শেষ আপডেট: 21st August 2024 01:20
দ্য ওয়াল ব্যুরো: বারবার ট্রেন দুর্ঘটনার জেরে উদ্বিগ্ন গোটা দেশ। এখনও পর্যন্ত পরিসংখ্যান বলছে শুধু মাত্র জুন-জুলাই মাসেই ট্রেন দুর্ঘটনায় ২১ জনের মৃত্যু হয়েছে। সিগন্যাল বিভ্রাটের জেরে প্রায়ই একই লাইনে দু’টি ট্রেন মুখোমুখি হওয়ার ঘটনাও সামনে আসছে! যা নিয়ে তীব্র উৎকণ্ঠা তৈরি হচ্ছে যাত্রী মহলে। এ ব্যাপারে মঙ্গলবার ফেসবুকে ছবি পোস্ট করে দেশবাসীকে আশ্বস্ত করল পূর্ব রেল।
সোমবার অল্পের জন্য দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পায় দিল্লি-ডিব্রুগড় রাজধানী এক্সপ্রেস। ঘটনাটি ঘটে এনজেপি-র থেকে আড়াই কিমি দূরে সাহুডাঙ্গির কাছে। ঘটনাটি ঠিক কী?
সামনে মালগাড়ি, আর পিছনে দিল্লি-ডিব্রুগড় রাজধানী এক্সপ্রেস। একই লাইন দিয়ে যাচ্ছিল দু’টি ট্রেন। সাহুডাঙ্গির কাছে হঠাত্-র দাঁড়িয়ে পড়ে মালগাড়িটি। কেন? রেল সূত্রে খবর, মালগাড়িটির ইঞ্জিনের সমস্যা দেখা দিয়েছিল। এই আবহে যাত্রীরা যাতে আতঙ্কিত না হন, পূর্ব রেল তাদের ফেসবুক হ্যান্ডলে একটি ছবি প্রকাশ করে।
যেখানে দেখা যাচ্ছে একই লাইনে দু’টি ট্রেন দাঁড়িয়ে আছে। অন্য লাইনে আর একটি ট্রেন। ওপরে গোটা গোটা অক্ষরে লেখা ‘আতঙ্কিত হবেন না! যা দেখছেন তাতে ভয়ের কিছু নেই।’ এর ব্যাখ্যা দিয়ে রেলের তরফে জানানো হয়েছে, রেলের সুরক্ষাবিধি মেনে অটোম্যাটিক সিগনাল জোনে একই লাইনে একাধিক ট্রেন নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রেখে আসতেই পারে’।
আর ঠিক এর পরই সেই পোস্টের কমেন্টে ক্ষোভ উগরে দেন নেটিজেনদের একাংশ। লেখেন, গত কয়েক বছর ধরে যে হারে রেল দুর্ঘটনা ঘটছে, তাতে আশ্বস্ত হওয়ার কোনও জায়গাই নেই। রেলের প্রতি আস্থা হারাচ্ছেন মানুষ। আবার রেলে নিয়োগ দুর্নীতি হয়েছে এই অভিযোগ তুলে একজন লেখেন, ‘সঠিক তদন্ত করে এদের উপযুক্ত শাস্তি দেওয়া উচিত।’
রেলের উদ্দেশে এক নেট নাগরিক লিখেছেন,, 'হ্যাঁ এক লাইনে ট্রেন আসতে পারে, ধাক্কা মারতে পারে, এক্সিডেন্টও হতে পারে তাতে কি? মরলে তো পাবলিক মরবে, ক্ষতি হলে সরকারি সম্পদের ক্ষতি হবে রেলমন্ত্রী বা অফিসারদের কিছুই যাবে আসবে না।" আরেকজন লিখেছেন, 'ভাগ্যিস বলেনি অটোমেটিক সিগন্যাল মেনে মাঝে মাঝে এক ট্রেন অন্য ট্রেন এর ওপরে উঠে যেতেও পারে!'
মঙ্গলবার বিকেল ৫টা নাগাদ পূর্ব রেলওয়য়ের তরফে পোস্টটি করা হয়। তার পর থেকেই এমন বাছা বাছা মন্তব্য উপচে পড়েছে রেলের ওই পোস্টের কমেন্ট বক্সে।
প্রসঙ্গত, গত ১৭ জুন এনজিপির অদূরে রাঙাপানিতে দুর্ঘটনার কবলে পড়েছিল কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস। দ্রুতগতিতে আসা একটি মালগাড়ি পিছন থেকে ধাক্কা মারে শিয়ালদহমুখী কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসকে। দুর্ঘটনায় ট্রেনটি লাইনচ্যুত হয়। মৃত্যু হয়েছিল ১০ জনের। আহত হন ৩০ জনেরও বেশি যাত্রী। ত্রিপুরার আগরতলা থেকে শিয়ালদহ যাওয়ার সময় দুর্ঘটনাটি ঘটে।
তারপরেও একের পর এক রেল দুর্ঘটনা ঘটেছে। ১৮ জুলাই উত্তরপ্রদেশের গোন্ডায় লাইনচ্যুত হয় ডিব্রুগড় এক্সপ্রেস। ২৯ জুলাই অল্পের জন্য রক্ষা পায় সম্পর্কক্রান্তি এক্সপ্রেস। গত ৩০ জুলাই হাওড়া-মুম্বই মেল চক্রধরপুর ডিভিশনে বরাবাম্বু ও রাজখারসাওয়ানের মাঝে বেলাইন হয়ে যায়। তবে বরাতজোরে রক্ষা পান যাত্রীরা। সামান্য আঘাত লাগে কয়েকজন যাত্রীর। স্বভাবতই একের পর এক রেল দুর্ঘটনার পর যাত্রী সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্নের মুখে রেল। এমন আবহে এদিন রেলের পোস্ট ঘিরে কড়া প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন যাত্রীদের অনেকেই। তাঁদের মতে, এভাবে প্রচার না করে 'কাজে মনে দিক' রেল।