শেষ আপডেট: 8th July 2024 13:24
দ্য ওয়াল ব্যুরো: তৃতীয়বার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর প্রথম রাশিয়া সফরে রওনা দিলেন নরেন্দ্র মোদী। সোমবার সকালে দুদিনের রাশিয়া সফরে যাওয়া মোদীর সঙ্গে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের একান্ত বৈঠক হবে। প্রায় ৫ বছর পর মোদী মস্কো ঘুরে ৯ ও ১০ জুলাই অস্ট্রিয়ায় যাবেন। এটাই হবে মোদীর প্রথম এবং ইন্দিরা গান্ধীর পর ৪১ বছর বাদে কোনও ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর অস্ট্রিয়া সফর।
এদিন বিমানে ওঠার আগে মোদী বলেন, এই দুই দেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক আরও মজবুত হবে। দুই দেশেই বসবাসকারী ভারতীয়দের সঙ্গেও কথা বলবেন তিনি। গত ১০ বছরে ভারত-রুশ সম্পর্ক, কৌশলগত অবস্থান অনেক এগিয়েছে। বিদ্যুৎ, প্রতিরক্ষা, বাণিজ্য, বিনিয়োগ, স্বাস্থ্য, শিক্ষা-সংস্কৃতি, পর্যটন ক্ষেত্রে এই সম্পর্ক আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে।
ভ্লাদিমির পুতিনকে বন্ধু বলে উল্লেখ করে মোদী বলেন, দ্বিপাক্ষিক বিভিন্ন বিষয় ছাড়াও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক নিয়ে তাঁদের আলোচনা হবে। বিশ্বশান্তি ও স্থায়িত্ব নিয়ে দুই দেশ সহযোগিতা চালিয়ে যাবে। মস্কোয় পৌঁছানোর দিনই পুতিন মোদীর সম্মানার্থে নৈশভোজ দিচ্ছেন।
প্রসঙ্গত, মোদী-পুতিনের আলোচনার দিকে তাকিয়ে রয়েছে গোটা বিশ্ব। যার মধ্যে রয়েছে চিন এবং পাকিস্তানও। ইউক্রেনে আগ্রাসনের বিরুদ্ধে যখন পশ্চিমী দুনিয়া পুতিনের শত্রুতে পরিণত হয়ে গিয়েছে, তখন কমিউনিস্ট চিন পাশে দাঁড়িয়েছে রাশিয়ার। এই অবস্থায় ভারত-চিন এবং ভারত-পাকিস্তান বৈরিতা বিশেষত সীমান্ত সমস্যা নিয়ে রাশিয়ার মনোভাবের উপর অনেকটা নির্ভর করবে নয়াদিল্লির মনোবল বৃদ্ধির বিষয়টি। প্রতিরক্ষা ক্ষেত্র বা বাণিজ্য ক্ষেত্রে তেমন কোনও ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারলে চিন-পাকিস্তান দুদেশই চাপে পড়ে যাবে।
যদিও দেশে মোদীর রাশিয়া সফর নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস। দলের সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমেশ ফের ত্রিপ্রশ্নবাণ ছুড়েছেন প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে। সোভিয়েত আমল থেকে রাশিয়া পর্যন্ত ভারতের কংগ্রেস সরকারের সঙ্গে সুসম্পর্কের কথা উল্লেখ করে রমেশের কটাক্ষ, মোদীর এই প্রচার-সফর কি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ থামাতে পারবে? মোদী জমানায় রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের রফতানি বাণিজ্য কমেছে। অথচ আমদানি বাণিজ্যের পরিমাণ উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পেয়েছে। দুদেশের বাণিজ্য নিয়ে কী হাতিঘোড়া ঘটবে? ইতিমধ্যেই আমরা দেখেছি অনেক ভারতীয় যুবক রুশ সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়ে ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধভূমিতে রয়েছে। ২ জন তো মারা গিয়েছেন বলে খবর। যেসব ভারতীয় এখনও রুশ বাহিনীতে মৃত্যুর দিন গুনছেন, তাঁদের নিরাপদে দেশে ফেরানোর কী পদক্ষেপ নেবেন প্রধানমন্ত্রী, প্রশ্ন কংগ্রেসের।
কিন্তু, ক্রেমলিন মোদীর এই সফরকে খুবই তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে। তাদের মতে, মোদী-পুতিন কথায় পশ্চিমী দুনিয়া ঈর্ষান্বিত হয়ে তাকিয়ে রয়েছে। ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকোভ এক সাক্ষাৎকারে বলেন, আলোচ্যসূচি বিরাট। আমরা আশা করছি, গুরুত্বপূর্ণ ও পুরোদস্তুর এই সরকারি সফরে দুদেশের সম্পর্কের দৃঢ়তা আরও বাড়বে।