শেষ আপডেট: 22nd May 2024 19:53
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ২০১০ সালের পর থেকে রাজ্যে যাঁরা ওবিসি সার্টিফিকেট পেয়েছেন সেই সব শংসাপত্র বুধবার বাতিলের নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা ও বিচারপতি তপব্রত চক্রবর্তী এই রায় ঘোষণা করেছেন।
উচ্চ আদালতের এই রায় ঘোষণার পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পষ্টাপষ্টি জানিয়ে দেন, তিনি এই রায় মানেন না। তাঁর কথায়, “ভদ্রলোককে আমি জাজ হিসাবে সম্মান করি। তবে উনি অনেক কিছুতে বিখ্যাত।”
মমতা বিচারপতির নাম না নিলেও বলেন, “নরেন্দ্র মোদীকে খুশি করার জন্য এই রায়। উনি যা বলছেন, কেউ কেউ তাই করছেন। ওঁকে দিয়ে একটা রায় করিয়েছে। কিন্তু গায়ের জোরে কেউ যদি মনে করেন, রাজ্য সরকারের অধিকার কেড়ে নেবেন, তা হবে না। যত দূর যেতে হবে, আমি যাব।”
ওবিসিদের এভাবে সংরক্ষণ ‘কেড়ে নেওয়ার’ বিরুদ্ধে ঝাড়গ্রামের সভায় মুখ খুলেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তাঁর কথায়, “বিজেপির ইস্তাহারেই রয়েছে ভোটের পর ওরা অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু করবে। এই ভোটে তাদের শিক্ষা দিতে হবে যারা হাইকোর্টের একাংশের মদতে বাংলার মানুষকে বঞ্চিত করতে চাইছে।”
অভিষেক ও মুখ্যমন্ত্রী দুজনেই বোঝানোর চেষ্টা করেছেন, বিচারব্যবস্থার উপর প্রভাব খাটানো হয়েছে। তা আরও স্পষ্ট করে বলেছেন তৃণমূলের মুখপাত্ররা।
শাসক দলের মুখপাত্র শান্তনু সেন বলেন, “যে বিচারপতি শুভেন্দু অধিকারীকে রক্ষাকবচ দিতেন, তিনিই এই রায় দিয়েছেন।” তাঁর কথায়, শুভেন্দুর বিরুদ্ধে মামলা করার আগে আদালতের অনুমতি নিতে বলেছিলেন এই বিচারপতি। যা এর আগে কখনও হয়নি।
এর আগে ২৬ হাজার চাকরি বাতিলের নির্দেশের পরও উচ্চ আদালতের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেছিলেন, ‘বিজেপির বিচারালয়’। আদালত চাকরি বাতিলের রায় ঘোষণার আগে শুভেন্দু কীভাবে তা জেনে যাচ্ছেন, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছিলেন মমতা। এদিন সেই অভিযোগ নিয়ে স্বর চড়িয়েছে তৃণমূল।
কলকাতা হাইকোর্ট এদিনের রায়ে জানিয়েছে, ২০১০ সালের পর যে সব ওবিসি সার্টিফিকেট রাজ্যে তৈরি করা হয়েছে, তা আইন মেনে হয়নি। সেই কারণেই ওই সব সার্টিফিকেট বাতিল করতে হবে। অবশ্য হাইকোর্ট এও জানিয়েছে, এই শংসাপত্র ব্যবহার করে কেউ ইতিমধ্যেই চাকরি পেয়ে থাকলে বা চাকরি পাওয়ার প্রক্রিয়ায় থাকলে, তাঁদের ক্ষেত্রে এই নির্দেশের কোনও প্রভাব পড়বে না। কিন্তু এর পর আর চাকরি পাওয়ার জন্য ওই সার্টিফিকেট ব্যবহার করা যাবে না।
কিন্তু মমতার বক্তব্য, সরকার অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির জন্য সংরক্ষণ আইন মেনেই করেছিল। উপেন বিশ্বাসকে চেয়ারম্যান করে সরকার এজন্য কমিশন তৈরি করেছিল। তখনও কোর্টে কেস হয়েছিল। কিন্তু বিজেপি হেরে গেছিল। এ বারও সেটাই হবে।
(দ্য ওয়াল বিচারব্যবস্থার উপর সর্বদাই শ্রদ্ধাশীল। এই প্রতিবেদনে যাঁদের বক্তব্য প্রকাশিত হয়েছে তা তাঁদের নিজস্ব মত। তার দায় দ্য ওয়ালের নয়।)