শেষ আপডেট: 11th February 2020 18:30
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ফ্রান্সের দাসো অ্যাভিয়েশনের উপর পুরোপুরি নির্ভরতা নয়। রাফালের যন্ত্রাংশ তৈরি হবে ভারতেও। প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের উদ্যোগে ফরাসি সংস্থা দাসো অ্যাভিয়েশনের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে মাল্টিরোল কমব্যাট এয়ারক্রাফ্ট রাফালের প্রযুক্তিতে আরও আধুনিকীকরণ করছে অনীল অম্বানীর রিল্যায়ান্স ডিফেন্স। ভারতের হাতে আসা প্রথম রাফাল ফাইটের জেটের কাজও জোরকদমে শুরু হয়ে গেছে নাগপুরে। ডবল ইঞ্জিন ফাইটার জেটের দরজা তৈরির কাজ প্রাথমিকভাবে শুরু হয়েছে নাগপুরে। রাফাল নির্মাতা সংস্থা দাসো অ্যাভিয়েশনের তরফে জানানো হয়েছে, প্রতিটা রাফাল জেটের আরও আধুনিকীকরণ হবে ভারতে। চুক্তিমাফিক যে ৩৬টি রাফাল জেট ভারতের হাতে তুলে দেওয়া হবে, তার প্রতিটাই নিজেদের দেশের প্রতিরক্ষার কথা মাথায় রেখে গড়ে নেবেন ভারতের ইঞ্জিনিয়াররা। সামরিক পরিভাষায় রাফালকে বলে ‘মাল্টিরোল কমব্যাট এয়ারক্র্যাফ্ট’। যে ফরাসি সংস্থা এই যুদ্ধবিমান তৈরি করে সেই দাসো অ্যাভিয়েশন রাফালকে বলে ‘ওমনিরোল এয়ারক্র্যাফ্ট।’ গত বছর সেপ্টেম্বরে চুক্তিমাফিক ৩৬টি রাফালের মধ্যে প্রথম রাফালটি ভারতীয় বায়ুসেনার হাতে এসে গেছে। এযার চিফ মার্শাল আর কে এস ভাদুরিয়ার নামে শক্তিশালী, আধুনিক এই রাফালের টেল নম্বর দেওয়া হয়েছে ‘আরবি ০১ (RB-01)।’ চলতি বছর মে মাসের মধ্যে আরও চারটি রাফাল জেট ভারতের হাতে তুলে দেবে নির্মাতা সংস্থা দাসো অ্যাভিয়েশন। রাফাল ফাইটার জেটের একটি স্কোয়াড্রন তাকবে অম্বালাতে, অন্যটি পশ্চিমবঙ্গের হাসিমারায়। নাগপুরের দাসো রিল্যায়ান্স অ্যারোস্পেস লিমিটেড (DRAL)জানিয়েছে, প্রথমে ফরাসি নির্মাতা সংস্থাদের বানানো ফ্যালকন বিজনেস জেটের ককপিট তৈরি করত তারা। এবার আরও বড় দায়িত্ব দিয়েছে দেশের প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। ফরাসি দাসো অ্যাভিয়েশনের বানানো রাফাল জেটকে আরও শক্তিশালী ও আধুনিক করে তোলার দায়িত্ব তাদেরই। ’৭১-এ পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধে ভারতীয় বায়ুসেনার তুরুপের তাস ছিল মিগ যুদ্ধবিমান। ক্রমশ তার আয়ু ফুরিয়ে আসছে। তার বদলে এসেছে রাশিয়ার সুখোই যুদ্ধবিমান। কিন্তু সুখোই-এর থেকেও অত্যাধুনিক বিমান হল সব থেকে হাল্কা, ‘লাইট কমব্যাট এয়ারক্রাফ্ট’ (এলসিএ)। ভারতে এলসিএ ‘তেজস’ তৈরি হচ্ছে। এই সুখোই থেকে এলসিএ-র জার্নিতে আধুনিক ও শক্তিশালী ‘মাল্টিরোল কমব্যাট এয়ারক্র্যাফ্ট’ কেনার পরিকল্পনা নিয়েছিল ভারত। সেই জন্যই ফ্রান্সের সঙ্গে চুক্তি। মাল্টিরোল কমব্যাট এয়ারক্রাফ্ট রাফাল যুদ্ধবিমান প্রতিপক্ষের উপর আঘাত হানতে পারে সুনিপুণ দক্ষতায়। অনেক উঁচু থেকে হামলা চালানো, যুদ্ধজাহাস ধ্বংস করা, মিসাইল নিক্ষেপ এমনকী পরমাণু হামলা চালানোর ক্ষমতাও রয়েছে রাফালের। রাফালকে আরও শক্তিশালী করার জন্য ‘মেটিওর’ এবং ‘স্কাল্প’, এই দু’টি মিসাইল যোগ হবে রাফালে। লক্ষ্যসীমার বাইরে নিপুণ আঘাত হানতে সক্ষম ক্ষেপণাস্ত্র ‘মেটিওর’। লো-অবর্জাভর ক্রুজ মিসাইল স্ক্যাল্প (ফ্রান্সে এর নাম স্ক্যাল্প ইজি) ব্যবহার করে ব্রিটিশ ও ফরাসি বায়ুসেনা। ৫৬০ কিলোমিটার পাল্লার এই মিসাইল রাফালকে অপ্রতিদ্বন্দ্বী করে তুলবে।