আজ হায়দরাবাদ ও গুয়াহাটি, দুই শহরে ঠিক হবে, শেষ অবধি আমদাবাদে কলকাতার সঙ্গে প্রথম কোয়ালিফায়ারে কারা খেলবে।
শেষ আপডেট: 19th May 2024 14:10
দ্য ওয়াল ব্যুরো: অ্যাডমিশন শেষ। সইসাবুদ, কাগজপত্র তৈরি সবকিছুর পালা চুকে গিয়েছে। এখন শুধু ক্লাসে রোল নম্বর দেওয়ার পালা। গতকাল চেন্নাই সুপার কিংসের বিরুদ্ধে নাটকীয় জয় ছিনিয়ে নেট রানরেটের বিচারে শেষ চারে চলে গিয়েছে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু। অতএব চারটে দল প্লে-অফের জন্য নিশ্চিত। সবার ওপরে কলকাতা নাইট রাইডার্স, তারপর রাজস্থান রয়্যালস, সানরাইজার্স হায়দরাবাদ ও বেঙ্গালুরু। কিন্তু এরপরেই আসছে প্লে-অফের অঙ্ক। আজ, রোববারের দুপুর ও সন্ধ্যে মিলিয়ে দুই ম্যাচের স্কোরের ওপর শেষ অবধি নির্ভর করবে, ক্লাসে এক, দুই, তিন রোল নম্বর কার কার হবে।
পয়েন্টস টেবিলের বিচারে, এই মুহূর্তে কলকাতা নাইট রাইডার্স রয়েছে ধরাছোঁয়ার বাইরে। তাদের ১৯ পয়েন্টের থেকে তিন ধাপ দূরে রয়েছে দ্বিতীয় স্থানে থাকা রাজস্থান রয়্যালস, তাদের পয়েন্ট ১৬। মাত্র এক পয়েন্ট কম পেয়ে তৃতীয় স্থানে রয়েছে হায়দরাবাদ। তার চেয়েও এক পয়েন্ট কম নিয়ে, ১৪ পয়েন্ট-সহ চার নম্বর সিট দখল করেছে বিরাটদের বেঙ্গালুরু। এদের মধ্যে আজ গুয়াহাটিতে রাজস্থান রয়্যালস খেলবে কলকাতা নাইট রাইডার্সের বিরুদ্ধে, ওদিকে হায়দরাবাদে ট্র্যাভিস হেড-অভিষেক শর্মা-প্যাট কামিন্সরা খেলবেন পাঞ্জাব কিংসের বিরুদ্ধে।
যথারীতি, এইবার চলে আসছে অঙ্কের হিসেব। পাঞ্জাবকে বাদ রাখা যাক, তারা নেহাত নিয়মরক্ষার ম্যাচে নামছে। কিন্তু বাকি তিন দলের মধ্যে রাজস্থান ও হায়দরাবাদের মধ্যে ঠিক হবে, কে দুই নম্বরে থাকবে। দেখে নেওয়া যাক সম্ভাব্য তিনটি ছবিঃ
১) যদি রাজস্থান ও হায়দরাবাদ দুই দলই আজ জিতে যায়
পয়েন্ট টেবিলের বিচারে, তাহলে রাজস্থান যাবে ১৮ পয়েন্টে, হায়দরাবাদ ১৭। অতএব সোজা হিসেবে দুয়ে চলে যাবে রাজস্থান। কলকাতা তিন পয়েন্ট এগিয়ে আছে মানে, হারুক বা জিতুক, তারা এক নম্বরেই থাকবে। অতএব তাহলে গুয়াহাটি থেকে রাজস্থান রয়্যালস ও কলকাতা নাইট রাইডার্স দুই দলই হাতে হাত মিলিয়ে আমদাবাদের বিমানে উঠে পড়বেন। ২১ মে, মঙ্গলবার নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে দুই দল প্রথম কোয়ালিফায়ার খেলবে। যে জিতবে, সে সরাসরি ফাইনালে চলে যাবে। যে হারবে, তার কাছে তার পরেও একটা সুযোগ থাকবে।
২) যদি রাজস্থান জেতে ও হায়দরাবাদ হারে
আগের ছবিতে কোনও পরিবর্তন হবে না। হায়দরাবাদ আরসিবির থেকে এক পয়েন্টে এগিয়ে, ফলে তারা তিন নম্বরেই থাকবে।
