে দিয়েছিল সব নিয়ম মেনে বড়দিনের আগেই টিকার ডোজ নিয়ে আসতে পারে তারা। রাশিয়াও দাবি করেছিল তাদের স্পুটনিক ভি টিকার ট্রায়ালের ফল কার্যকরী। কাজেই বিশ্বের বাজারে এই টিকার প্রয়োগে অনুমতি দিক বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। এদিন হু-র তরফে বিবৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, জরুরি ভিত্তিতে রুশ টিকাতে ছাড়পত্র দেওয়া যেতে পারে, তবে সেফটি ট্রায়ালের সব রিপোর্ট খতিয়ে দেখার পরেই। বিশ্বে যেভাবে করোনা সংক্রমণ বেড়ে চলেছে তাতে উদ্বেগেই রয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। হু-প্রধান টেড্রস আধানম ঘেব্রেইসাস বলেছেন, মানুষ ক্লান্ত হয়ে পড়বে, কিন্তু করোনা নয়। শীতে ফের একবার দাপট দেখাতে পারে ভাইরাস। এর মধ্যেই আবার আমেরিকা, ইউরোপে করোনার সঙ্গেই ইনফ্লুয়েঞ্জার উৎপাত বাড়তে পারে। দুই ভাইরাসের জোড়া আক্রমণ হলে সেই পরিস্থিতি হবে টুইনডেমিক। তাই চিন্তার কারণ রয়েছেই। হু বলছে, এই বছরের শেষে বা আগামী বছরের গোড়ায় ভ্যাকসিন নিয়ে আসা খুবই জরুরি। পশ্চিমের দেশগুলিতে বিশেষ করে সংক্রমণের পরবর্তী ঢেউ আসার আগেই টিকার ডোজ দেওয়া শুরু করে দিতে হবে। সেদিক থেকে রুশ টিকা জরুরি ভিত্তিতে নিয়ে আসা হবে কিনা সে নিয়ে আলোচনা চলছে। তবে হু-এর তরফে এও নিশ্চিত করা হয়েছে যে, টিকার সুরক্ষা ও কার্যকারিতা পুরোপুরি খতিয়ে দেখে তবেই টিকায় ছাড়পত্র দেওয়া হতে পারে। দেশের প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের সাহায্যে স্পুটনিক ভি টিকা তৈরি করেছ রাশিয়ার গ্যামেলিয়া রিসার্চ ইনস্টিটিউট। এই টিকার সুরক্ষা নিয়ে সুরক্ষা ও কার্যকারিতা নিয়ে তুমুল বিতর্ক চলেছে আন্তর্জাতিক মহলে। প্রথম পর্যায়ে মাত্র ৭৬ জনের শরীরে পরীক্ষামূলক প্রয়োগ করেই কীভাবে ভ্যাকসিন নিয়ে আসার কথা বলছে রাশিয়া, এই নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে নানা মহলেই। টিকার সুরক্ষাবিধিতেই বড়সড় প্রশ্ন তুলে দিয়েছিলেন খোদ রাশিয়ারই অভিজ্ঞ ডাক্তার এবং এথিক্স কাউন্সিলের অন্যতম প্রধান ডক্টর আলেক্সান্ডার। তাঁর অভিযোগ ছিল, ভ্যাকসিন তৈরি ও তার ট্রায়ালের দায়িত্বে থাকা প্রধান দু’জন নিয়ম ভেঙে বেআইনিভাবে টিকার প্রয়োগ করেছেন। সরকারের এথিক্স কাউন্সিলের নিয়ম ভেঙে টিকার প্রয়োগ হয়েছে দাবি করে কমিটি থেকে পদত্যাগও করেছেন ডাক্তার আলেক্সান্ডার। এত বিতর্কের মুখেও গ্যামেলিয়া দাবি করেছিল, তাদের টিকা মানুষের শরীরে সম্পূর্ণ সুরক্ষিত। প্রথম দুই দুই পর্বের ট্রায়ালের রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছিল বিশ্বের প্রথম সারির মেডিক্যাল জার্নাল ল্যানসেটে। গবেষকরা দাবি করেছিলেন, টিকার ডোজে অ্যান্টিবডি তৈরির প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেছে। কম জনের মধ্যে ট্রায়াল হলেও সুফল দেখা গেছে। রুশ টিকার এখন তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল চলছে। ৪৫টি মেডিক্যাল সেন্টারে প্রায় ৪০ হাজার স্বেচ্ছাসেবককে টিকা দেওয়া হচ্ছে। পুতিন সরকার জানিয়েছে, এই ট্রায়াল শেষ করে তার রিপোর্ট খুব শীঘ্রই সামনে আনা হবে।