শেষ আপডেট: 7th July 2021 16:45
দ্য ওয়াল ব্যুরো: বাংলায় দ্বিতীয় মোদী মন্ত্রিসভায় দুজন কেন্দ্রীয় ক্যাবিনেটের সদস্য ছিলেন। সেই দুই কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় এবং দেবশ্রী চৌধুরীকে মন্ত্রিত্ব হারাতে হয়েছে। তার বদলে বাংলা থেকে নতুন চার জনকে প্রতিমন্ত্রী করা হয়েছে কেন্দ্রীয় ক্যাবিনেটে। আলিপুরদুয়ারের জন বার্লা, কোচবিহারের নিশীথ প্রামাণিক, বনগাঁর শান্তনু ঠাকুর এবং বাঁকুড়ার সুভাষ সরকার। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, এঁরা কি প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দাগ কাটতে পারবেন? হয়ে উঠতে পারবেন তপন সিকদারের মতো? অনেকে বলেন, প্রতিমন্ত্রীদের বিশেষ কাজ বা গুরুত্ব কোনওটাই থাকে না। এসব আসলে নাম কা ওয়াস্তে। আবার অনেকে এও বলেন, প্রতিমন্ত্রী হলেও ছাপ ফেলা যায়। যদি তিনি নিজেকে সেই উচ্চতায় তুলে ধরতে পারেন। তাছাড়া মূল মন্ত্রকের দায়িত্বে কে থাকছেন তার উপরেও অনেকটা নির্ভর করে। ১৯৯৮ ও ১৯৯৯ সালে দমদম থেকে জিতেছিলেন বিজেপির তপন সিকদার। বাজপেয়ী সরকারের টেলিকমের প্রতিমন্ত্রী করা হয়েছিল বর্ষীয়ান বিজেপি নেতাকে। তারপর তাঁর দৌত্য মাইলফলক হয়ে রয়েছে। সেই সময় টেলিকম মন্ত্রী ছিলেন প্রমোদ মহাজন। প্রয়াত প্রমোদের সঙ্গে তপন সিকদারের সখ্যও ছিল। বাজপেয়ী জমানার প্রতিমন্ত্রী তপন সিকদার জোর দিয়েছিলেন বাংলার টেলিফোন এক্সচেঞ্জগুলির সংস্কারে এবং পরিকাঠামো উন্নয়নে। প্রতি শনি-রবিবার তাঁর রুটিন ছিল সেসবের উদ্বোধন। তপন সিকদার সেই সময়ে বলেছিলেন, শিগগির এমন একটা সময় আসছে যেদিন ভারতে রিক্সাচালক, অটো চালকের হাতে মোবাইল থাকবে। অনেকে সেসময় এ নিয়ে ঠাট্টা তামাশা করেছিলেন বটে। কিন্তু এখন তা বাস্তব। একথা ঠিক যে তপন সিকদার ছিলেন রাজনৈতিক ভাবে উচ্চমার্গের। অন্যদিকে প্রমোদ মহাজনও ছিলেন উত্তর আধুনিক দৃষ্টিভঙ্গির। ফলে তাঁদের তালমিল হয়েছিল। পর্যবেক্ষকদের মতে, শুধু মোবাইল সংযোগ নয়, ল্যান্ড লাইন যোগাযোগেও বড় অগ্রগতি ঘটেছিল। অনেকের মতে, বাবুল এবং দেবশ্রী কেউই নিজেদের সেই উচ্চতায় নিয়ে যেতে পারেননি। সে কারণেই তাঁদের ছেঁটে ফেলা হয়েছে। এখন প্রশ্ন এই চারজন কি পারবেন? অনেক সমীকরণ মেপে তাঁদের মন্ত্রিসভায় নেওয়া হয়েছে। নিশীথ এবং শান্তনুকে যে মন্ত্রিসভায় জায়গা দিতে চলেছেন মোদী তা দ্য ওয়াল-এ তিন সপ্তাহ আগে লেখা হয়েছিল। তখনই বলা হয়েছিল এর মধ্যে ভারসাম্যের রাজনীতি রয়েছে। একে তো এই দুই সাংসদ রাজবংশী ও মতুয়া সম্প্রদায়ের। তার উপর দু’জন উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গের সাংসদ। জন বার্লার নামও যে নরেন্দ্র মোদীর বিবেচনার মধ্যে রয়েছে তাও লেখা হয়েছিল দ্য ওয়াল-এ। কিন্তু মাঝে বাংলা ভাগ নিয়ে তাঁর মন্তব্য বিতর্ক তৈরি করে। তারপরেও দেখা গেল এই আদিবাসী নেতাকে মন্ত্রী করলেন নরেন্দ্র মোদী। শুধু উত্তরবঙ্গ ও দক্ষিণবঙ্গ নয়। পশ্চিমাঞ্চলের প্রতিনিধি হিসাবে সুভাষ সরকারকেও মোদী জায়গা দিলেন ক্যাবিনেটে। এখন দেখার তাঁদের ছুটোছুটি কেমন হয়।