গুলমার্গের মন্দির পুড়ে ছাই
শেষ আপডেট: 5th June 2024 17:42
দ্য ওয়াল ব্যুরো: সাতের দশকের গোড়ায় মুক্তি পেয়েছিল রাজেশ খান্না-মুমতাজ অভিনীত ছবি ‘আপ কি কসম’। হিট ছবি বলা যায় না, সে ছবির কাহিনিও হয়তো অনেকেরই মনে নেই। কিন্তু সে ছবিতে রাহুল দেব বর্মনের সুরে, কিশোর কুমার ও লতা মঙ্গেশকরের গাওয়া একটি গান আজও চিরসবুজ। তা হল, 'জয় জয় শিব শঙ্কর'। কাশ্মীরের গুলমার্গের এক শিব মন্দিরের সামনে শ্যুট করা হয়েছিল গানটি। সেই ঐতিহাসিক শিব মন্দির পুড়ে ছাই হয়ে গেল।
জম্মু-কাশ্মীরের গুলমার্গের ১০৬ বছরের পুরনো এই প্রাচীন শিব মন্দির 'রানি কা মন্দির' বা 'মোহিনীশ্বর শিবালয়' নামেও পরিচিত। এই মন্দিরেরই ঝলক দেখা গিয়েছিল সিলভার স্ক্রিনে। আজ, বুধবার সেই মন্দিরই আগুনে পুড়ে ছারখার হয়ে গেল। সেই অগ্নিকাণ্ডের ছবি ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।
ট্যুরিস্টদের ভিড়ে কাশ্মীর প্রায় সারা বছরই মেতে থাকে। তাঁদের মধ্যে গুলমার্গ ঘুরে দেখেন না, এমন মানুষ কমই আছেন। আর সেই ঘুরে দেখার মধ্যেই একটি জায়গা ছিল এই শিব মন্দির। কারণ সিনেমায় দেখা কোনও জায়গা স্বচক্ষে দেখার আনন্দ সকলেই উপভোগ করতে চান। তাই গুলমার্গের এই মন্দির একটি অন্যতম দর্শনীয় স্থান হয়ে ওঠে গত কয়েক দশক ধরেই। ২০২১ সালে ভারতীয় সেনাবাহিনী ও স্থানীয়দের উদ্যোগে এই শিব মন্দিরটির সংস্কারও করা হয়েছিল।
১৯১৫ সালে মহারাজা হরি সিংয়ের স্ত্রী রানি মোহিনী বাই সিসোদিয়া তৈরি করেছিলেন এই মন্দিরটি। সেই কারণেই স্থানীয়দের কাছে এই মন্দির 'রানি কা মন্দির' বলে পরিচিত। মোহিনীশ্বর শিবালয় নামও সেই কারণেই দেওয়া হয়েছে। ধর্মার্থ ট্রাস্ট ও রাজপরিবার এই মন্দিরের দেখভাল করত। শিবালয়ে পুজোর দায়িত্বে ছিলেন, একজন মুসলিম। অনেকেই বলেন ভিন্ন ধর্মের সহাবস্থানে এই মন্দির এক দৃষ্টান্ত।
মন্দিরের মুসলিম তত্ত্বাবধায়ক গুলাম মোহাম্মদ শেখ জানান, কাশ্মীরের ঐতিহ্য এবং বহুত্ববাদী সংস্কৃতির প্রমাণ ছিল এই মন্দির। এদিন দুর্ঘটনার পরে তিনি বলেন, "গত কয়েক বছর ধরেই গুলমার্গে অবৈধ নির্মাণ বেড়েছে, মন্দিরের আশেপাশে কয়েকটি রেস্তোরাঁও তৈরি হয়েছে। শিবালয়কে রক্ষা কররার দায় কেবল আমার একার বা ট্রাস্টের নয়, সমস্ত কাশ্মীরবাসীরই।"