দ্য ওয়াল ব্যুরো, দক্ষিণ ২৪ পরগনা: উমফানে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ক্ষতিপূরণের টাকা দাবি করে এবার গ্রামবাসীরা বিক্ষোভ দেখালেন ডায়মন্ড হারবার ২ নম্বর ব্লকের রামনগর থানার নুরপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে। এলাকার ২৫ নম্বর বুথ তথা রায়চক গ্রামের তৃণমূল কংগ্রেসের পঞ্চায়েত সদস্য রিনা শিকদারের বাড়িতে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা।
এই খবর পেয়ে রামনগর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে গ্রামবাসীরা ক্ষিপ্ত হয়ে লাঠি হাতে পুলিশকে তাড়া করে। তখন পুলিশও লাঠি চালায় বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় দু’জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন গ্রামবাসীরা। তাঁদের অভিযোগ, মহিলাদের উপরেও লাঠি চার্জ করেছে পুলিশ। এলাকায় এখনও উত্তেজনা থাকায় ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে লাঠিচার্জ করা হয়নি। তবে গ্রামবাসীরা তাদের লক্ষ্য করে ইট ছুড়েছিল। এখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে।
বিক্ষোভকারী এক গ্রামবাসী বলেন, “আমার বাড়িতে গাছ পড়ে সব ভেঙে গিয়েছিল। ওরা কাগজ দেবে বলেও তা দেয়নি। বলেছিল আধার কার্ড ও ব্যাঙ্কের পাসবই দিতে। পয়সাকড়ি পাইয়ে দেবে বলেছিল।... সব টাকা পঞ্চায়েতের লোকজনের পরিবার ভাগ করে নিয়েছে। যাদের টাকা পাওয়ার নয় তারাই টাকা পেয়েছে। আমরা পাইনি। একশো দিনের কাজ করেছি পঁচাশিটা। এখনও তার পয়সা পাইনি।”
পঞ্চায়েত সদস্য রিনা শিকদার বলেন, “উমফানে যাঁদের ক্ষতি হয়েছে তাঁদের নামের তালিকা তৈরি করে আমরা বিডিও অফিসে পাঠিয়েছি। সরকারি ভাবে তাঁদের অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকবে। এরা অযথা আমাদের উপরে হামলা করছে।” তিনি জানিয়েছেন, যাঁরা আবেদন করেছিলেন তাঁদের তালিকা বিডিও অফিসে পাঠানো হয়েছে তবে অনেকে তখন আবেদনই করেননি। তা ছাড়া টাকা ধাপে ধাপে ঢুকছে।
একশো দিনের কাজ প্রসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, জব কার্ডে যাঁদের নাম রয়েছে তাঁদের কাজ দেওয়া হচ্ছে। এই কাজের সুপারভাইজার যাঁরা রয়েছেন তাঁরা মাস্টার রোল তৈরি করেন। সেগুলো বিডিও অফিসে জমা দেওয়া হয়। সেই মতো টাকা দেওয়া হয়।
উমফানের পরে রাজ্য সরকারকে এক হাজার কোটি টাকা প্রাথমিক ভাবে সাহায্য করেছিল কেন্দ্রীয় সরকার। তারপরে ক্ষতিগ্রস্তদের ২০ হাজার টাকা করে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই টাকা দেওয়া শুরু হতেই একের পর এক অভিযোগ উঠতে শুরু করে। অভিযোগ ওঠে, বহু পঞ্চায়েত প্রধান, পঞ্চায়েত সদস্য ও তাঁদদের পরিবারের লোকজন এবং তৃণমূল কংগ্রেসের নেতারা সেই টাকা পেয়েছেন। পরিস্থিতি এমন জায়গায় যায় যে নবান্ন থেকে পর্যন্ত প্রতিক্রিয়া দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপরে অনেকে টাকাও ফেরত দিতে শুরু করেন।