শেষ আপডেট: 21st October 2023 14:02
দ্য ওয়াল ব্যুরো: একদিকে শতাব্দী প্রাচীন দুর্গা মন্দির। আর একদিকে পীর গোরাচাঁদের মাজার শরীফ। নেই কোনও ধর্মের ভেদাভেদ, বিভাজন। জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে সবাই মিলেমিশে একাকার। দুই ধর্মের সম্প্রীতির মাঝেই দীর্ঘদিন হয়ে চলেছে দুর্গাপুজো। ৭৯ বছরে পা রাখল উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাট মহকুমার হাড়োয়া ব্লকের হাড়োয়া বাজার কমিটির দুর্গাপুজো।
মাজার শরীফ অনুষ্ঠানে যেমন হিন্দুরা মুসলিম সম্প্রদায়ের কাঁধে কাধ মিলিয়ে ঔরস উৎসব পালন করেন। ঠিক তেমনটাই হয় দুর্গাপুজার সময়েও। মুসলিম সম্প্রদায় মানুষেরা বিদ্যাধরী নদীর পাড়ের বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসবের আনন্দে মেতে ওঠেন। এমনকী দুর্গাপুজোর মূল কমিটিতে রয়েছেন মুসলিমরাও। শুদ্ধ আচার নিষ্ঠার মধ্য দিয়ে যাতে দেবী পূজিতা হন তার সব রকম ব্যবস্থা করা হয়। প্রতিবছরের মতো এ বছরও মুসলিম সম্প্রদায় মানুষ হাড়োয়া বাজার কমিটির দুর্গাপুজায় সামিল হয়েছেন।
দুর্গাপুজোর কমিটির সদস্য শাহনাওয়াজ মোল্লা জানিয়েছেন, "হাড়োয়ার মেলবন্ধনের সম্প্রীতির সংস্কৃতি জড়িয়ে রয়েছে। হিন্দু ভাইরা যেমন ঈদের সময়ে সামিল হন, মাজার শরীফের অনুষ্ঠানে আমাদের সঙ্গে তাঁরা মিলেমিশে একাকার হয়ে আনন্দ উৎসবে মাতেন, আমরাও দুর্গাপুজোর এই পাঁচ দিন তাঁদের পাশে থেকে দেবী আরাধনায় মিলিত হই।" একইভাবে সম্প্রীতির বার্তা দিয়ছেন দুর্গাপুজো কমিটির হিন্দু সদস্য রাজকুমার দে। তিনি বলেন, "এই মাটি উভয় সম্প্রদায়ের মাটি। বাবা পীর গোরাচাঁদের মেলার সময় আমরা সমস্ত কাজের অংশীদার হই। একে অপরের মধ্যে ভ্রাতৃত্বের সম্পর্ক বজায় রেখে প্রতিটি উৎসবে সকলে এক জায়গায় হই।"
পুজোর ক'টা দিন এই পুজো মণ্ডপে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সম্প্রীতির বার্তাবাহক এই দুর্গাপুজো দেখতে বহু দর্শনার্থীরা ভিড় জমান বিদ্যাধরী নদীর পারে। এবারের পুজোর উদ্বোধনে উপস্থিত ছিলেন হাড়োয়া সর্বজনীন পূজা কমিটির সভাপতি নারায়ণ চন্দ্র তালুকদার, সম্পাদক চিত্তরঞ্জন মুখার্জি, সহ-সভাপতি দীপক সেন, কমিটির সদস্য প্রবীরচন্দ্র পাল এবং রাজকুমার দে। এছাড়াও অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অভিনেত্রী চুমকি চৌধুরী এবং শিকরাকুলিন গ্রামের মহারাজ।