শেষ আপডেট: 7th September 2020 18:30
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ভ্যাকসিনের সেফটি ট্রায়ালে সাফল্যের সঙ্গে পাশ করে গেছে। কোয়ালিটি টেস্টেও কোনও গলদ নেই বলে দাবি। তাই প্রথম দফায় আমজনতার জন্য টিকার ডোজ নিয়ে এল রাশিয়ার গ্যামেলিয়া ন্যাশনাল রিসার্চ সেন্টার অব এপিডেমোলজি অ্যান্ড মাইক্রোবায়োলজি এবং রাশিয়ান ডাইরেক্ট ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড। কোথায় কীভাবে টিকার বিতরণ হবে তার পরিকল্পনা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে রাশিয়ার স্বাস্থ্যমন্ত্রক। সরকারি তরফে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে, স্পুটনিক ভি টিকা করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে সক্ষম। প্রথম দুই পর্বের ট্রায়ালে সে প্রমাণ মিলেছে। টিকার ডোজে মানুষের শরীরে পর্যাপ্ত অ্যান্টিবডি তৈরি হচ্ছে। টি-কোষও সক্রিয় করে রোগ প্রতিরোধ তৈরি করছে। তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালের রিপোর্টও ভাল। এই পর্যায়ে বহু মানুষের শরীরে টিকার ইঞ্জেকশন দিয়ে দেখা গেছে কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। কোয়ালিটি টেস্টে পাশ করার পরে মেডিক্যাল ডিভাইস রেগুলেটরের অনুমতিও মিলেছে। তাই টিকার প্রথম ইউনিট বাজারে আনা হচ্ছে। রাশিয়ায় প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের তত্ত্বাবধানে করোনার ভ্যাকসিন তৈরি করছে গ্যামেলিয়া রিসার্চ ইনস্টিটিউট। ট্রায়াল শুরু হয় ১৮ জুন। দুই পর্বে ৭৬ জনকে টিকার ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়। দুটি দলে ভাগ করে ভিন্ন ডোজে টিকা দেওয়া হয় প্রাপ্তবয়স্ক স্বেচ্ছাসেবকদের। তার পরে সরকারি হাসপাতালেই তাঁদের পর্যবেক্ষণে রাখা হয়। রাশিয়ার স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছে, প্রথম দলের সকলের শরীরেই ভাইরাসের মোকাবিলায় প্রতিরোধ ক্ষমতা সক্রিয় হয়েছে। কারও শরীরে টিকার কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। মস্কোর সেচেনভ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী ভাদিম তারাসভের বক্তব্য, গ্যামেলিয়া একদিনে ভ্যাকসিন তৈরি করে ফেলেনি। ভ্যাকসিন নিয়ে তাদের দীর্ঘ গবেষণা রয়েছে। এই গবেষণার মজবুত ভিত রয়েছে। যে অ্যাডিনোভাইরাসের কারণে সাধারণ সর্দি জ্বর হয়, তার উপর ভিত্তি করেই নতুন টিকা বানানো হয়েছে। রাশিয়ার স্বাস্থ্যমন্ত্রকের মুখ্য এপিডেমোলজিস্ট নিকোলাই ব্রিকোও একই দাবি করেছেন। সম্প্রতি ল্যানসেট মেডিক্যাল জার্নালেও রুশ টিকার ইতিবাচক দিকের কথা জানানো হয়েছে। ল্যানসেটের গবেষণাপত্রে দাবি করা হয়েছে, টিকার প্রথম ডোজ দেওয়ার ২১ দিনের মধ্যেই অ্যান্টিবডি তৈরির প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেছে। গবেষকদের দাবি, দ্বিতীয় রিপোর্ট পাওয়া যায় ট্রায়ালের ২৮ দিন পর থেকে। দেখা গেছে, টিকার ইঞ্জেকশন দেওয়ার পরেই রক্তে টি-কোষ তথা টি-লিম্ফোসাইট কোষ সক্রিয় হতে শুরু করেছে। এই টি-কোষ হল শরীরের মূল সুরক্ষা কবচ। এই কোষ সক্রিয় হলেই ভাইরাস বা প্যাথোজেনের বিরুদ্ধে ‘অ্যাডাপটিভ ইমিউন রেসপন্স’ তৈরি হয় শরীরে। স্পুটনিক ভি টিকার প্রভাবেও রোগ প্রতিরোধ শক্তি তৈরি হচ্ছে বলেই দাবি। ভারতেও রুশ টিকার ট্রায়াল ও উৎপাদন শুরু হতে পারে বলে জানা গিয়েছে। সূত্রের খবর, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের অধীনস্থ বায়োটেকনোলজি দফতরের সচিব রেণু স্বরূপ ও রাশিয়ায় ভারতের দূত ডি বি ভেঙ্কটেশ বর্মার মধ্যে রুশ টিকা নিয়ে আলোচনা চলছে।