শেষ আপডেট: 21st May 2024 18:18
দ্য ওয়াল ব্যুরো: 'স্মাইলিং বুদ্ধ'র ৫০ বছর পূর্ণ হল আজ, শনিবার। ঠিক অর্ধ শতাব্দী আগে এই দিনটিতেই প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর নেতৃত্বে রাজস্থানের পোখরানে প্রথম সফল পরমাণু পরীক্ষা চালিয়েছিল ভারত। তাই একে পোখরান-১ বলা হয়ে থাকে।
প্রায় গোপনতম এই পরমাণু পরীক্ষায় সেদিন থেকেই ভারত ইতিহাসের খাতায় নাম তোলে। রাষ্ট্রসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী পাঁচ সদস্য দেশের বাইরে প্রথম দেশ হিসেবে বিশ্বসভায় পরিচিতি লাভ করে ভারত। আমেরিকা, সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন, ব্রিটেন, ফ্রান্স এবং চিনের পর ষষ্ঠ পরমাণু শক্তিধর দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।
এই পরমাণু পরীক্ষার পোশাকি নাম দেওয়া হয়েছিল 'স্মাইলিং বুদ্ধ'। পরবর্তীকালে প্রাক্তন বিজেপি প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ির আমলে আরও পরমাণু পরীক্ষা হয়। তাই আজকের দিনে একে পোখরান-১ পরমাণু পরীক্ষা নাম দেওয়া হয়েছে।
দিনটা ছিল ১৮ মে, ১৯৭৪ সাল। ভারতীয় সেনা রাজস্থানের পোখরানে ১০৭ মিটার গভীরে এই পরীক্ষা চালায়। ঘটনাচক্রে সেদিনটি ছিল বুদ্ধজয়ন্তী। সফলভাবে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর তৎকালীন ভাবা পরমাণু গবেষণা কেন্দ্রের ডিরেক্টর রাজা রামান্না এক বার্তায় ইন্দিরা গান্ধীকে বলেছিলেন, অবশেষে বুদ্ধ হেসে উঠলেন।
দেশের বিদেশ মন্ত্রক আন্তর্জাতিক দরবারে ঘোষণা করল, এই পরীক্ষা শান্তিপূর্ণ পরমাণু গবেষণার অঙ্গ। বিশ্ব রাজনীতিতে সেই সময়টা ছিল ঠান্ডাযুদ্ধের। পশ্চিমী ও এশীয় দেশগুলি আমেরিকা ও সোভিয়েতপন্থায় দুভাগে ভাগ হয়ে গিয়েছিল। তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের আশঙ্কায় পরমাণু অস্ত্র নিষ্ক্রিয় করার বিষয়ে জোর আলোচনা চলছে দুনিয়া জুড়ে। ভারতের এই পরীক্ষার পরেই পরমাণু সরবরাহকারী গোষ্ঠী গড়ে ওঠে। এতে যোগ দেয় ৪৮টি দেশ।
অপারেশন স্মাইলিং বুদ্ধর পরেই দেশে ও বিদেশেও ইন্দিরা গান্ধীর জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পায়। কিন্তু, রাজা রামান্নার বিবৃতিতে ঘরে-বাইরে প্রবল সমালোচনার মুখে পড়ে ইন্দিরা সরকার। রামান্না বলেন, পোখরানে যে পরীক্ষা হয়েছে, তা পরমাণু বোমা ছিল। আমি স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, বিস্ফোরণ মানে বিস্ফোরণ। বন্দুকের অর্থ বন্দুকই হয়। তা সে কারও বুক লক্ষ্য করে চালানো হোক কিংবা মাটির দিকে তাক করে চালানো দুটোই এক। এই পরীক্ষা কেবলমাত্র শান্তি বজায় রাখার জন্য নয়।