শেষ আপডেট: 15th March 2024 11:30
দ্য ওয়াল ব্যুরো: সামান্য বেতনের মজুর থেকে ধনকুবের। একের পর এক আর্থিক দুর্নীতি, অর্থ তছরুপের অভিযোগে দীর্ঘদিন ধরে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের নজরে। বেশ কয়েকবার ইডি তল্লাশিও চলেছে তাঁর ঘরে। শেষবার গত ৯ মার্চ তাঁর জামাইয়ের বাড়িতে তল্লাশি চালায়। এহেন প্রচার-প্রদীপের আড়ালে থাকা সান্তিয়াগো মার্টিন থুড়ি 'লটারি কিং' নির্বাচনী বন্ড কেনায় পিছনে ফেলে দিয়েছেন দেশের তাবড় শিল্পপতি ও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকে। আইন ও বিচারের সঙ্গে লুকোচুরি খেলে যাওয়া ফিউচার গেমিং নামে এক অখ্যাত সংস্থার মালিক লটারি কিং ১৩৬৮ কোটি টাকার চাঁদা দিয়েছেন রাজনৈতিক দল বা দলগুলিকে।
সান্তিয়াগো মার্টিনের দাতব্য সংস্থার ওয়েবসাইট বলছে, মায়ানমারের ইয়াঙ্গনে দিনমজুর হিসেবে তাঁর কর্মজীবন শুরু। ১৯৮৮ সালে তিনি ভারতে চলে আসেন এবং তামিলনাড়ুতে একটি লটারি এন্টারপ্রাইজ তৈরি করেন। তারপর থেকে লটারি কোম্পানির বপু বৃদ্ধি ঘটে ছড়িয়ে পড়ে কর্নাটক, কেরল ও উত্তর-পূর্ব ভারতেও। এরপর তিনি সরকারি লটারি প্রকল্পগুলির সঙ্গে হাত মেলান। তখন তাঁর ব্যবসা ছড়িয়ে পড়ে ভুটান ও নেপালেও।
লটারি জগতের রাজদণ্ড একহাতে রেখে সান্তিয়াগো এরপর প্রবেশ করেন ইমারতি, বস্ত্র এবং হোটেল ব্যবসায়। অর্থের পরিমাণ বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে সামাজিক সম্মান বাড়াতে তিনি লটারি সংগঠনের সর্বভারতীয় সভাপতি হন। তাঁর ফিউচার গেমিং সলিউশনস ইন্ডিয়া ওয়ার্ল্ড লটারি অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যপদ লাভ করায় সান্তিয়াগোকে লটারি কিং নামে ডাকতে শুরু করে লোকজন।
এরপর লটারি কিং ঢুকে পড়েন অনলাইন গেমিং, ক্যাসিনো এবং স্পোর্টস বেটিং ব্যবসায়। স্টেট ব্যাঙ্কের দেওয়া নির্বাচন কমিশনকে তথ্যে দেখা যাচ্ছে লটারি কিং ২০১৯ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত ১৩৬৮ কোটি টাকার নির্বাচনী বন্ড কিনেছেন। অর্থ তছরুপ দমন আইনে (পিএমএলএ) ২০১৯ সাল থেকে ইডির নজরে রয়েছেন সান্তিয়াগো মার্টিন।
২০২৩ সালের মে মাসে ইডি আধিকারিকরা কোয়েম্বাতুর এবং চেন্নাইয়ে তল্লাশি চালান। সিবিআইয়ের চার্জশিটেও তাঁর নাম রয়েছে। তাতে অভিযোগ, ফিউচার গেমিং সিকিম সরকারের লটারিকে কেরলে খুচরো ব্যবসায় পরিণত করেছিলেন। এরফলে সিকিম সরকারের ৯১০ কোটি টাকা ক্ষতি হয়।
নির্বাচনী বন্ড খরিদ করার মধ্যে রয়েছে হায়দরাবাদের মেঘা ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার। যারা ৯৬৬ কোটি টাকার বন্ড কিনেছে। অন্যান্য নামগুলি হল, অ্যাপোলো টায়ার্স, ভারতী এয়ারটেল, সিয়েট টায়ার্স, সিপলা, ডিএলএফ কমার্শিয়াল ডেভেলপার্স, ডঃ রেড্ডিজ ল্যাবরেটরিজ, এডেলউইজ, গ্রাসিম ইন্ডাস্ট্রিজ, ইন্ডিগো, আইটিসি, জিন্দাল গ্রুপ, কেভেন্টার, কেপি এন্টারপ্রাইসেজ, ফিলিপস কার্বন ব্ল্যাক, পিরামল এন্টারপ্রাইসেজ, পিভিআর, স্পাইসজেট, সুলা ওয়াইনস, সান ফার্মা, টোরেন্ট পাওয়ার, আলট্রাটেক সিমেন্ট, বর্ধমান টেক্সটাইলস, বেদান্ত এবং ওয়েলস্পান।