শেষ আপডেট: 25th March 2024 17:41
দ্য ওয়াল ব্যুরো: মস্কোয় কনসার্ট হলে হামলায় রুশ কর্তৃপক্ষ ১১ জনকে আটক করেছে। তার মধ্যে গুলি চালানো চার সন্দেহভাজনকে গ্রেফতার করেছে। এই চারজন কনসার্ট হলে এলোপাথাড়ি গুলি চালিয়ে মস্কোর দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে ৩৪০ কিমি দূরে ব্রায়ানস্ক অঞ্চল দিয়ে ইউক্রেন সীমান্ত পেরনোর চেষ্টায় ছিল। গ্রেফতারির পর একটি যাচাই না করা ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, তাদের উপর অকথ্য নির্যাতন করা হয়েছে। অমানুষিকভাবে একজনের একটি কান কেটে নেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।
দালের্ডঝোন মিরজোয়েভ নামে এক তাজিকিস্তানের বাসিন্দাকে মার খেয়ে মুখ ফোলা এবং চোখে কালশিটে পড়ে যাওয়া অবস্থায় ছবিতে দেখা গিয়েছে। কাচের খাঁচার মধ্যে বন্দি অবস্থায় সে আছে। সাইদাক্র্যামি রাখাবালিজোডা নামে একজনের কানে বিরাট ব্যান্ডেজ বাঁধা রয়েছে। তারই একটি কানের কিছুটা অংশ কেটে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
হাসপাতালের পোশাকে হুইল চেয়ারে অজ্ঞান অবস্থায় দেখা মিলেছে ফায়জোভ নামে আরেকজনকে। তার সারা মুখে মেরে ফাটিয়ে দেওয়ার চিহ্ন রয়েছে। শামসুদ্দিন ফারিদুনি নামের একজনের মুখেও অসংখ্য ক্ষত রয়েছে। গ্রেফতার হওয়া এবং আটকদের সঙ্গে কী ধরনের ব্যবহার করা হচ্ছে, এ সম্পর্কে মুখে স্পিকটি নট হয়ে আছে ক্রেমলিন।
অন্যদিকে, মস্কোর কাছে কনসার্ট হলে ইসলামিক স্টেট জঙ্গি সংগঠনই কি হামলা চালিয়েছিল? সোমবার এই মারাত্মক রহস্যজনক প্রশ্ন তুলল রাশিয়া। একইসঙ্গে আমেরিকার বিরুদ্ধে পরোক্ষে সত্য গোপন করার অভিযোগ তুলে রাশিয়া বলেছে, ইউক্রেনকে বাঁচানোর চেষ্টা করছে ওয়াশিংটন। গত দুদশকের মধ্যে রাশিয়ার ভিতরে সবথেকে প্রাণঘাতী হামলা ছিল এটি। এখনও পর্যন্ত ১৩৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। জখমের সংখ্যা ১৮২। জঙ্গি হামলার পরপরই মার্কিন চর সংস্থাগুলি জানিয়ে দেয় যে, আফগানিস্তানের ইসলামিক স্টেটস খোরাসান গোষ্ঠী এই হামলার দায় স্বীকার করেছে। শুক্রবার থেকে এনিয়ে মুখে কুলুপ এঁটে থাকলেও এদিন সরাসরি আমেরিকার দিকে সত্য গোপনের অভিযোগ তুলল ক্রেমলিন কর্তৃপক্ষ।
আমেরিকার দাবি, তারা এ ধরনের হামলার সতর্কতা দিয়েছিল রাশিয়াকে। তারপরেও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন প্রকাশ্যে হামলাকারীদের সঙ্গে ইসলামিক জঙ্গিদের সম্পর্ক আছে বলে স্বীকার করেননি। পুতিন গোড়া থেকেই ইউক্রেনের দিকে আঙুল তুলে এসেছেন। যদিও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদমির জেলেনস্কি অভিযোগ নস্যাৎ করে বলেছিলেন, অযথা আমাদের দিকে বন্দুক তাক করছে রাশিয়া।
এরপর এদিন রাশিয়ার বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা আমেরিকার কাছে প্রশ্ন তুলে বলেন, এই হামলার পিছনে যে ইসলামিক স্টেট ছিল কীভাবে সে ব্যাপারে নিশ্চিত হল ওয়াশিংটন। এই সংগঠনটির ইরাক, সিরিয়া এবং আফগানিস্তানের একাংশ ছাড়া অন্য কোথাও নিয়ন্ত্রণ নেই। রাশিয়ার নতুন প্রাভদা সংবাদপত্রে একটি নিবন্ধে মারিয়া লিখেছেন, কিয়েভের দিক থেকে নজর সরাতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইসলামিক স্টেটকে এগিয়ে দিচ্ছে। তিনি আরও লিখেছেন, রুশ জনগণ যেন মনে রাখেন ১৯৮০ সালে সোভিয়েত বাহিনীর বিরুদ্ধে তথাকথিত মুজাহিদিন জঙ্গিদের লেলিয়ে দিয়েছিল আমেরিকা। ওসামা বিন লাদেন সহ গোটা আল কায়েদাকে অর্থ-অস্ত্র দিয়ে সাহায্য ও সমর্থন করেছিল যুক্তরাষ্ট্র।