শেষ আপডেট: 27th May 2024 11:29
দ্য ওয়াল ব্যুরো: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সম্প্রতি দাবি করেছেন তিনি ঈশ্বরের দূত। পরমাত্মা তাঁকে পাঠিয়েছেন বিশেষ কোনও কর্ম সম্পাদনের উদ্দেশ্যে। সেই ‘ঈশ্বর প্রেরিত’ মোদীর তৃতীয়বারের জয় নিশ্চিত করতে তাঁর সংসদীয় কেন্দ্র বারাণসীকে নামযজ্ঞের ধুম লেগেছে। তাতে শামিল হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর রাজ্য গুজরাতের সনাতনবাদী প্রতিষ্ঠানও। বারাণসীর পাশাপাশি এলাহাবাদ তথা অধুনা প্রয়াগরাজেও চলছে মোদীর নামে পুজো দেওয়া, নামযজ্ঞ ইত্যাদি।
গুজরাতের কাশী শ্রীকৃষ্ণ গুজরাতি সমাজ এগারো দিনের পুজোর আয়োজন করেছে বারাণসীর কর্ণগ্রন্থ এলাকায় অবস্থিত চিদানন্দ সংস্কৃত বিদ্যালয়ে। এই আবাসিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পড়ুয়াদের পঠনপাঠনের ভাষা সংস্কৃত। তাদের বৈদিক শিক্ষা দেওয়া হয়ে থাকে। বিদ্যালয় প্রধান অনিল শাস্ত্রীর কথায়, ‘আমরা ভগবানের কাছে প্রার্থনা করছি, তিনি যেন নরেন্দ্র মোদীকে চারশোর বেশি আসনে জিতিয়ে দেন।’
পুজোয় অংশ নিচ্ছে বিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা। ঈশ্বরের কাছে তারা সাত দফা আর্জি পেশ করছে। সেগুলি হল, মোদীর নেতৃত্বে বিজেপির চারশো আসন লাভ, সংবিধানে সনাতন ধর্ম শব্দটির সংযোজন, অখণ্ড ভারত নির্মাণ, সংস্কৃত ভাষার প্রসার, সমস্ত হিন্দু মন্দির সংস্কার এবং দখল মুক্ত করা এবং মোদীকে গোটা বিশ্বে সনাতন ধর্ম প্রসারের সুযোগ করে দেওয়া। এই একই প্রতিষ্ঠান বিগত কয়েকদিনে বারাণসী এবং এলাহাবাদে ডজনের বেশি পুজোর আয়োজন করেছে।
কাশীর গঙ্গা তীরে বহু মোদী ভক্তও পুজোয় বসেছেন। প্রধানমন্ত্রীর বিপুল জয় চেয়ে মন্দিরে পুজো দিচ্ছেন। ব্যক্তিগত ছাড়াও সাংগঠনিক উদ্যোগও আছে। সনাতনপন্থীরাই মূলত পুজো, আরাধনার আয়োজন করেছে।
এলাহাবাদেই গঙ্গা তীরে অবস্থিত ওঁং নমঃ শিবায় আশ্রম কর্তৃপক্ষ ভোট ঘোষণার পর থেকে প্রতি সপ্তাহে রুদ্র মহাযোজনার আয়োজন করছে। আজমগড়ে শিব শ্যাম মন্দিরে মোদীর ছবি রেখে পুজো করছেন মহিলারা। তাঁরাও মোদী ও বিজেপির বিপুল জয় চেয়ে ঈশ্বর আরাধনায় নেমেছেন।
বিরোধী দল এবং সাধারণ মানুষেরও একাংশ মোদী-বন্দনার বিরুদ্ধে সরব হয়েছে। তাদের বক্তব্য, প্রধানমন্ত্রী যখন স্বয়ং বারাণসীর মাটিতে দাঁড়িয়ে নিজেকে ঈশ্বরের দূত বলছেন, দাবি করছেন, ঈশ্বর তাঁকে নিয়ে আরাধ্য কাজ করাতে পাঠিয়েছেন তখন তাঁর জন্য ভগবানের চরণে পুষ্পাঞ্জলি কেন? এত দেখা যাচ্ছে পরীক্ষায় ফেল করে যাওয়ার ভয়ে ঠাকুরের কাছে মানত করার মতো ব্যাপার।
প্রধানমন্ত্রীর সংসদীয় কেন্দ্রের বহু মানুষ নাম গোপন রেখে সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, মোদী এই ধর্মনগরীর সাংসদ হওয়ার পর শহরের জৌলুশ বেড়েছে। কিন্তু বহু সমস্যার সমাধান হয়নি। তারমধ্যে অন্যতম হল আইন-শৃঙ্খলা, মহিলাদের প্রতি অসভ্যতা। অথচ প্রধানমন্ত্রী সুযোগ পেলেই মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথকে আইন-শৃঙ্খলা নিয়ে সার্টিফিকেট দেন।