শেষ আপডেট: 28th March 2024 16:11
দ্য ওয়াল ব্যুরো: সেদিন গোটা গ্রামে আনন্দের বন্যা বয়ে গিয়েছিল, যখন প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনায় ৩৮ কিলোমিটার রাস্তা তৈরির কাজের সুচূনা করেছিলেন উত্তরাখণ্ডের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বিসি খাণ্ডুরি। সরকারের তরফে জানানো হয়েছিল বছর দুয়েকের মধ্যে কাজ শেষ হবে।
ফলে শুধু গ্রামবাসীরাই নন, সরকারি কর্মচারী, আশপাশের গ্রাম, মফস্বলের মানুষও স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছিলেন। মুখে হাসি ফুটেছিল চামোলির ভোট কর্মীদেরও। কারণ, রাস্তাটি হয়ে গেলে ভোটের সময় তাঁদের আর কষ্ট করে গাড়োয়াল হিমালয়ের চিন সীমান্ত লাগোয়া গ্রামগুলিকে পৌঁছাতে হবে না।
তারপর ১৭ বছর কেটে গিয়েছে। এতদিনে অর্ধেক রাস্তা হয়েছে কোনওরকমে। বাকি রাস্তা কবে হবে, কেউ জানে না। অন্তত সরকারের পক্ষে আশ্বাস দেওয়ার কেউ নেই। এবার তাই কঠোর সিদ্ধান্ত নিলেন গ্রামবাসীরা। চোমোলি জেলার চিন সীমান্ত লাগোয়া গ্রাম দুমকের আড়াই হাজার ভোটার এবার ভোট বয়কটের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ছয় হাজার ফুট উপরে অবস্থিত ওই গ্রামে ২০২২-এর বিধানসভা নির্বাচনের সময় যেতে বেঁকে বসেছিলেন ভোট কর্মীরা। তড়িঘড়ি সেই গ্রামে ছুটে গিয়েছিলেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমার। তিনি তখনও যদিও প্রধান নির্বাচন কমিশনার হননি। গিয়েছিলেন কমিশনার হিসাবে। পর্বতারোহণ তাঁর নেশা। তাই ভোটকর্মীদের উৎসাহ দিতে নিজেই কমিশন থেকে কয়েকদিনের ছুটি নিয়ে পৌঁছে গিয়েছিলেন দুমকে। ফেরার পথে চামোলি জেলার সদরে গিয়ে ভোটকর্মীদের আশ্বাস দিয়েছিলেন দুমকে ভোট গ্রহণ করতে যাওয়া কর্মীদের ভাতা দ্বিগুণ করা হবে।
আসলে, রাস্তা না থাকায় ভোট কর্মীদেরও ওই গ্রামে পৌঁছাতে কষ্ট হয়, গ্রামবাসীরা যা সারা বছর ভোগ করেন। তারা এবার জানিয়ে দিয়েছেন, ভোট কর্মীদের কষ্ট করে আসার দরকার নেই। স্লোগান দিয়েছেন, ‘নো রোড-নো ভোট’।
দুমকের গ্রাম প্রধান প্রেম সানওয়ালের বক্তব্য, ‘আমরা নিরুপায়। বার বার বলা সত্ত্বেও রাস্তার কাজ শেষ করার ব্যাপারে কারও কোনও মাথাব্যথা নেই। তাই সর্বসম্মতভাবে ভোট বয়কটের সিদ্ধান্ত হয়েছে।’
এদিকে, পদস্থ কর্তারা এই ব্যাপারে মুখ না খুললেও প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনার এলাকার দায়িত্বপ্রাপ্ত ইঞ্জিনিয়ার পিআর চামোলা জানিয়েছেন, ‘ভূমিক্ষয়ের ফলে রাস্তার পরিকল্পনা বদলাতে হচ্ছে। সেই কারণে বিলম্ব হচ্ছে।’ তবে তিনিও জানাতে পারেননি কাজ কবে শেষ হবে। অপেক্ষার অবসান হবে কবে।