শেষ আপডেট: 24th November 2020 08:54
দ্য ওয়াল ব্যুরো, কোচবিহার: আগেরবার দেখা হয়নি। কিন্তু মঙ্গলবার কোচবিহার দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্রের তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক মিহির গোস্বামীর বাড়িতে এসে তাঁর দেখা পেলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। টানা প্রায় ৪৫ মিনিট দুজনের বৈঠকও হয়। বাইরে এসে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, ‘‘বিজয়ার পর মিহিরদার বাড়িতে এসেছিলাম। কিন্তু সেই সময় তাঁর দেখা পাইনি। তাই আবার আজ এসেছি। দুজন যখন একসঙ্গে বসলাম তখন তো রাজনীতির আলোচনা হবেই।’’ কিন্তু মন্ত্রী ফিরতেই নিজের অবস্থান থেকে তিনি যে নড়েননি তা স্পষ্ট করে দেন মিহিরবাবু। জেলায় ব্লক ও অঞ্চল কমিটি ঘোষণা হওয়ার পর গত ৩ অক্টোবর কোচবিহার দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্রের তৃণমূল বিধায়ক মিহির গোস্বামী দলের সমস্ত সাংগঠনিক পদ থেকে অব্যাহতি নেন। তারপর থেকে দলের কোনও কর্মসূচিতে ওনাকে আর দেখা যায়নি। এমনকী তাঁর অফিস থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে দলীয় পতাকা ও মুখ্যমন্ত্রীর ছবি। এই ঘটনায় রীতিমতো শোরগোল পড়ে যায় গোটা জেলাজুড়ে। মিহির গোস্বামী তাঁর সিদ্ধান্ত জানানোর পরপরই মিহির গোস্বামীর সঙ্গে দেখা করতে আসেন কোচবিহার লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি সাংসদ নিশীথ প্রামাণিক। দুজনেই এই সাক্ষাৎকারকে সৌজন্যতা বিশেষণ দিলেও রাজনৈতিক মহলে নানা সমীকরণের জল্পনা শুরু হয়। তবে থেমে না গিয়ে এরপর থেকেই নানা সময় সাংবাদিক বৈঠক করে এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের মনোভাব স্পষ্ট করতে শুরু করেন বর্ষীয়ান বিধায়ক। পুজো মিটতেই স্বচ্ছ ভাবমূর্তির এই নেতার মান ভাঙাতে তাঁর বাড়িতে যান রাজ্যের দুই মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ এবং বিনয়কৃষ্ণ বর্মন। কিন্তু দেখা মেলেনি তাঁর। ফের আজ মঙ্গলবার মিহিরবাবুর বাড়ি গেলেন রবীন্দ্রনাথবাবু। এদিন দুজনের মধ্যে প্রায় ৪৫ মিনিট কথা হলেও বরফ যে গলেনি তা মিহিরবাবুর কথাতেই পরিষ্কার। এ দিন তিনি বলেন, ‘‘এতবছর ধরে আমি দল করছি, কিন্তু দল কখনই আমার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেনি। যেখানে দলে আমি এতটাই গুরুত্বহীন, সেখানে তো আমার আর কিছু করার নেই। গুরুত্বহীন হয়ে আর দলে থাকতে চাই না। তবে অক্টোবরের ৩ তারিখ দলের সমস্ত পদ থেকে পদত্যাগ করেছিলাম, তারপর বহু মানুষ আমার সঙ্গে দেখা করেছেন। কথা হয়েছে। আমি বুঝতে পারছি, রাজনীতি ছাড়ার সময় এখনও হয়নি আমার। আরও কিছুদিন আমাকে রাজনীতির সঙ্গে নিজেকে জড়িয়ে রাখতে হবে।’’ তিনি কী বিজেপিতে যাচ্ছেন সেই প্রশ্নের উত্তরে মিহিরবাবু বলেন, ‘‘আমি চিন্তাভাবনা করছি। শুভানুধ্যায়ীদের সঙ্গে কথা বলছি। তবে যাই করি সবাইকে জানাব। আমি গোপনে কোনও কাজ করি না।’’ ১৯৯৬ সাল থেকে ২০০১ কংগ্রেসের বিধায়ক ছিলেন মিহিরবাবু। যে আসনে কখনও কংগ্রেস জিততে পারেনি, সেই আসনে জয়ী হয়েছিলেন তিনি। আবার ২০১৬ সালেও তিনি এমন আসন থেকে তৃণমূলের টিকিটে জিতেছেন যেটা কোনওদিনই বামফ্রন্ট ছাড়া অন্য কোনও দল জিততে পারেনি। ২০১১ সালে তুফানগঞ্জে তৃণমূলের হয়ে দাঁড়ানোর কথা থাকলেও শেষ মুহূর্তে তাঁকে দল দিনহাটায় প্রার্থী করায় সরে দাঁড়িয়েছিলেন তিনি।