সেমিফাইনালে জোর টক্কর ইংল্যান্ড-নেদারল্যান্ডস, এদিকে ফ্রান্স ও স্পেনের।
শেষ আপডেট: 9th July 2024 15:28
অনেকদিন পর কলকাতার স্পেন-সমর্থকরা বেশ হাত-পা ছড়িয়ে বসলেন।
এমনিতে বঙ্গজ ফুটবল মহলে ব্রাজিল-আর্জেন্তিনা জ্বরের সঙ্গে এখনও পাল্লা দেওয়ার জায়গায় যায়নি ইউরোপ। কিন্তু নানা কারণে ফুটবলে ইউরোপ ও লাতিন আমেরিকার মাঝে অতলান্তিক ক্রমশ ক্ষীণ হয়ে এসেছে। একদিকে কোপা আমেরিকার সম্প্রচারই হচ্ছে না ভারতে! খেলা হচ্ছে বেয়াড়া সময়ে। তার ওপর ছিটকে গিয়েছে ব্রাজিল। আর্জেন্তিনা সেমিফাইনালে উঠলেও লিওনেল মেসিদের সামনে পড়েছে কানাডা। দ্বিতীয় সেমিফাইনালে বরং জমাটি ম্যাচ হতে চলেছে। খেলবে এবারের অন্যতম 'ফেভারিট' উরুগুয়ে ও কলম্বিয়া। যার ফলে পাল্লায় ইউরোর চাইতে অনেকটাই পিছিয়ে পড়েছে কোপা আমেরিকা।
আজই কি আগামীকালের কাজগুলো গুটিয়ে রাখবেন? পর পর দুই রাত জাগতে হবে যে! মঙ্গলবার মধ্যরাতে শুরু হতে চলেছে ধুন্ধুমার ইউরো সেমিফাইনাল। প্রথম ম্যাচেই মুখোমুখি পিরেনিজ পাহাড়ের দুইপারের দুই প্রতিবেশী, স্পেন ও ফ্রান্স। কোয়ার্টার ফাইনালে চার ম্যাচের তিনটেই গড়িয়েছে টাইব্রেকারে। এবারেও যদি তাই হয় তো ঘুমোতে ঘুমোতে রাত কাবার হয়ে যাবে। ঘুমচোখে বুধবারের সব কাজ সামলাতে হবে। আবার সন্ধ্যে হলেই রাত জাগার তোড়জোড় শুরু। বুধবার মধ্যরাতে আবার গ্যারেথ সাউথগেটের ইংল্যান্ড নামবে নেদারল্যান্ডসের বিরুদ্ধে।
শেষ অবধি শেষ হাসি হাসবে কে?
কঠিন প্রশ্ন। ততোধিক কঠিন তার উত্তর। পৃথিবীর কোনও এগজিট পোলই এই ব্যাপারে খাটবে না। ফলে এককথায় এই উত্তর না দিয়ে বরং চারটে দলের অবস্থাগুলো একবার ঝটপট চোখ বুলিয়ে দেখে নেওয়া যাক:
প্রথম সেমিফাইনাল: ফ্রান্স বনাম স্পেন
(মঙ্গলবার রাত ১২.৩০, আলিয়াঞ্জ এরেনা, মিউনিখ)
ফ্রান্স
এবারের ইউরোতে সবচেয়ে তাক লাগানো খেলা খেলছে ফ্রান্স! মাঠে একটাও গোল করেনি! অথচ দিব্যি উঠে গিয়েছে সেমিফাইনালে। শুরু থেকেই ফরাসিদের আক্রমণ একেবারে সাহারার মত শুকনো! দলের সেরা অস্ত্র অধিনায়ক কিলিয়ান এমবাপে ইউরোর আগে থেকেই পিঠের ব্যথায় ভুগছিলেন। প্রথম ম্যাচে নাক ভেঙে বসেছেন। তারপর থেকে মাস্ক পরে নেমে আরও ফ্যাসাদ বাড়িয়েছেন। বল দেখতে অসুবিধে হচ্ছে, ঘামেও অস্বস্তি বাড়িয়েছে মাস্ক। আঁতোয়া গ্রিজমান ফর্মে নেই। কোলো মুয়ানি ও এনগোলো কন্তে চেষ্টা করছেন। কিন্তু গোল আর হচ্ছে না। একটিমাত্র পেনাল্টি ছাড়া ফ্রান্সের সব গোলই হয়েছে হয় সেমসাইডে, নয়ত সেই টাইব্রেকারে গিয়ে!
