শেষ আপডেট: 11th September 2024 11:46
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ভারতের সঙ্গে হঠাৎ করেই ঘনিষ্ঠতা বাড়াতে চাইছে মালদ্বীপ। গত বছর নভেম্বরে ভারত মহাসাগরের এই দ্বীপ রাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নিয়েই দিল্লি বিরোধী সুর চড়িয়েছিলেন মহম্মদ মুইজ্জু। এমনকী তাঁর দুই মন্ত্রী প্রকাশ্যেই ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সম্পর্কে আপত্তিজনক মন্তব্যও করেছিলেন। সেই মুইজ্জুর অফিস থেকে জানানো হয়েছে, প্রেসিডেন্ট যত দ্রুত সম্ভব দিল্লি সফরে যেতে চান।
মুইজ্জু এর আগে গত জুনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর শপথ অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন। তবে সেটা রাষ্ট্রীয় সফর ছিল না। শপথ অনুষ্ঠান শেষেই দেশে ফিরে যান তিনি। সেবার নরেন্দ্র মোদী তাঁকে শপথ অনুষ্ঠানে থাকতে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। তখনই ফের আসার আমন্ত্রণপত্র তুলে দেওয়া হয়েছিল তাঁর হাতে। সেই মতো চলতি মাসেই নয়াদিল্লি সফরে আসতে চান মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট। ভারত তাঁর ইচ্ছাকে স্বাগত জানিয়ে বলেছে, দুই দেশের কূটনীতিকদের মধ্যে আলাপ-আলোচনায় আগে আলোচ্য ঠিক হোক।
চিন ঘনিষ্ঠ মুইজ্জু গতমাসে বেজিং সফরে গিয়েছিলেন। ক্ষমতায় এসেই তাঁর ভারত বিরোধিতা ও চিন প্রীতি প্রকাশ্যে চলে আসে। সেই তিনি নিজে থেকেই কেন ভারত সফরে আগ্রহী হয়েছেন তা নিয়ে কূটনৈতিক মহলে জল্পনা আছে।
শুধু ভারতে আসার বাসনা ব্যক্ত করাই নয় মুইজ্জু তাঁর দুই মন্ত্রীকে শেষ পর্যন্ত মন্ত্রিসভা থেকে বরখাস্ত করেছেন। যদিও সরকারিভাবে বলা হচ্ছে তাঁরা পদত্যাগ করেছেন। এ বছর জানুয়ারিতে দুই মন্ত্রী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করে বসেন। মুইজ্জু তখনকার মতো দুই মন্ত্রীর দফতর কেড়ে নিয়েছিলেন। তবে মন্ত্রী পদ ছিল। মঙ্গলবার মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট প্যালেস থেকে মুইজ্জুর ভারত সফরে আসার সিদ্ধান্ত ঘোষণার সঙ্গেই জানানো হয় দুই মন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন।
মুইজ্জু ভারত বিরোধিতার জিগির তুলেই ক্ষমতায় আসেন। দায়িত্ব নেওয়ার আগেই ঘোষণা করেন, মালদ্বীপ থেকে ভারতকে সেনা সরিয়ে নিতে হবে। সে দেশের সাবেক প্রেসিডেন্ট আবদুল গাইয়ুমকে জঙ্গিদের হাত থেকে রক্ষা করতে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী সেনা কমান্ডোদের পাঠিয়েছিলেন। তারা সাফল্যের সঙ্গে জঙ্গি দমন করে। পরে ভারতীয় সেনাকে সেখানে রেখে দেওয়ার আর্জি জানান গায়উুম। যদিও তারা সামরিক কোনও কাজে যুক্ত ছিল না। মালদ্বীপের অভ্যন্তরে হেলিকপ্টার সার্ভিস পরিচালনা করত সেনাবাহিনী। মুইজ্জুর আপত্তি মেনে সেনার জায়গায় হিন্দুস্থান অ্যারোনটিক্সের অসামরিক কর্মী-অফিসারদের পাঠানো হয়েছে।
সূত্রের খবর, ভারত বিরোধিতা নিয়ে দেশে প্রবল চাপে আছেন মুইজ্জু। সব বিরোধী দলই তাঁর ভারত বিরোধিতা এবং চিন প্রীতি নিয়ে আপত্তি তুলেছে। শ্রীলঙ্কার দৃষ্টান্ত দেখিয়ে তারা বলেছে, বেজিং কীভাবে ঋণের ফাঁদে ফেরে। মালদ্বীপে ইতিমধ্যেই চিনের বিপুল বিনিয়োগ রয়েছে। বেজিংয়ের দিকে আর না এগোতে সব দল পরামর্শ দিয়েছে তাঁকে।