শেষ আপডেট: 17th May 2024 16:25
দ্য ওয়াল ব্যুরো: একসময় বোমা-গুলি বারুদের গন্ধে ভারী হয়ে থাকত জঙ্গলমহলের বাতাস। দিনে রাতে পড়ত লাশ। অবরুদ্ধ হয়ে গিয়েছিল লালগড়-সহ সমগ্র জঙ্গলমহল। পালা বদলের বাংলায় সেই জঙ্গলমহলে শান্তি ফিরেছে।
শুক্রবার ঝাড়গ্রামের গোপীবল্লভপুরের গজাশিমূল ময়দানে তৃণমূল প্রার্থী কালীপদ সরেনের সমর্থনে নির্বাচনী সভা থেকে সেই প্রসঙ্গ টেনে এনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "একসময যারা সিপিএমের হার্মাদ ছিল, তারাই এখন বিজেপি। জঙ্গলমহলে ওদের ঢুকতে দেবেন না। ওরা এলে আবার মা-বোনেদের কাঁদাবে। আবার গুলি ছুটবে। সব কিছু অশান্ত করে দেবে।"
মনে করিয়েছেন, "মনে আছে জঙ্গলমহলের গল্প, পিঁপড়ের ঝোল খেয়ে মানুষ বেঁচে থাকত। আমি গিয়েছিলাম বেলপাহাড়ির জো গ্রামে। লুকিয়ে একটা স্কুটারে করে গিয়ে দেখেছিলাম, মানুষ কত কষ্টে জীবন নির্বাহ করেন।"
মুখ্য়মন্ত্রী এও বলেন, "যতদিন আমি রয়েছি ততদিন আদিবাসীদের কোনও অধিকার কেড়ে নিতে দেব না। জঙ্গলমহলের শান্তিও কাউকে নষ্ট করতে দেব না।"
কীভাবে, কার হাত ধরে তাঁর জঙ্গল মহলে প্রবেশ এদিন সেকথাও জানান তৃণমূল নেত্রী।
মমতা বলেন, "সেটা ২০০৮ সাল। বাম জমানা। তখন ভয়ে কেউ জঙ্গলমহলে আসত না, তখন কিন্তু আমি এসেছি। ছত্রধর মাহাতোর হাত ধরে আমি প্রথম জঙ্গলমহলে ঢুকছিলাম। পিড়াকাটা, ভাদুতলায় আমাকে বহুবার আটকানো হয়েছে। তবু আমি থামিনি।"
দেড় দশক আগের প্রসঙ্গ টেনে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "লালগড়ে ছিতামনি মুর্মুর কান কেটে দেওয়া হয়েছিল। সেই সময় গুলিতে তিনজন মারা গিয়েছিল। তখন থেকেই আমার জঙ্গলমহলে আসা।"
কৈফিয়তের সুরে মমতা এও বলেন, "তাই অন্য অনেকের থেকে জঙ্গলমহল আমি অনেক ভাল বুঝি। তাই সরকার গড়ার পর প্রথম মিটিংটাও এই জঙ্গলমহলে করেছিলাম। ওই মঞ্চ থেকেই মাওবাদীদের অস্ত্র ছেড়ে সমাজের মূলস্রোতে ফেরার আহ্বান জানিয়েছিলাম।"
ঝাড়গ্রামে এবারে যিনি বিজেপির প্রার্থী হয়েছেন তিনি পেশায় সরকারি চিকিৎসক। চাইলে প্রশাসনিক ক্ষমতা বলে তাঁর ছাড়পত্র আটকে দিতে পারতেন, একথা জানিয়ে মমতা বলেন, "সেটা করিনি। কারণ, যার বেশি লোভ সে টাকা করে আসুক।"
এরপরই জঙ্গলমহলের মানুষের উদ্দেশে প্রশ্ন ছুড়েছেন, "এলাকায় ডাক্তার নেই। উনি ভোটে লড়লে ডাক্তারি কে করবে? মানুষ পরিষেবা কোথায় পাবেন?’’