শেষ আপডেট: 9th January 2024 11:15
দ্য ওয়াল ব্যুরো: বরফের রানি গুলমার্গ। এই নামেই ডাকেন কাশ্মীরের স্থানীয়রা। ভূস্বর্গ বললেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে ধবধবে সাদা বরফে ঢাকা পাহাড়, উপত্যকা। পাইন গাছের মাথা থেকে টুপটাপ খসে পড়ছে ঝুরো বরফ। শীতে তুষারপাত এবং বরফে ঢাকা ভূস্বর্গকে দেখতে দেশ, বিদেশের বহু পর্যটক ভিড় করেন কাশ্মীরে। শীতকালে বেশিরভাগ মানুষ উত্তর কাশ্মীরের গুলমার্গকে বেছে নেন পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে। গুলমার্গ শীতের হট স্পট। কিন্তু এই সময়ই জম্মু কাশ্মীরে তুষারপাতের দেখা নেই। শীতের বৃষ্টিও থমকে গেছে। বরফশূন্য গুলমার্গ দেখে হতবাক কাশ্মীরবাসী।
আবহাওয়া দফতর জানাচ্ছে ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত আবহাওয়ার যে বড় একটা পরিবর্তন হবে তেমনটাও নয়। তাহলে কী হল? শীতকালে তুষারপাত কি উধাও হয়ে গেল?
কাশ্মীরে এই সময় চিল্লাই কালান চলে। হাড়হিম ঠান্ডায় ঝুরো বরফে ঢাকে উপত্যকা। ৩০ জানুয়ারি অবধি চলে চিল্লাই কালান। প্রকৃতি যেন পরম স্নেহে সাদা বরফের চাদরে উপত্যকাকে মুড়ে দেয়। এ বছরই তার ব্যতিক্রম দেখা গেছে। কাশ্মীরের আবহাওয়া দফতরের ডিরেক্টর মুখতার আহমেদ বলছেন, শীতের এই সময়টাতে বৃষ্টি হয় কাশ্মীরে। তারপরেই তাপমাত্রা হিমাঙ্কের নীচে নামতে থাকে। শুরু হয় চিল্লাই কালান। তুষারপাত দেখতে বহু পর্যটকের ভিড় হয় এই সময়। গুলমার্গ, সোনমার্গ বরফে ঢেকে যায়। কিন্তু এ বছর বরফের দেখা নেই। জলবায়ুর বদলে সব ওলটপালট হয়ে গেছে। কাশ্মীরের যত পুকুর, দিঘি, পাতকুয়ো, জলাশয়, ঝিল, খাল, বিল রয়েছে, সর্বত্র জলস্তর হুহু করে কমছে। এভাবে চারধারের জলাশয়গুলির জল কমে যাওয়া চিন্তার কারণ হয়ে উঠছে।
আবহাওয়াবিদরা বলছেন, প্রশান্ত মহাসাগরে উষ্ণ জলস্রোত এল নিনোর কারণেই ঋতুচক্রে বদল হয়েছে। এর প্রভাব পড়েছে কাশ্মীরের আবহাওয়ায়। শীতের বৃষ্টি আটকে গেছে। তুষারপাতের দেখা নেই। আবহাওয়াবিজ্ঞানীরা বলছেন, বিশ্ব উষ্ণায়ণের জেরে জলবায়ু বদলই এর কারণ। এমন দাবদাহের জন্য দায়ী যথেচ্ছ দূষণ, গাছ কেটে নগরোন্নায়ন ও অত্যধিক তেজস্ক্রিয় বিকিরণ। ছ'টা ঋতুই যেন উধাও হয়ে গেছে ঋতুচক্র থেকে। ২০২৩ ও ২০২৪ এল নিনোর বছর। কাজেই এ বছরেও আবহাওয়ায় নানা বদল আসার সম্ভাবনা প্রবল। তীব্র তাপপ্রবাহ ছারখার করে দেবে সব, ফুটিফাটা হবে মাটি, শুকোবে জল, খরার হাহাকার দেখবে বিশ্ববাসী। প্রশান্ত মহাসাগরের চিলি ও পেরু উপকূল এবং মহাসাগরের মধ্যাঞ্চলে তৈরি হওয়া সেই ‘এল নিনো’র জেরে এ বার ওলটপালট হয়ে যেতে পারে ভারতের বর্ষার মরশুমও। উল্লেখযোগ্য ভাবে কমে যেতে পারে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ।