শেষ আপডেট: 9th July 2024 14:03
দ্য ওয়াল ব্যুরো, পূর্ব বর্ধমান: আবার জটিলতা। আটকে গেল যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত মাওবাদী নেতা অর্ণব দামের গবেষণা শুরুর কাজ। সোমবার বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানিয়ে দিয়েছে, ইতিহাসের পিএইচডি কোর্সে ভর্তি আপাতত বন্ধ রাখা হল। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত তা বন্ধ থাকবে। তবে অন্য বিষয়ে পিএইচডিতে ভর্তি চলবে নিয়মমাফিক। ইতিহাস নিয়ে গবেষণার জন্য মঙ্গলবার বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার কথা ছিল অর্ণবের।
বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য গৌতম চন্দ্র জানান, জেল সুপারের আবেদনের ভিত্তিতে অর্ণবকে ইন্টারভিউয়ে বসার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু জেল থেকে একজন ছাত্রের ক্লাস বা গবেষণা করার পরিকাঠামো খতিয়ে দেখতে হবে। সেই জন্যই আপাতত ভর্তি প্রক্রিয়া স্থগিত রাখা হয়েছে।
এই ঘটনায় জেলা তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভাপতি স্বরাজ ঘোষ বলেন, "একজন মানুষ সমাজের মূল স্রোতে ফিরতে চাইছেন। অথচ তাঁর ভর্তি আটকে দেওয়া হচ্ছে। এটা ঠিক হচ্ছে না। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সব থেকে বেশি আগ্রহী মাওবাদীদের মূল স্রোতে ফেরানোর ব্যাপারে। তাই আমরা চাই নিয়ম অনুযায়ী তাঁকে গবেষণার সুযোগ দেওয়া হোক।"
যদিও বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দাবি, পিএইডি করার জন্য অর্ণবকে রাজ্য সরকার অনুমতি দিয়েছে কি না, এবং কীভাবে তিনি এই কোর্স করবেন, তা জানতে চেয়ে হুগলি জেলের সুপারকে চিঠি পাঠানো হবে। ইতিহাসে গবেষণার জন্য গত ২৬ জুন বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে ইন্টারভিউ দেন অর্ণব। শুক্রবার ফল বার হলে দেখা যায়, সফল আবেদনকারীদের তালিকায় প্রথমেই রয়েছে অর্ণবের নাম। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সৈয়দ তানভির নাসরিন বলেন, "আমাদের বিভাগ থেকে যা করণীয় আমরা তা সবই করে দিয়েছি। কেন ভর্তি স্থগিত রাখা হল, তা বলতে পারব না। এটা একমাত্র বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষই বলতে পারবে। তবে আমি মনে করি তাঁর ভর্তি প্রক্রিয়ায় কোনও বাধা বা জটিলতা থাকার কথা নয়। একজন প্রার্থী জেলে বন্দি অবস্থায় নির্বাচনে দাঁড়িয়ে সাংসদ নির্বাচিত হচ্ছেন। সেই ক্ষেত্রে অর্ণবের কোনও বাধা থাকার কথা নয়।"
পশ্চিম মেদিনীপুরের শিলদায় ইএফআর ক্যাম্পে হামলা চালানোর ঘটনায় অর্ণবই ছিলেন মূল অভিযুক্ত। পরে হিংসার পথ ছেড়ে পড়ায় মন দেন। গরাদের আড়ালে থেকেই স্নাতক, স্নাতকোত্তর ও সেট উত্তীর্ণ হন। গত ২৯ ফেব্রুয়ারি শিলদা কাণ্ডে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা হয় অর্ণব দামের। প্রথমে পশ্চিম মেদিনীপুর সংশোধনাগারে রাখা হয়েছিল তাঁকে। ১৭ মার্চ হুগলি জেলা সংশোধনাগারে পাঠানো হয় অর্ণবকে। অর্ণবের বাবা অবসরপ্রাপ্ত বিচারক। খড়গপুর আইআইটিতে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার সময় মাওবাদী সংগঠনে নাম লেখান অর্ণব। এখন অবশ্য জেলে থেকেই সমাজে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন এই মেধাবী ছাত্র।