শেষ আপডেট: 3rd July 2023 06:25
দ্য ওয়াল ব্যুরো: সোমবার গুরু পূর্ণিমার সন্ধ্যায় মন্ত্রী পরিষদের বৈঠক ডেকেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। মন্ত্রী পরিষদের বৈঠক আর মন্ত্রিসভার বৈঠকের মধ্যে ফারাক রয়েছে। সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য মন্ত্রিসভার বৈঠক ডাকা হয়। সেই বৈঠকে শুধু ক্যাবিনেট মন্ত্রী আর স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রীরা থাকেন। কেন্দ্রের সরকারের প্রতিমন্ত্রীরা মন্ত্রিসভার বৈঠকে ডাক পান না। কিন্তু মন্ত্রী পরিষদের বৈঠক হল, সমস্ত মন্ত্রীদের নিয়ে বৈঠক। নয়াদিল্লির ক্ষমতার অলিন্দে বড় আলোচনা হল, এদিন ওই মন্ত্রী পরিষদের বৈঠকের পরই মন্ত্রিসভার রদবদল ঘটাতে পারেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Modi cabinet reshuffle)।
বাংলা থেকে এখন কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় চার জন সদস্য রয়েছেন। কোচবিহারের বিজেপি সাংসদ নিশীথ প্রামাণিক হলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী (Nisith Pramanik)। বনগাঁর শান্তনু ঠাকুর (Shantanu Thakur) হলেন বন্দর ও জাহাজ প্রতিমন্ত্রী। জন বার্লা হলেন সংখ্যালঘু উন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী। তিনি আলিপুরদুয়ারের সাংসদ। আর বাঁকুড়ার বিজেপি সাংসদ সুভাষ সরকার হলেন শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী। সূত্রের দাবি, মন্ত্রিসভার আসন্ন রদবদলে বাংলা থেকে এক বা দু’জন বাদ পড়তে পারেন। পরিবর্তে কোনও নতুন মুখ মন্ত্রিসভায় স্থান পাবেন কিনা তা এখনও স্পষ্ট নয়। ওই সূত্রের এও দাবি, এ ব্যাপারে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে কথা হয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহর।
বাংলা থেকে এর আগে মন্ত্রী ছিলেন আসানসোলের প্রাক্তন সাংসদ বাবুল সুপ্রিয় ও রায়গঞ্জের সাংসদ দেবশ্রী চৌধুরী। কিন্তু একুশের ভোটের পর বাবুল ও দেবশ্রী মন্ত্রিসভা থেকে বাদ পড়েন। পরিবর্তে নতুন চারজনকে মন্ত্রী করা হয়। সে ঘটনার নেপথ্যেও শুভেন্দুর পরামর্শ ছিল বলে রাজ্য বিজেপির অনেকে মনে করেন। শুভেন্দু-বাবুলের সম্পর্কের অবনতির জন্য তা বড় কারণ বলে মনে করা হয়।
তবে এ যাত্রায় নিশীথ প্রামাণিকের মন্ত্রিত্ব যাওয়ার সম্ভাবনা কম বলেই মনে করা হচ্ছে। মাত্র কদিন আগেই নিশীথের নিরাপত্তা বাড়িয়ে জেড প্লাস করা হয়েছে। যা তাৎপূর্যপূর্ণ।
লোকসভা ভোটের আগে মন্ত্রিসভার রদবদল নতুন নয়। ২০২৪ সালে লোকসভা ভোট। তার আগে আর এক বছরও পুরো বাকি নেই। অতীতে অটল বিহারী বাজপেয়ীও ২০০৪ সালে লোকসভা ভোটের আগে ২০০৩ সালে মন্ত্রিসভায় বড় রদবদল করেছিলেন। প্রমোদ মহাজনের মতো হেভিওয়েট মন্ত্রীকে মন্ত্রিসভা থেকে সরিয়ে বিজেপির সংগঠনের দায়িত্বে আনা হয়েছিল তখন। এবারও সম্ভাব্য রদবদলে তেমন কিছু ঘটে যেতে পারে বলে অনেকে মনে করছেন। অর্থাৎ মন্ত্রিসভা থেকে কোনও বড় মন্ত্রীকে সংগঠনের দায়িত্বে আনা হতে পারে। সেদিক থেকে অনেকেই ভূপেন্দ্র যাদব ও ধর্মেন্দ্র প্রধানের কথা বলছেন।
পর্যবেক্ষকদের মতে, লোকসভা ভোটের আগে এহেন রদবদলে প্রশাসনিক কার্যকারিতা বিচার্য হয় না। রাজনৈতিক কারণকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়। এ বছর তেলঙ্গানা, রাজস্থান, ছত্তীসগড়, মধ্যপ্রদেশে ভোট রয়েছে। রদবদলে সেই সব রাজ্যের অঙ্ক হয়তো মাথায় রাখা হবে। তা ছাড়া মহারাষ্ট্রে রবিবারের নাটকের পর এনসিপি নেতা প্রফুল্ল প্যাটেলকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় নেওয়া হবে কিনা তা নিয়েও অনেকের আগ্রহ রয়েছে।
সোমবার মন্ত্রী পরিষদের এই বৈঠকের আগে গত বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে গিয়ে বৈঠক করেছিলেন বিজেপি সভাপতি জেপি নাড্ডা ও সাধারণ সম্পাদক বিএল সন্তোষ। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহও ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। মন্ত্রিসভার রদবদলের সম্ভাবনা নিয়ে তারপরই আলোচনা ও জল্পনায় গতি পেয়েছে। এখন দেখার গুরু পূর্ণিমার সন্ধেয় আদৌ কোনও বদল হয় কিনা।
অজিত-প্রফুল্ল বিজেপির বন্ধু, বাংলায় শুভেন্দু-সুকান্তরা কি অস্বস্তিতে? প্রশ্ন ইডি-সিবিআই নিয়েও