শেষ আপডেট: 9th July 2024 15:31
দ্য ওয়াল ব্যুরো: হাথরাসের পদপিষ্টের ঘটনায় রাজ্য পুলিশের বিশেষ তদন্তকারী দল রিপোর্ট দিয়ে বলেছে, অতিরিক্ত ভিড়ের কারণেই এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে। তবে পারিপার্শ্বিক একাধিক কারণও ছিল। তার মধ্যে প্রধান, গাফিলতি। সেই রিপোর্টের প্রেক্ষিতেই জেলার ৬ জন সরকারি আধিকারিককে সাসপেন্ড করা হয়েছে। পুলিশ তাদের রিপোর্টে এও উল্লেখ করেছে, অনুষ্ঠানের আয়োজকরা ভিড়ের বিষয়টিকে গুরুত্বই দেয়নি।
স্বঘোষিত ধর্মগুরু 'ভোলে বাবা'র সৎসঙ্গ অনুষ্ঠানে ৮০,০০০ মানুষের ভিড় হওয়ার অনুমান করা হয়েছিল। কিন্তু পরে সেই সংখ্যা ২ লক্ষ ছাড়িয়ে প্রায় আড়াই লক্ষের কাছে চলে যায়। ফলে পদপিষ্টের ঘটনা ঘটে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের নির্দেশে পুলিশের বিশেষ টিম এই ঘটনার নেপথ্যের কারণ খতিয়ে দেখতে তদন্ত করছে। তারা যে রিপোর্ট দিয়েছে তার ভিত্তিতেই ৬ সরকারি আধিকারিক সাসপেন্ড হয়েছেন।
এই ৬ জন আধিকারিকের মধ্যে রয়েছেন সাব ডিভিশনাল ম্যাজিস্ট্রেট যিনি ভোলে বাবার প্রার্থনা সভার অনুমতি দিয়েছিলেন। তাঁর সঙ্গে আছেন জেলার এসডিএম যিনি না অনুষ্ঠানস্থল পরিদর্শন করেছিলেন না সিনিয়র আধিকারিকদের ঘটনা সম্পর্কে কিছু জানিয়েছিলেন। অনুষ্ঠানের আয়োজকদের বিরুদ্ধেও বড় অভিযোগ করা হয়েছে। পুলিশি রিপোর্ট বলছে, অতিরিক্ত ভিড় হলে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে আন্দাজ করেও তারা কেউ বিষয়টিকে গুরুত্ব দেয়নি। সেই কারণে পর্যাপ্ত সুরক্ষার ব্যবস্থাও ছিল না।
পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে, অনুষ্ঠানে ঢোকা এবং বেরনোর জন্য মাত্র ২টি দরজার ব্যবস্থা ছিল। আর ভিড় নিয়ন্ত্রণে মাত্র ৭০ জন পুলিশ! প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে, যেখানে এই ধর্মীয় অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল, সেখানে অতি বেশি সংখ্যক মানুষ ডুকে পড়েছিলেন এবং ভিড় সামলানোর জন্য আয়োজকদের তরফে বিশেষ কোনও ব্যবস্থা রাখা হয়নি। অনুষ্ঠানস্থলে প্রবেশের বা বেরানোর পথটিও ছিল অত্যন্ত সঙ্কীর্ণ।
বিশেষ এই তদন্তকারী দল দুর্ঘটনার দিন অনুষ্ঠানের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশের সদস্যদের সঙ্গে এবং ১৩০ জন প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলেছিল। তারপরই এই রিপোর্ট জমা দেওয়া হয়েছে। হাথরাসের ঘটনার জল গড়িয়েছে সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত। অবসরপ্রাপ্ত এক বিচারপতির নেতৃত্বে এই ঘটনা তদন্ত হোক এই দাবি তুলে মামলা দায়ের হয়েছে শীর্ষ আদালতে।
সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় এই মামলার অনুমতি দিয়েছেন। আগামী শুক্রবার এই মামলার শুনানি হতে পারে। সুপ্রিম কোর্টেরই এক আইনজীবী এই মামলা রুজু করেছেন। তিনি চান, পাঁচ সদস্যের এক্সপার্ট কমিটি গঠন করে এই পদপিষ্টের ঘটনার তদন্ত হোক।
এদিকে সেই স্বঘোষিত ধর্মগুরু 'ভোলে বাবা'র আইনজীবীর দাবি, তাঁর মক্কেলের অনুষ্ঠানকে বদনাম করতে ষড়যন্ত্র করা হয়েছে! ১০-১২ জন দুষ্কৃতী ভিড়ের মধ্যে বিষাক্ত স্প্রে ছড়িয়ে দিয়েছিল। আর সেই কারণেই ঘটে বিপর্যয়। দুর্ঘটনার পর থেকে 'ভোলে বাবা' অবশ্য 'নিখোঁজ'। যদিও ইতিমধ্যে তিনি ভিডিও বার্তা দিয়ে হাথরাসের ঘটনার জন্য দুঃখপ্রকাশ করেছেন। পুলিশের সঙ্গে তিনি সবরকম সহযোগিতা করবেন বলেও জানিয়েছেন। তাঁর বিরুদ্ধে পাটনা আদালতে একটি মামলা রুজু হয়েছে।