শেষ আপডেট: 19th December 2023 17:55
দ্য ওয়াল ব্যুরো, হুগলি: একে আর শুধু গালাগাল বলা যায় কি! যে ভাষায় নিজের ফেসবুক পেজে সমালোচকদের আক্রমণ করলেন বলাগড়ের তৃণমূল বিধায়ক তা রীতিমতো নজিরবিহীন।
বলাগড়ের তৃণমূল বিধায়ক মনোরঞ্জন ব্যাপারী সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছিলেন, “এতো ট্রেলার হ্যায়, পিকচার আভি বাকি হ্যায় দোস্ত। থোরা ইন্তেজার করো, সব দেখনে কো মিলেগা। চোর কাটমানিখোরদের সাম্রাজ্য আমি ধ্বংস করবই। আমি দিদির আশীর্বাদ নিয়ে বলাগড়ে এসেছি।"
লিখেই শেষ করেননি বিধায়ক। এই লেখায় যারা কমেন্ট করেছেন তাদেরও অশ্লীল ভাষায় আক্রমণও করেছেন। আর তাই নিয়েই শোরগোল গোটা জেলায়। একটি ভাইরাল ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে বলাগড় কলেজের সামনে কিছু লোকজন নিয়ে দাঁড়িয়ে তৃণমূলের নেতাদের একাংশকে তুলোধোনা করছেন বিধায়ক। এক নেত্রীর নাম না করে তাকে সাপের সঙ্গে তুলনা করছেন। জিরাটের তৃণমূল প্রধান তপন দাসকে মাতাল তোলাবাজ বলছেন। কী করে স্কুল শিক্ষক হয় এমন ব্যক্তি সে প্রশ্ন তোলার পাশাপাশি ঘুষ দিয়ে প্রধান হয়েছেন বলেও দাবি করছেন।
গত শুক্রবার এই কলেজের পড়ুয়াদের সঙ্গে নবীন বরণ ও বাৎসরিক অনুষ্ঠান নিয়ে আলোচনা করতে গিয়েছিলেন হুগলি জেলা পরিষদ সদস্য তৃণমূল নেত্রী রুনা খাতুন, জিরাটের তৃণমূল প্রধান তপন দাস সহ আরও কয়েকজন। তার পরেই কলেজের গেটে লোকজন নিয়ে এই বক্তব্য পেশ করেন বিধায়ক। রুনা খাতুনের সঙ্গে মনোরঞ্জন ব্যাপারীর বিরোধ নতুন নয়। প্রথম থেকেই নানা বিষয়ে তাদের মতবিরোধ দেখা গেছে। পঞ্চায়েত নির্বাচনে টিকিট বিলি নিয়েও বিরোধ হয়েছে। তপন দাস- রুনা গোষ্ঠীর সঙ্গে। তাই কলেজে যাওয়ায় তপন দাসকেও একহাত নেন বিধায়ক।
বলাগড় কলেজ পরিচালন সমিতি আগে ছিল বহিষ্কৃত তৃণমূল নেতা শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে। বর্তমানে তা রয়েছে মনোরঞ্জন ব্যাপারীর হাতে। সেই কলেজে অন্যের ঢুকে পড়া পছন্দ নয় বিধায়কের। তার জেরেই দলেরই নেতা নেত্রীদের কদর্য ভাষায় আক্রমণ বলে মনে করছে জেলার রাজনৈতিক মহল। বলাগড়ের বাসিন্দা দিলীপ রাজবংশী বলেন, “বিধায়ক যখন ভোটে দাঁড়ান আমরাও খেটেছি। উনি একজন পড়াশোনা জানা মানুষ হয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় যে ধরনের ভাষা লিখছেন তা মানা যায় না।”
তৃণমূল কর্মী বিভাস রায় বলেন, “বিধায়ক ভোটে জেতার পর আর তাঁকে দেখা যায়নি। এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় যে ভাবে অশ্লীল কথা লিখছেন, তা একদমই উচিত নয়। কারও বিরুদ্ধে ওনার কোনো অভিযোগ বা বক্তব্য থাকলে দলকে জানাতে পারেন।” জিরাট প্রধান তপন দাস বলেন, “আমাকে প্রধান করতে বিধায়ক আর ব্লক সভাপতি প্যাডে সুপারিশ করেছিলেন। তাহলে তিনি বলতে পারবেন কত টাকা নিয়েছেন। বিধায়ক এর আগেও বলাগড়ের প্রায় সব নেতার বিরুদ্ধে কিছু না কিছু বলেছেন। বাদ ছিলাম আমি। বিধায়কের আমার বিরুদ্ধে কোনো বক্তব্য থাকলে দলের ভিতর বলতে পারতেন। এভাবে ওপেন ফোরামে কেন করলেন জানি না। ওনার সঙ্গে আমার কোনও সমস্যা নেই। তবে সোশ্যাল মিডিয়ায় যা সব লিখেছেন তাতে বলাগড়বাসীর মাথা লজ্জায় হেঁট হয়ে গেছে।”