শেষ আপডেট: 20th September 2024 12:33
দ্য ওয়াল ব্যুরো: তিরুপতি কা লাড্ডু, জো খায়া ওয়হি পস্তায়া। তিরুপতি বালাজির প্রসাদ জ্ঞানে পশুর চর্বি মেশানো লাড্ডু খেয়ে হিন্দুধর্ম যায় যায় অবস্থা!
অন্ধ্রপ্রদেশের উপমুখ্যমন্ত্রী তথা টিডিপির শরিকদল জনসেনা পার্টির নেতা পবন কল্যাণ শুক্রবার সকালে এক এক্সবার্তায় তিরুপতি মন্দিরের প্রসাদী লাড্ডুতে পশুর চর্বি মেশানোর ঘটনা নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, তিরুপতি বালাজির প্রসাদে পশুর তেল-চর্বি (মাছের তেল, শুয়োর এবং গোরুর চর্বি) মেশানোর ঘটনায় আমরা সকলেই গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। আগের ওয়াইসিপি সরকার গঠিত তিরুমালা তিরুপতি দেবস্থানম ট্রাস্ট বোর্ডকে এই প্রশ্নের জবাব দিতে হবে।
উপমুখ্যমন্ত্রী দেশের মানুষকে আশ্বাস দিয়ে লিখেছেন, আমরা এই ঘটনার বিরুদ্ধে কঠিন ব্যবস্থা নেব। কিন্তু, এই ঘটনা আমাদের চারধারে মন্দিরগুলির স্বেচ্ছাচারিতা, জমি সংক্রান্ত এবং অন্যান্য ধর্মীয় উপাচারের দিকে নজর কেড়ে নিয়েছে। এই অবস্থায় তিনি জাতীয় স্তরে একটি সনাতন ধর্ম রক্ষণ বোর্ড গঠনের প্রয়োজনীয়তা আরোপ করেছেন। পবন কল্যাণের দাবি, গোটা ভারতে সনাতন ধর্মকে রক্ষার জন্য মন্দিরগুলির সমস্ত বিষয়ে নজরদারি রাখবে এই বোর্ড।
পবন কল্যাণ আরও লিখেছেন, সমাজের সর্বস্তরে যেমন নীতি রূপায়ক, ধর্মীয় প্রধান, বিচারবিভাগ, সুনাগরিক, প্রচারমাধ্যম এবং অন্য আরও অনেককে নিয়ে জাতীয় স্তরে এর পর্যালোচনা প্রয়োজন। আমি মনে করি, যে কোনও পদ্ধতিতেই হোক না কেন, সনাতন ধর্মকে অপবিত্র করার চেষ্টায় ইতি টানা দরকার।
উল্লেখ্য, গতকালই তিরুপতি মন্দিরে এই বিধর্মী কাজের বিরোধিতা করে একটি এক্সবার্তা পাঠিয়েছিল হিন্দু আইটি সেল। তাতে তারা লিখেছিল, তিরুপতি বালাজির পবিত্র প্রসাদে ভেজাল মেশানোর ঘটনা বিশ্বাসঘাতকতা এবং মন্দির কমিটির নোংরা কাজ। তাবৎ হিন্দু সমাজ এই ঘটনায় যারপরনাই বেদনাহত ও উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে। উপমুখ্যমন্ত্রীকে ট্যাগ করে লেখা হয়েছে, আপনারা অবিলম্বে দোষীদের গ্রেফতার করুন ও আইনি ব্যবস্থায় কঠোর শাস্তির দিন।
দেশের সনাতন ধর্মের অন্যতম বিজ্ঞাপনদাতা, কেন্দ্রের শাসকদল বিজেপি তিরুপতির লাড্ডুতে পশুর চর্বি মেশানোর ঘটনায় অত্যন্ত বিব্রত।
অন্ধ্রপ্রদেশের বর্তমান শাসকদল এন চন্দ্রবাবুর নাইডুর দল তেলুগু দেশম পার্টিও হিন্দুতীর্থ তিরুপতি মন্দিরের প্রসাদী লাড্ডুতে গোরু-শুয়োরের চর্বি, মাছের তেল মেশানোর ঘটনায় পূর্বতন ওয়াইএসআর কংগ্রেসের মুখ্যমন্ত্রী জগনমোহন রেড্ডি সরকারকে হাড়িকাঠে চাপাচ্ছে। বিশেষত এই ঘটনা প্রবলভাবে নাড়িয়ে দিয়েছে দেশের তাবড় হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলিকে।
এদিকে, তিরুপতি মন্দিরে তৈরি লাড্ডু গিয়েছিল অযোধ্যার রামমন্দিরের উদ্বোধনে। আর তা নিয়ে শুরু হয়েছে নতুন বিতর্ক। আর এই বিতর্ক ঘনিয়ে তুলেছে সনাতন হিন্দুত্ববাদী সংগঠন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ। আরএসএসের মুখপত্র 'পাঞ্চজন্য'তে লেখা হয়েছে, তিরুপতি মন্দিরের প্রসাদী লাড্ডুতে পশুর চর্বি মেশানোর অভিযোগ অত্যন্ত গুরুতর। তাতে দাবি করা হয়েছে, অযোধ্যার রামমন্দিরেও তিরুপতি তিরুমালা মন্দির থেকে এক লক্ষ লাড্ডু গিয়েছিল।
এই বিতর্কের আগুন আরও উসকে দিয়ে রাম জন্মভূমির মুখ্য পুরোহিত আচার্য সত্যেন্দ্র দাস তীব্র নিন্দা করেছেন। শুক্রবার তিনি বলেন, আমি মনে করি, এর পিছনে বিদেশি চক্রান্ত আছে। যে বা যারা এই কাজ করেছে তারা জঘন্য অপরাধী এবং দেশদ্রোহী। সংবাদ সংস্থাকে তিনি বলেন, ভগবান তিরুপতি বালাজির প্রসাদের লাড্ডু পৃথিবী বিখ্যাত। এই ঘটনা ভক্তদের ধর্মীয় বিশ্বাসে আঘাত হেনেছে। যে বা যারাই এই কাজ করে থাকুক না কেন, সে গুরুতর অপরাধী ও দেশদ্রোহীর মতো কাজ করেছে।