শেষ আপডেট: 16th July 2024 12:41
দ্য ওয়াল ব্যুরো: দেবী ভগবতী স্বপ্নে দেখা দিয়েছিলেন তাঁকে। দেবীর স্বপ্নাদেশ পেয়েই তিনি উত্তরাখণ্ডের বাগেশ্বরে ৫০০০ মিটার (সাড়ে ১৫ হাজার ফুট) উঁচুতে সুন্দরধুঙ্গ হিমবাহের মাথায় আশ্রম গড়েছেন। এরকমই স্বঘোষিত ঈশ্বরপুত্রের সন্ধান পেতেই নড়চড়ে বসেছে রাজ্য প্রশাসন। সরকারি জমিতে দেবীকুণ্ডে বেআইনিভাবে গড়ে তোলা রহস্যজনক ওই আশ্রম ও বাবার বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে উত্তরাখণ্ড সরকার।
বিতর্কিত রহস্যে মোড়া ওই বাবা যোগী চৈতন্য আকাশের দাবি, তিনি দৈব আদেশে ওখানে মন্দির গড়েছেন। সরকার-প্রশাসনের পাল্টা দাবি, ওখানে কোনও নির্মাণ করা নিষিদ্ধ। কারণ জায়গাটি পরিবেশগত দিক থেকে অত্যন্ত সংবেদনশীল। এই অবস্থায় ওই বাবার ইতিবৃত্তান্ত এবং আশ্রমের কাজকারবার নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে।
স্থানীয় গ্রামবাসী মহেন্দ্র সিং ধামির বক্তব্য, বাবা আমাদের মনে বিশ্বাস ধরান যে, তাঁর মধ্যে দৈবশক্তি আছে। তিনি দেবী ভগবতীর স্বপ্নাদেশ পেয়েছেন। তাই গ্রামবাসীকে মন্দির গড়তে সাহায্য করতে হবে। আমাদের অনেকেই তাঁর কথায় বিশ্বাস করে মন্দির তৈরি করতে সহায়তা করি।
দেবীকুণ্ড হল স্থানীয় মানুষের কাছে একটি পবিত্র স্থান। কিন্তু, আপাতত এই বাবার দৌলতে সেই কুণ্ড এখন সুইমিং পুলে পরিণত হয়েছে। তাঁকে ওই কুণ্ডে নেমে প্রায়শই সাঁতার কাটতে দেখা যায়। এটাকে ভালো চোখে মেনে নিচ্ছেন স্থানীয়রা।
আরেক গ্রামবাসী প্রকাশ কুমারের মতে, এটা একপ্রকার ধর্মদ্রোহ। শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে আমাদের দেবীবিগ্রহ ওখানে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রতি ১২ বছর অন্তর ওখানে নন্দ রাজ যাত্রার সময়ে উৎসব হয়। এখন এই তথাকথিত বাবা গ্রামের মানুষকে ভুল বুঝিয়ে জায়গাটি দখল করে রেখেছেন। যা আমাদের স্থানীয় রীতিনীতি-পরম্পরার সঙ্গে খাপ খায় না।
এতদিন ঘুমিয়ে থাকা স্থানীয় প্রশাসন গ্রামবাসীর ক্ষোভে এখন নড়েচড়ে বসেছে। বেআইনি নির্মাণের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়েছে। কাপট মহকুমা শাসক অনুরাগ আর্য বলেন, বন দফতর, পুলিশ, রাজস্ব বিভাগের একটি দল খুব শীঘ্রই দেবীকুণ্ডে পাঠানো হচ্ছে। তাঁরা সেখানে গিয়ে মন্দির ভেঙে দিয়ে যোগী আচার্যের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবেন। কয়েকদিন হল, আমার কাছে বাবার সম্পর্কে অভিযোগ জমা পড়েছে।
হিমবাহ রেঞ্জের রেঞ্জার এনডি পান্ডে বলেন, মন্দির তৈরির বিষয়ে সম্প্রতি আমাদের কাছে খবর এসেছে। পরিস্থিতি সরজমিনে তদন্ত করার জন্য একটি দল পাঠানো হচ্ছে। শুধু স্থানীয় প্রশাসন নয়, এ ধরনের সংবেদনশীল জায়গায় পাকা কাঠামো তৈরি গোয়েন্দা এবং বাহিনীর ব্যর্থতাকেও তুলে ধরেছে।