শেষ আপডেট: 19th June 2024 14:29
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ফৈজাবাদ লোকসভা কেন্দ্রে এবার হেরে গিয়েছে বিজেপি। লোকসভা আসনটি যে প্রাচীন শহরটির নামে সেই ফৈজাবাদ থেকে দেড়-দু কিলোমিটার দূরে অবস্থিত অযোধ্যা, যেখানে গত ২২ জানুয়ারি সুবিশাল-সুদৃশ্য রাম মন্দিরের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেদিনই রামলালা অর্থাৎ শিশু রামের প্রাণ প্রতিষ্ঠাও করেন তিনি। হিন্দুত্ববাদীদের দাবি, বিগত সাড়ে পাঁচশো-ছ’শো বছরের ইতিহাসে হিন্দুদের এরচেয়ে বড় প্রাপ্তি আর কিছু নেই।
সেই রামমন্দিরকে হাতিয়ার করে এবারও ভোট বৈতরণী পেরিয়ে যাওয়ার বাসনা গোটা দেশেই অধরা থেকে গিয়েছে বিজেপির, এমনকী ‘রাম জন্মভূমি’-তেও। অযোধ্যা তথা ফৈজাবাদে বিজেপির হার দলের জন্য বড় ধাক্কা একান্তে মানছেন পদ্ম শিবিরের বহু নেতা।
ক’দিন আগে সেই রাম মন্দিরের প্রধান পুরোহিত আচার্য সত্যেন্দ্র দাস ‘দ্য ওয়াল’কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, স্থানীয় বিজেপি সাংসদ এবং দল রাম মন্দির তৈরির অহংকারে সাধারণ মানুষের অভাব-অভিযোগকে উপেক্ষা করেছেন। প্রধান পুরোহিতের মতে, বেকারি এবং জিনিসপত্রের অগ্নিমূল্যের জেরে ক্ষুব্ধ মানুষ বিজেপিকে শিক্ষা দিয়েছে। তাঁর কথায়, ‘ভগবান রাম কাউকে ভোটে জেতান না। তিনি সকলের মঙ্গল চান।‘
দেখা যাচ্ছে রাম মন্দিরের প্রধান পুরোহিতের কথাই অযোধ্যাবাসীর ‘মন কি বাত’ হিসাবে ধরা পড়েছে দিল্লির প্রখ্যাত সংস্থা সিএসডিএস-লোকনীতির সমীক্ষায়। ভোটের পর অযোধ্যাবাসীর মনের কথা জানতে সমীক্ষা চালায় ওই সংস্থা। সমীক্ষার ফল বলছে রামভক্তিকে ছাপিয়ে মানুষের মধ্যে কাজ করেছে বেকারি এবং জিনিসপত্রের মূল্যবৃদ্ধিজনিত যন্ত্রণা, ক্ষোভ, অসন্তোষ।
সিএসডিএস-লোকনীতির প্রশ্ন ছিল, আগের পাঁচ বছরে কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদীর সরকারের কোন কাজগুলিকে তাঁরা (অযোধ্যাবাসীরা) ভাল কাজ বলে মনে করেন। তাতে অযোধ্যার ২২.৪ শতাংশ মানুষ রাম মন্দির নির্মাণের কথা বলেছেন। চাকরি-কর্মসংস্থান এবং দারিদ্র মুক্তিতে কৃতিত্ব দিয়েছেন যথাক্রমে ৫.৬ এবং ৬.৪ শতাংশ বাসিন্দা। অর্থাৎ এই দুই ক্ষেত্রে সরকারকে সামান্যই কৃতিত্ব দিয়েছেন অযোধ্যার মানুষ।
দ্বিতীয় প্রশ্নটি করা হয়েছিল, কোন কোন ক্ষেত্রে মোদী সরকারের কাজকর্ম সবচেয়ে খারাপ ছিল বলে তাদের মনে হয়েছে। দুই ক্ষেত্রেই ২৩ শতাংশ অযোধ্যাবাসী বেকারি এবং মূল্যবৃদ্ধি রুখতে ব্যর্থতার দায় চাপিয়েছেন সরকারের উপর। অর্থাৎ অযোধ্যাতেও মানুষের নিত্যদিনের জীবনযন্ত্রণার প্রতিফলন ইভিএমে ঘটেছে। সিএসডিএস-লোকনীতি অবশ্য ভোটের আগেই জানিয়েছিল, রাম মন্দিরকে নিয়ে ভাবাবেগের তুলনায় বেকারি এবং মূল্যবৃদ্ধিই ভোটের প্রধান ইস্যু হতে চলেছে।