শেষ আপডেট: 14th July 2024 15:20
দ্য ওয়াল ব্যুরো: প্রতীক্ষার অবসান। অবশেষে, আজ ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রীর দফতরের তরফে জানিয়ে দেওয়া হল, চার দশক পরে আজ দুপুর দেড়টা নাগাদ খোলা হয়েছে শ্রী জগন্নাথ মন্দিরের রত্নভাণ্ডার।
গতকাল থেকেই এই রত্নভাণ্ডার খোলা নিয়ে নানা জল্পনা ছড়িয়েছিল রাজনৈতিক মহলে। বলা হচ্ছিল, দশম-একাদশ শতকে নির্মিত প্রাচীন ও অত্যন্ত সমৃদ্ধ জগন্নাথ মন্দিরের বিখ্যাত রত্নভাণ্ডার পাহারা দেয় নানা বিষধর সাপ। যদিও সেবায়েতরা আশ্বস্ত করেছিলেন, এমনটা কিছুই নয়। মন্দিরের ফাঁকফোকর গলে কিছু সাপখোপ ঢুকে থাকতে পারে। কিন্তু ওইটুকুই। যদিও প্রশাসন কোনও ঝুঁকি নিতে চায়নি। চিকিৎসক, সাপুড়ে-সহ সবরকম ব্যবস্থাই রাখা হয়েছিল।
অবশেষে আজ দুপুর দেড়টা নাগাদ ১১ সদস্যের একটি দল রত্নভাণ্ডারে প্রবেশ করে। তাতে ছিলেন মন্দির প্রশাসনের মুখ্য প্রশাসক, পুরীর জেলাশাসক, ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ বা আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া (এএসআই) ওড়িশা সার্কলের সুপার, গজপতি রাজার দুই প্রতিনিধি ও চারজন সেবায়েত। মুখ্য প্রশাসক অরবিন্দ পধি জানিয়েছেন, রত্নভাণ্ডারের ভেতরের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে এএসআইয়ের বিশেষজ্ঞ দল আগে যাবেন। সরকারি নিয়মকানুন মেনেই সবটা করা হবে।
এই মুহূর্তে জগন্নাথ মন্দিরে কিছু মেরামতির কাজ চলবে। তারই অংশ হিসেবে খোলা হয়েছে রত্নভাণ্ডার। কাজ চলাকালীন রত্নভাণ্ডারের বহুমূল্য সামগ্রী কাঠের বাক্সে করে মন্দির চত্বরেই অন্য একটি জায়গায় রাখা হবে। সেখানে ২৪ ঘন্টা সিসিটিভি পর্যবেক্ষণে থাকবে রত্নসামগ্রী। তাদের মূল্য নির্ধারণের প্রক্রিয়াও চলবে। যার জন্য ওড়িশা সরকার সরাসরি ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সাহায্য চেয়েছে। জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী পৃথ্বীরাজ হরিচন্দন।
প্রায় চার দশক বন্ধ ছিল রত্নভাণ্ডার। এত দীর্ঘকাল বন্ধ থাকলে স্বাভাবিকভাবেই তালা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। কিন্তু পুরো ঘটনার নজরদারি কমিটির প্রধান, বিচারপতি বিশ্বনাথ রথ জানিয়েছেন, 'চাবি আর কোনও সমস্যা নয়। বহুদিন খোলা হয়নি, ফলে মরচে তো ধরবেই। আমরা দরকারে তালা ভেঙেই রত্নভাণ্ডার খোলার ব্যবস্থা করব। তবে সাপুড়ে বা ডাক্তারদের দলকে ভেতরে নিয়ে যাওয়া হবে না। ওঁরা কাছাকাছিই থাকবেন। আগে দেখি, কী পরিস্থিতি। যদি সমস্যা হয়, তাঁদের ডাকা হবে।'
বস্তুত, চাবি নিয়ে যাতে কোনও সমস্যা না হয়, তা নিয়ে বাড়তি সতর্ক ছিল প্রশাসন। ২০১৮ সালের ৪ এপ্রিল তৎকালীন বিজেডি সরকার রত্নভাণ্ডার খোলার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু চাবি কাজ না করায় তারা শেষ অবধি ব্যর্থ হয়। যা নিয়ে ওড়িশায় তীব্র বিক্ষোভ শুরু হয়। এবারের নির্বাচনেও এই ইস্যুতে নবীন পট্টনায়ক সরকারকে কড়া নিশানা করেছিল বিজেপি। তাই শেষ অবধি কোনও ঝুঁকিতেই যায়নি প্রশাসন। তালা ভাঙার কথাই ভেবে রাখা হয়েছে।