শেষ আপডেট: 30th April 2024 11:39
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ভারতের রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালিসিস উইং (র)-এর অফিসার বিক্রম যাদবই আমেরিকার মাটিতে খালিস্তানি জঙ্গি গুরপতবন্ত সিং পান্নুনকে হত্যার ব্যর্থ ষড়যন্ত্রে জড়িত বলে দাবি করল মার্কিন দৈনিক ওয়াশিংটন পোস্ট। এই নিয়ে ওয়াশিংটন পোস্টের রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, বিক্রম যাদব নামের এক ‘র’ (RAW) অফিসার পান্নুন খুনের ছক কষেছিলেন। এর জন্য ‘হিটম্যান’ বা দুষ্কৃতীদের একটি দলকে ভাড়াও করা হয়েছিল। যদিও সব চেষ্টাই ব্যর্থ হয়।
ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওই ‘র’ অফিসার বিক্রম যাদব বর্তমানে অন্য সরকারি সংস্থায় কর্মরত, তিনি পান্নুন সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পাঠিয়েছিলেন। তার মধ্যে পান্নুনের নিউ ইয়র্কের ঠিকানাও ছিল। যদিও চাঞ্চল্যকর এই তথ্যকে মান্যতা দেয়নি ভারতের বিদেশ মন্ত্রক, সেকথাও উল্লেখ করেছে মার্কিন মিডিয়া।
ওয়াশিংটন পোস্টের দাবির পরে মঙ্গলবার ভারতীয় বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেছেন, "ওযাশিংটন পোস্টের দাবি অযৌক্তিক, ভিত্তিহীন । সম্পূর্ণ অনুমানের উপর ভিত্তি করে এমন রিপোর্ট লেখা হয়েছে। দায়িত্বজ্ঞানহীন বক্তব্য মার্কিন দৈনিকের।"
ওয়াশিংটন পোস্ট আরও দাবি করেছে, ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালও বিষয়টি জানতেন। বিদেশের মাটিতে ভারতবিরোধী জঙ্গিদের হত্যা করার পরিকল্পনাই গত কয়েক বছর ধরে করে আসছে ভারতীয় গুপ্তচর সংস্থা র। খলিস্তানি জঙ্গি নেতা ডি এস পান্নুনের গতিবিধি বহুদিন থেকেই নজরে রাখা হচ্ছিল। এমনকী নিউ ইয়র্কে তাঁর ঠিকানাতেও নজর রাখছিল ভারতীয় গোয়েন্দারা। রিপোর্টে দাবি, র-এর তৎকালীন প্রধান সমন্ত গোয়েল এই হত্যার সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেছিলেন, এবং বিক্রম যাদব নামে এক ‘র’ অফিসার গোটা পরিকল্পনার নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন। তিনিই একটি ঘাতক দল ভাড়া করে পান্নুনের উপর নজর রাখার নির্দেশ দিয়েছিলেন। যদিও মার্কিন দৈনিকের এই রিপোর্ট নিয়ে অজিত ডোভাল, বা গোয়েল অথবা বিদেশ মন্ত্রকের তরফে সোমবার রাত অবধি কোনও বিবৃতি পাওয়া যায়নি।
গত বছর একটি মার্কিন রিপোর্টে বলা হয়েছিল, আমেরিকার মাটিতে এক শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদীকে হত্যার ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের অনুমান, নাম না করে রিপোর্টে গুরপতবন্ত সিং পান্নুনের কথাই তুলে ধরা হয়েছিল। ওই রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসার পরেই ভারতের কাছে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল আমেরিকা। এই ঘটনা নিয়ে ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক যাতে ধাক্কা না খায়, সে জন্য আমেরিকার আদালতে এই ঘটনাকে ‘ষড়যন্ত্রী সিসি-ওয়ান’ বলে বর্ণনা করা হয়েছিল, কোথাও ভারতীয় গুপ্তচর সংস্থার নাম নেওয়া হয়নি।
ওদিকে পান্নুন নিয়ে মার্কিন দৈনিকের চাঞ্চল্যকর পোস্টের মাঝেই গতকাল টরন্টোয় খালসা দিবসের অনুষ্ঠানে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর উপস্থিতিতে খলিস্তানি স্লোগান ওঠে। সেই নিয়ে কানাডার ডেপুটি হাই কমিশনারকে তলবও করেছে নয়াদিল্লি। ভারতে খলিস্তানি জঙ্গি ঘোষিত হরদীপ সিং নিজ্জর খুনের পর থেকে ভারত-কানাডার সম্পর্কের অবনতি ঘটে। এমনকী প্রধানমন্ত্রী খোদ পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে কানাডার বুকে ভারতের ঘাতক ঢুকে খুন করা অভিযোগ তুলেছিলেন। ভারত অবশ্য এই অভিযোগকে অবাস্তব এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে উড়িয়ে দিয়েছিল।