রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস।
শেষ আপডেট: 20th August 2024 23:06
দ্য ওয়াল ব্যুরো: আরজি কর হাসপাতালের ধর্ষিতা চিকিৎসকের ছবি, নাম-ধাম সোশাল মিডিয়ায় এনতার পোস্ট হওয়ার কারণে মঙ্গলবার যারপরনাই অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়। সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশ অবিলম্বে সোশাল মিডিয়া থেকে ধর্ষিতার ছবি, নাম ইত্যাদি সরাতে হবে। অথচ এমন দিনেই দেখা গেল, কলকাতার রাজভবন থেকে যে ভিডিও ফুটেজ শেয়ার করা হয়েছে তাতে ধর্ষণ করে খুন করা চিকিৎসকের বাবা-মায়ের মুখ দেখানো হয়েছে।
শুধু আজ নয়, এর আগেও একটি মামলার রায়ে সুপ্রিম কোর্টের তৎকালীন বিচারপতি মদন বি লোকুর ও বিচারপতি দীপক গুপ্তা স্পষ্ট জানিয়ে দেন, ধর্ষিতার নাম, ছবি ইত্যাদি সংবাদপত্র বা সোশাল মিডিয়ায় প্রকাশ করা তো যাবেই না, এমন কোনও তথ্যও প্রকাশ করা যাবে না যা থেকে ধর্ষিতার পরিচয় জানা যেতে পারে। ধর্ষিতার মৃত্যু হলেও তা করা যাবে না। সন্দেহ নেই, মৃত চিকিৎসকের বাবা মায়ের ছবি প্রকাশ করা মানেও তাঁর পরিচয় বুঝিয়ে দেওয়া। বাংলার কোনও দায়িত্বশীল সংবাদমাধ্যম তা কিন্তু করেনি। যা করেছে রাজভবন।
রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস এদিন ভিডিও কলে নিহত চিকিৎসকের বাবা মায়ের সঙ্গে কথা বলেন। রাজ্যপাল যে তাঁদের সঙ্গে কথা বলছেন, তা ভিডিও রেকর্ডিং করা হয়। সেই ভিডিও রাজভবন মিডিয়াকে শেয়ার করে। রাজভবনের শেয়ার করা সেই ভিডিও দ্য ওয়ালের কাছেও রয়েছে। কিন্তু একটি স্পর্শকাতরতা ও দায়িত্বশীলতা বজায় রেখে দ্য ওয়াল কখনওই তা প্রকাশ করবে না।
তাৎপর্যপূর্ণ হল, বর্তমান রাজ্যপাল দীর্ঘদিন শীর্ষ আমলা হিসাবে কর্মরত ছিলেন। অনেকের মতে, তাঁর কাছ থেকে এটা অভিপ্রেত ছিল না। ন্যূনতম স্পর্শকাতরতা দেখাতে পারতেন এ ব্যাপারে।
এ বিষয়ে তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, রাজ্যপালের কাছে মৃতের পরিবারের সঙ্গে কথা বলা বা ধর্ষিতার পরিচয় সম্পর্কে গোপনীয়তা রক্ষার তুলনায় গুরুত্বপূর্ণ হল পাবলিসিটি আর রাজনীতি করা। বাংলার মানুষই বুঝতে পারছে কী লোককে বাংলার রাজভবনে পাঠিয়েছে দিল্লির শাসকরা।
বাংলায় বর্তমান রাজ্যপাল যে বিজেপি নেতাদের কাছেও প্রিয় পাত্র তা নয়। তাঁকে বাংলা থেকে সরানোর ব্যাপারে অনেক আগেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহর কাছে দরবার করে এসেছেন শুভেন্দু অধিকারী। রাজ্যে বাকি বিরোধীরাও রাজ্যপালের সঙ্গে পারতপক্ষে দেখা করতে যান না। কারও কারও মতে, আনন্দ বোসের অবস্থা ‘গাঁয়ে মানে না আপনি মোড়লের’ মতই। কিন্তু দেখা যায়, রাজ্যে প্রায় প্রতিটি ঘটনাতেই রাজ্যপাল হয় আগ বাড়িয়ে চলে যান। বা রাজভবন থেকে লাগাতার বিবৃতি দেওয়া হয়। চলতি ঘটনাতেও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। কিন্তু তা করতে গিয়ে রাজভবন এদিন যা করে বসেছে তাতে বিতর্ক অনিবার্য হয়ে উঠতে চলেছে বলেই মনে করা হচ্ছে।