শেষ আপডেট: 4th December 2023 20:26
দ্য ওয়াল ব্যুরো: রাজনীতির আঙিনায় সবসময় চর্চায় থাকে দিল্লি। আর শীতকালে রাজধানীর দূষণ কেড়ে নেয় সব স্পটলাইট। এ বছর দিল্লির দূষণ নিয়ে আদালতে মামলা হয়েছে। এহেন পরিস্থিতিতে ফের দিল্লি চর্চায় উঠে এল এক অন্য কারণে। সম্প্রতি ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরো বা এনসিআরবি একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, মহিলাদের ওপর ঘটা অপরাধের ভিত্তিতে দিল্লিতেই সবচেয়ে বেশি এফআইআর দায়ের হয়েছে! অপরাধের হার প্রতি লক্ষে হিসেবে দিল্লিতে ১৪৪.৪।
এনসিআরবি-র রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২২ সালে রাজধানীতে শুধুমাত্র মহিলাদের ওপর ঘটা অপরাধের ভিত্তিতে ১৪ হাজার ২৪৭টি এফআইআর দায়ের হয়েছে। এই অভিযোগে রাজধানীতে এফআইআর দায়ের করার হার ৬৪ শতাংশের বেশি। ২০২১ সালে সংখ্যাটা একটু বেশি ছিল। সেবার মহিলাদের ওপর ঘটা অপরাধের ভিত্তিতে ১৪ হাজার ২৭৭টি এফআইআর দায়ের হয়েছিল।
গোটা ভারতে মহিলাদের ওপর ঘটা অপরাধের ভিত্তিতে মোট ৪ লাখ ৪৫ হাজার ২৫৬টি এফআইআর দায়ের হয়েছে। অর্থাৎ ঘণ্টায় ৫১টি করে এফআইআর হয়েছে।
এনসিআরবি-র রিপোর্ট থেকে আরও জানা যায়, ১২টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে অপরাধের হার দেশের গড় অপরাধের থেকেও বেশি। হরিয়ানায় অপরাধের হার প্রতি লক্ষে ১১৮.৭, তেলঙ্গনায় ১১৭, রাজস্থানে ১১৫.১, ওড়িশায় ১০৩, অন্ধ্রপ্রদেশে ৯৬.২, আন্দামান ও নিকোবর দীপপুঞ্জে ৯৩.৭, কেরলে ৮২, অসমে ৮১, মধ্যপ্রদেশে ৭৮.৮, উত্তরাখণ্ডে ৭৭, মহারাষ্ট্রে ৭৫.১ এবং পশ্চিমবঙ্গে ৭১.৮। উত্তরপ্রদেশে এই হার ৫৮.৬।
বিভিন্ন অপরাধ মিলিয়ে ২০২২ সালের অভিযোগ জমা পড়ার খতিয়ান দেখলে দেশের মধ্যে সবার আগে আছে উত্তরপ্রদেশ। যোগী রাজ্যে অভিযোগে জমা হয়েছে ৬৫ হাজার ৭৪৩টি মামলা। তারপর রয়েছে যথাক্রমে মহারাষ্ট্র (৪৫ হাজার ৩৩১), রাজস্থান (৪৫ হাজার ৫৮), পশ্চিমবঙ্গ (৩৪ হাজার ৭৩৮) ও মধ্যপ্রদেশ (৩২ হাজার ৭৬৫)।
কী কী অভিযোগ উঠেছে? জানা গেছে, বেশিরভাগ অভিযোগই এসেছে মহিলাদের স্বামী বা তাঁর আত্মীয়দের বিরুদ্ধে। মহিলাকে মানসিক ও শারীরিক অত্যাচারের এফআইআর দায়ের হয়েছে। যার হার ৩১.৪ শতাংশ। এছাড়াও মহিলাদের অপহরণ (১৯.২ শতাংশ), অশালীন আচরণ (১৮.৭ শতাংশ) এবং ধর্ষণের (৭.১ শতাংশ) মতো অভিযোগ তো আছেই।
এনসিআরবি-র মতে, এফআইআর-এর হার বৃদ্ধি মানেই যে দেশে অপরাধ বেড়েছে তা নয়। পুলিশ ও স্থানীয় কর্তৃপক্ষ মানুষকে অপরাধ সম্পর্কে সচেতন করছে। তাতে মানুষ নির্ভয়ে অভিযোগ জানাতে পারছে। আগে অপরাধ ঘটলেও মানুষ বেমালুম চুপ করে থাকত, কিন্তু এখন দেশের নাগরিক অনেক বেশি সচেতন। তাই বেশি পরিমাণ অভিযোগ দায়ের হচ্ছে। এতে অপরাধ দমন করা ও অপরাধের হার কমাতে সাহায্য করবে।