শেষ আপডেট: 20th July 2024 17:14
দ্য ওয়াল ব্যুরো: সংসদের ভিতরে বা বাইরে 'বন্দে মাতরম', 'জয় হিন্দ' স্লোগান চলবে না। সোমবার থেকে শুরু হতে চলা সংসদের বাদল অধিবেশনের আগে এমপিদের 'সুশীল' সংসদীয় আচরণ স্মরণ করিয়ে দিল সরকার। 'হ্যান্ডবুক ফর মেম্বার্স অফ রাজ্যসভা' থেকে নির্বাচিত অংশবিশেষ নিয়ে রাজ্যসভার সচিবালয় থেকে প্রকাশিত এক বুলেটিনে সদস্যদের আচরণ সম্পর্কে স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেখানে এমপিদের মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছে যে, সভার অধ্যক্ষের নির্দেশের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সমালোচনা করা যাবে না সংসদের ভিতরে বা বাইরে।
এমনকী সদস্যদের এও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, সভায় কোনও কিছু প্রদর্শন করাও বিধিসম্মত নয়। অর্থাৎ সরকার বিরোধী যে কোনও গণতন্ত্রসম্মত আন্দোলন সংসদের ভিতরে বা সংসদ চত্বরে করা চলবে না। উল্লেখ্য, আগামী ২২ জুলাই শুরু হচ্ছে অষ্টাদশ লোকসভার পূর্ণাঙ্গ অধিবেশন। যা চলবে ১২ আগস্ট পর্যন্ত। বুলেটিনে বলা হয়েছে, থ্যাঙ্কস, থ্যাঙ্ক ইউ, জয় হিন্দ, বন্দে মাতরম স্লোগান দেওয়া চলবে না।
অসংসদীয়, আপত্তিজনক কোনও ভাষা প্রয়োগ সম্পর্কে সতর্ক করে বলা হয়েছে, চেয়ারম্যান যদি মনে করেন ওই কথা সংসদের অনুপযুক্ত তাহলে তা বাতিল করা হবে। এনিয়ে কোনও বিতর্ক চলবে না। সভায় অনুপস্থিত কোনও সদস্যের বিরুদ্ধে কোনও প্রস্তাব বা সমালোচনা করা যাবে না। এটাও সংসদীয় রীতি বিরুদ্ধ বলে বুলেটিনে সদস্যদের মনে করিয়ে দিয়েছে রাজ্যসভার সচিবালয়।
প্রসঙ্গত, অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতির মধ্যে এবারের বাদল অধিবেশন শুরু হতে চলেছে। দুই কক্ষেই সরকার-বিরোধী জোট সেয়ানে সেয়ানে কোলাকুলি করার পর্যায়ে দাঁড়িয়ে আছে। তাছাড়া, বেশ কিছু বিষয়ে বিরোধীদের হাতে টাটকা বিস্ফোরক রয়েছে সরকারপক্ষকে ঘায়েল করার মতো। এই অবস্থায় গত ১০ বছরের তুলনায় এবারের সংসদ অধিবেশন যে এককথায় জমে উঠবে তা বলাই বাহুল্য।
তবে সংসদের ভিতরে বিরোধী জোট শরিকরা মুখ খোলার কতটা সুযোগ পাবে তা লাখ টাকার প্রশ্ন। একটি উত্তর-সম্পাদকীয় লেখায় সেই সন্দেহ প্রকাশ করেছেন ইন্ডিয়া জোটের অন্যতম শরিক তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভা সদস্য ডেরেক ও'ব্রায়েন। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসে তিনি এই সংশয় প্রকাশ করে লিখেছেন, এই অধিবেশনে বিরোধীদের কথা বলতে দেওয়া হোক। সরকার এবং বিরোধীদের দেশের মানুষের হয়ে আওয়াজ তোলার সময়সীমা বেঁধে দেওয়ার বিষয়ে যেন স্বচ্ছ বণ্টন হয়।
প্রশ্ন হচ্ছে, সংসদে যখন কাজ ব্যাহত হয় অথবা বিঘ্ন ঘটানো হয়, তাতে কে লাভবান হয়? জবাব নিজেই দিয়েছেন ডেরেক। ক্ষমতায় থাকা সরকার। কারণ, সরকার সংসদের কাছে জবাবদিহি করতে দায়বদ্ধ। সংসদ জনগণের কাছে দায়বদ্ধ। সংসদে যদি কাজ না হয়, তাহলে সরকার আর কারও কাছে দায়বদ্ধ থাকল না।
ডেরেকের দাবি, আসন্ন অধিবেশনে ১৯০ ঘণ্টার কার্যাবলি ঠিক করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রশ্নপর্ব ও জিরো আওয়ারের জন্য বিরোধীরা মেরেকেটে ৩১ ঘণ্টা এবং সরকার ১৩৫ ঘণ্টা সময় পাবে। যা মোট সময়ের প্রায় ৭০ শতাংশ। সুতরাং, এই সরকারের আমলে সংসদে বিরোধীদের কথা বলার সময় ও সুযোগ কোথায়? তৃণমূল সাংসদের দাবি, এবার অন্তত কথা বলার সুযোগ দেওয়া হোক বিরোধীদের।