শেষ আপডেট: 3rd June 2024 19:31
দ্য ওয়াল ব্যুরো: প্রণত টুডুকে অন্তর্বর্তীকালীন রক্ষাকবচ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। ঝাড়গ্রামের বিজেপি প্রার্থীর বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া এফআইআরের ওপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিয়েছেন বিচারপতি অমৃতা সিনহা। আগামী ২৫ জুন পর্যন্ত গেরুয়া শিবিরের প্রার্থীর বিরুদ্ধে পুলিশি পদক্ষেপ নেওয়া যাবে না, এমনই নির্দেশ দিয়েছে উচ্চ আদালত। একইসঙ্গে বসিরহাটের বিজেপি প্রার্থী রেখা পাত্রের বিরুদ্ধে পুলিশের করা এফআইআরেও স্থগিতাদেশ দিয়েছেন বিচারপতি।
ষষ্ঠ দফার নির্বাচন চলাকালীন গড়বেতার মংলাপাতা এলাকায় আক্রান্ত হন প্রণত টুডু। তাঁর গাড়ি ভাঙচুর করা হয় বলেও অভিযোগ। এছাড়া প্রার্থীর নিরাপত্তায় থাকা জওয়ানও আক্রান্ত হন। এই ঘটনার পর প্রার্থীর বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু হয়। মিথ্যা অভিযোগে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন প্রণত টুডু। এই প্রেক্ষিতেই অবিলম্বে এফআইআর খারিজ করার আবেদন জানিয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন ঝাড়গ্রামের বিজেপি প্রার্থী।
মঙ্গলবার ছিল সংশ্লিষ্ট মামলার শুনানি। যেখানে বিচারপতি সিনহা নির্দেশ দেন, এখনই পুলিশ বিজেপি প্রার্থীর বিরুদ্ধে কোন কড়া আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারবে না। একইসঙ্গে গড়বেতা প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে রাখতে হবে। মামলার কেস ডায়েরি নিয়মিত আদালতে জমা দিতে হবে।
এদিকে হাইকোর্টের নির্দেশের পর তৃণমূল সরকারকে বিঁধে কড়া আক্রমণ করেন শুভেন্দু অধিকারী। এক্স হ্যান্ডেলে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা লেখেন, "তৃণমূল কংগ্রেসের অধীনস্থ পশ্চিমবঙ্গ সরকার হাইকোর্টের থেকে থাপ্পড় খেতে চ্যাম্পিয়ন হয়ে উঠেছে। আজ তাঁরা প্রণত টুডু, রেখা পাত্র এবং তমলুকের বিজেপির গণনার এজেন্টকে মিথ্যে মামলায় ফাঁসানোয় হাইকোর্টের থেকে থাপ্পড় খাওয়ার হ্যাট্রিক করেছে। 'পুলিশি অতিসক্রিয়তা'-র কারণে তিনজনের বিরুদ্ধে মিথ্যে মামলা করা হয়েছিল।"
The West Bengal Government under the TMC regime is becoming quite a champion in getting slaps from the Hon’ble Courts. Today they made a hat-trick of getting slapped from the Hon’ble High Court at Calcutta when their evil attempts to harass and implicate Dr. Pranat Tudu (BJP…
— Suvendu Adhikari (Modi Ka Parivar) (@SuvenduWB) June 3, 2024
ঘটনার পর স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসা করানোর পরে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানান প্রার্থী। এপ্রসঙ্গে মামলার শুনানিতে প্রণত টুডুর আইনজীবী বিল্লদল ভট্টাচার্য্য বলেন, "গড়বেতায় পুলিশের পক্ষ থেকে একটি সাদা মাটা কেস করা হয়েছে। অথচ প্রার্থীর বিরুদ্ধে পুলিশ জামিন অযোগ্য ধারায় এফআই আর দায়ের করে ৪১এ, নোটিশ পাঠিয়েছে। তদন্তের স্বার্থে প্রণত টুডুকে দ্রুত পুলিশের সঙ্গে দেখা করতে বলা হয়েছে।"
একইসঙ্গে মামলাকারীর আইনজীবী আরও অভিযোগ করেন, আগামীকাল গণনায় যাতে কোনও ভাবেই বিজেপি প্রার্থী অংশ গ্রহণ করতে না পারেন সেই কারণেই এই চক্রান্ত করা হয়েছে। অন্যদিকে, সরকার পক্ষের আইনজীবী স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, "তদন্ত প্রাথমিক পর্যায় রয়েছে। সেখানে বিজেপির প্রচুর কর্মী সমর্থকরা উপস্থিত ছিল।"
দুপক্ষের সওয়াল জবাবের পর বিচারপতি বলেন, "যিনি আক্রান্ত হয়েছেন অর্থাৎ বিজেপি প্রার্থীর অভিযোগের ভিত্তিতে এফআইআর করলেন না, উল্টে কেন্দ্রীয় নিরাপত্তারক্ষীর অভিযোগের ভিত্তিতে এফআইআর করলেন।" প্রার্থীর অভিযোগের ভিত্তিতে কেন কোনও তদন্ত করা হল না? সেই প্রশ্ন করেন বিচারপতি অমৃতা সিনহার। আগামী ১৮ই জুন মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে।
অন্যদিকে, সন্দেশখালির বিজেপি প্রার্থী রেখা পাত্রের বিরুদ্ধে ৩টি এফআইআর দায়ের হয়েছে। গত ১ জুন সপ্তম দফার ভোটের দিনও রেখা পাত্রর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছে পুলিশ। পুলিশের পক্ষ থেকে আদালতে জানানো হয়, রেখা পাত্রের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ রয়েছে। তাই স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট মামলাতেও বিজেপি প্রার্থীর এফআইআরে আগামী ৫ জুলাই পর্যন্ত অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।