শেষ আপডেট: 19th June 2024 17:21
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ফাঁসিদেওয়ার ভয়াবহ রেল দুর্ঘটনায় কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের সঙ্গে ধাক্কায় মালগাড়ির দুই চালকই মারা গিয়েছিল বলে প্রথমে জানিয়েছিল রেল। ইতিমধ্যে মালগাড়ির মৃত এক চালকের বিরুদ্ধে এফআইআরও রুজু করেছে পুলিশ। পরে জানা যায়, মালগাড়ির সহ চালক গুরুতরভাবে জখম হযেছেন।
বর্তমানে শিলিগুড়ির একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন সহ চালক মনু কুমার। হাসপাতাল সূত্রের খবর, জ্ঞান ফিরলেও দুর্ঘটনার আতঙ্ক এখনও কাটিয়ে উঠতে পারেননি তিনি। শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল হলেও মানসিকভাবে
বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছেন। মাঝেমাঝে জ্ঞানও হারিয়ে ফেলছেন তিনি।
এক চিকিৎসকের কথায়, "এরকম ভয়াবহ দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে ফেরার ঘটনা বিরল। ফলে দুর্ঘটনার ঘোর এখনও কাটেনি চালকের। একটু সময় লাগবে।"
চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, কোনও কিছু জানতে চাইলে অনেকক্ষণ পর জবাব দিচ্ছেন। তবে মালগাড়ির সহ চালকের জ্ঞান
ফিরে আসায় এই রেল দুর্ঘটনা সম্পর্কে আগামীদিনে অনেক প্রশ্নের জবাব মিলবে বলেও মনে করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, ঘটনার পরই মালগাড়ির নিহত চালককে দায়ী করে রেলবোর্ডের চেয়ারপার্সন জয়া বর্মা দাবি করেছিলেন, সিগন্যাল না মেনে ট্রেন নিয়ে এগিয়ে যান মালগাড়ির চালক। তারফলেই দুর্ঘটনা।
এমনকী মৃত চালকের বিরুদ্ধে এফআইআরও রুজু করে রেল। তবে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের যে যাত্রীর অভিযোগের ভিত্তিতে রেল মালগাড়ির মৃত চালকের বিরুদ্ধে এফআইআর রুজু করেছে, সেই চৈতালী মজুমদার এমন অভিযোগের কথা শুনে আকাশ থেকে পড়েছেন। চৈতালীর কথায়, "ট্রেনের মাঝ বগিতে বসে থেকে কোনও যাত্রীর পক্ষে কী বোঝা সম্ভব, কার ভুলে দুর্ঘটনা?"
রেলের কাছে এরকম কোনও অভিযোগ দায়ের করেননি বলেও সংবাদমাধ্যমকে সাফ জানিয়েছিলেন চৈতালী। এরপর থেকেই মৃত চালককে 'ফাঁসানো'র অভিযোগ আরও জোরাল হতে শুরু করে। মালগাড়ির সহ চালকের জ্ঞান ফিরে আসায় এরকমই হাজারও প্রশ্নের উত্তর মিলবে বলে মনে করা হচ্ছে।
সোমবার ঘটে যাওয়া ভয়াবহ রেল দুর্ঘটনার দায় কার তা খতিয়ে দেখতে বুধবার থেকে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে রেল কমিশন। নেওয়া হচ্ছে একাধিক রেলকর্মীর বয়ান। অনেকের মতে, মনুর বয়ানের ভিত্তিতে সামনে আসতে পারে প্রকৃত ঘটনা। তবে তদন্ত শুরুর আগে থেকেই রেলের তরফে যেভাবে মালগাড়ির মৃত গাড়ির চালককে কাঠগড়ায় তোলা হয়েছে, তাতে মৃত চালকের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত মনুর বক্তব্য রেলওয়ে সেফটি কমিটির কাছে কতখানি গুরুত্ব পাবে তা নিয়েও সংশয় রয়েছে বিভিন্ন মহলে।