শেষ আপডেট: 15th June 2024 17:09
দ্য ওয়াল ব্যুরো: গুজরাতের অমরেলীর সুরগাপুরা গ্রামের ছোট্ট আরোহীর মিষ্টি হাসির আওয়াজ আর পাওয়া যাবে না। ছোট ছোট পায়ে আর সে গ্রামের মাঠেও দৌড়ে বেড়াবে না। এক মর্মান্তিক দুর্ঘটনা তাঁকে চিরতরে থেমে যেতে বাধ্য করেছে। আরোহীর বাবা-মাও এখন যেন পাথর হয়ে গেছেন। পরিবার তো বটেই, গোটা গ্রামেই নেমে এসেছে শোকের ছায়া।
গ্রামের মাঠে খেলতে খেলতেই আচমকা একটি কুয়োয় পড়ে গেছিল আরোহী। মাঠের মাঝেই প্রায় ৪৫-৫০ ফুটের গর্ত করা ছিল, যেটা সে খেয়াল করতে পারেনি। কিছুক্ষণ ধরে গোঙানির শব্দ ভেসে আসায় আশেপাশের লোক বিষয়টি খেয়াল করেন। সঙ্গে সঙ্গে খবর দেওয়া হয় স্থানীয় পুলিশে। পরে খবর যায় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী এবং দমকলের কাছে। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় শুরু হয় উদ্ধারকাজ।
শুরুতে মনে হয়েছিল কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই হয়তো আরোহীকে গর্ত থেকে বের করে আনা যাবে। প্রথম ৩-৪ ঘণ্টা তার সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে পেরেছিল উদ্ধারকারীরা। গর্তে যাতে অক্সিজেনের অভাব না হয় তার জন্য ব্যবস্থা করা হয়েছিল। পাশাপাশি দড়ি দিতে কোনও ভাবে যাতে অল্প খাবার পাঠানো যায়, সেই চেষ্টাও বাকি রাখা হয়নি। তবে সময় যত গড়াতে থাকে ততই যেন আরোহীকে জীবন্ত অবস্থায় উদ্ধার করার আশা ক্ষীণ হতে থাকে।
প্রায় ১০ ঘণ্টার ওপর পেরিয়ে যাওয়ার পর গর্ত থেকে আর কোনও শব্দ আসছিল না। উদ্ধারকারী দলের সঙ্গে কার্যত যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছিল আরোহীর। তখনই সকলে আন্দাজ করে নিয়েছিলেন কী হতে চলেছে। এরপরও অন্তত ৭ ঘণ্টা কেটে যায়। আরোহীকে উদ্ধার করার প্রচেষ্টায় কোনও খামতি না হয়নি। অবশেষে সাফল্য পায় উদ্ধারকারী দল। ১৭ ঘণ্টা পর ৫০ ফুট গভীর কুয়ো থেকে উদ্ধার করা হয় আরোহীকে।
উদ্ধারকারী দল অবশ্য দেড় বছরের এক শিশুকন্যার অসাড় দেহ গর্ত থেকে বের করতে পেরেছিল। অনেকেই ভেবেছিলেন শিশুটি হয়তো অজ্ঞান হয়ে গেছে। দ্রুত তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে চিকিৎসকরা জানান, সে মৃত। শিশুর দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। গ্রামের বাসিন্দারা শোকস্তব্ধের পাশাপাশি ক্ষুব্ধও। কেন মাঠের মধ্যে এত গভীর কুয়ো খোলা অবস্থায় থাকবে, সেই প্রশ্ন তুলেছেন তারা।