৩) যদি রাজস্থান হারে ও হায়দরাবাদ জেতে
এটা হলে অঙ্ক সম্পূর্ণ বদলে যাবে। রাজস্থান হারলে তারা থাকবে ১৬-তে। কিন্তু হায়দরাবাদ আজ জিতলে তারা পৌঁছবে ১৭ পয়েন্টে। অতএব তারা চলে যাবে দুই নম্বরে। সেক্ষেত্রে আমদাবাদে কলকাতার নারাইন-রাসেল-রিঙ্কুর সঙ্গে সরাসরি শক্তির পরীক্ষায় নামবেন ট্র্যাভিস হেড, অভিষেক, ক্লাসেনরা। পরেরদিন ২২ মে, ওই একই মাঠে বেঙ্গালুরুর মহড়া নেবেন সঞ্জু স্যামসন, রিয়ান পরাগরা। সেই ম্যাচে যে হারবে, সে সরাসরি বিদায় নেবে। কিন্তু যে জিতবে, ২৪ মে চেন্নাইয়ের চিপকে তাকে খেলতে হবে কলকাতা-হায়দরাবাদ ম্যাচের পরাজিত দলের সঙ্গে।
৪) যদি রাজস্থান ও হায়দরাবাদ দুই দলই হেরে যায়
তাহলেও এক নম্বরের ছবিটাই থাকবে। দুই দলের পয়েন্ট বা র্যাঙ্কের কোনও বদল হবে না।
৫) যদি বৃষ্টিতে দুই ম্যাচ বাতিল হয়ে যায়।
ঘটনাচক্রে, আজ গুয়াহাটি ও হায়দরাবাদ, দুই শহরেই হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। যদি বৃষ্টিতে দুই ম্যাচই ভেস্তে যায়, তাহলে এক নম্বরের ছবিটাই থাকবে।
৬) যদি রাজস্থান হারে এবং হায়দরাবাদ ম্যাচ বৃষ্টিতে ভেস্তে যায়
তাহলে তিন নম্বরের ছবিটা থাকবে। কারণ বৃষ্টিতে ম্যাচ ভেস্তে গেলে হায়দরাবাদ ও পাঞ্জাব দুই দলই এক পয়েন্ট করে পাবে। এদিকে রাজস্থান হারলে তখন হায়দরাবাদ ও রাজস্থানের পয়েন্ট সমান হবে। এইবার আসরে নামবে নেট রানরেটের অঙ্ক। যাতে পর পর চার ম্যাচ হারা রাজস্থান বিধ্বংসী হায়দরাবাদের চাইতে বেশ পিছিয়ে আছে। ওই বিচারে দুয়ে চলে যাবে হায়দরাবাদ।
আজ সব মিলিয়ে দুই ম্যাচ ঘিরেই টানটান উত্তেজনা আইপিএলে। বিশেষ করে সঞ্জু স্যামসনদের ওপর চাপটা কিঞ্চিৎ হলেও বেশি। আরসিবির উল্টো গল্প তাঁদের। চার ম্যাচ আগেও সঞ্জু স্যামসনদের সবচেয়ে স্থিতধী, অপ্রতিরোধ্য দেখাচ্ছিল। টানা নয় ম্যাচের আটটায় জিতেছিলেন সঞ্জু, যশস্বী জয়সওয়ালরা। কিন্তু হায়দরাবাদের কাছে বেমক্কা হারের পর হঠাৎ করেই ধস নেমেছে দলে। পর পর চার ম্যাচে হার। সঙ্গে তারকা ওপেনার জস বাটলার ফিরে গিয়েছেন দেশে। ওপেনে যশস্বীর সঙ্গে টম কোলার ক্যাডমোরকে নামাচ্ছেন কোচ কুমার সঙ্গাকারা। তাঁরা টসকালে সঞ্জু, রিয়ান, ধ্রুব জুড়েলদের ওপর পুরো দায়িত্ব বর্তাচ্ছে। উল্টোদিকে কেকেআরের নির্ভরযোগ্য তারকা ওপেনার ফিল সল্টও বাটলারের পথ ধরে লন্ডনের বিমান ধরেছেন। তাঁর জায়গায় রহমানুল্লাহ গুরবাজ খেলবেন আজ। বহুদিন ম্যাচের মধ্যে না থাকা গুরবাজ শুরুতেই কী করবেন সেই নিয়ে নাইট শিবিরও ধন্দে আছে। তবে তিন পয়েন্টের ব্যবধানের সুবাদে অনেকটাই ফুরফুরে কেকেআর শিবির।