দিদিয়ের দেশোঁ অবশ্য উল্টোদিকটা দেখাচ্ছেন। বলেছেন, গোল যেমন করতে পারেনি, তেমন ফ্রান্স একবার পেনাল্টি বাদে একটিও গোল খায়নি। এটাও তো ভাবতে হবে! ফ্রান্সের ভরসা অতএব রক্ষণ। থিও হার্নান্দেজ, উইলিয়াম স্যালিবা, দেয়োঁ আপামেকানো, জুল কৌন্দে আঁটোসাঁটো ডিফেন্স তৈরি করেছেন। কিন্তু তাঁর বাইরে ফ্রান্সের যে আদৌ কোন জায়গাটা ভাল, ভাবতে গেলে সমর্থকরাও মাথা চুলকোবেন। সামনে তিন ফরোয়ার্ড খেলাচ্ছেন দেশোঁ। কিন্তু গ্রিজমান-এমবাপে ভোঁতা হয়ে যাওয়ায় পিছনে বাঁ দিকের মাঝমাঠে এদুয়ার্দো কামাভিঙ্গা, এনগোলো কন্তেদের সব চেষ্টায় জল ঢেলে দিচ্ছেন প্রতিপক্ষরা। অলিভিয়ের জিহুকেও বেঞ্চে বসিয়ে রেখেছেন দেশোঁ। দেম্বেলে নামলে টেনে দিচ্ছেন ভাল। কিন্তু তিনি বা থুরাম কবে সুযোগ পাবেন কেউ জানে না। মানে, আগামীকাল আর না পেলে কবে পাবেন, কেউ জানতেও চায় না অবশ্য।
এই অবস্থায় স্পেনের বিরুদ্ধে টাইব্রেকারের ভরসায় সম্ভবত নামবেন না দেশোঁ। আশা করা যায়, বদল হতে পারে সামনে। হয়ত এমবাপের সঙ্গে শুরু করতে পারেন দেম্বেলে। সেক্ষেত্রে বসবেন গ্রিজমান। জিহুর বয়স হয়েছে। ফলে কোলো মুয়ানি-এমবাপে-থুরাম বা দেম্বেলে এই ত্রিফলা আক্রমণ সাজাতে পারেন দেশোঁ। অবশ্য ফরাসি সংবাদমাধ্যমে গুঞ্জন, গ্রিজমান দীর্ঘদিন স্পেনে খেলছেন। ফলে আগামীকাল গ্রিজমানের অভিজ্ঞতার ওপরেও ভরসা করতে পারেন দেশোঁ। শেষ অবধি ফ্রান্স প্রথমবারের জন্য মাঠে নেমে গোল করতে পারে কিনা, তার ওপরেই এমবাপেদের ভাগ্য ঝুলে থাকবে।
স্পেন
জার্মানি-স্পেন কোয়ার্টারফাইনাল ম্যাচটাকে ইউরোর অন্যতম সেরা ম্যাচ হবে বলে ধরা হচ্ছিল। হলও। তবে ইউরোর নাকি ফ্রিস্টাইল কুস্তির, সেইটেই যা একটা সন্দেহ রয়ে গেল। শেষ অবধি স্পেন জিতল বটে। কিন্তু যুদ্ধে যা ক্ষয়ক্ষতি হল, ফুটবলের কোনও বিশ্বব্যাঙ্ক বা আন্তর্জাতিক (ফুটবল)ভাণ্ডার থাকলে স্পেনকে বোধ হয় ধারকর্জ করতে হত। আট মিনিটের মাথাতেই পেদ্রিকে ফাউল করে মাঠের বাইরে করে দেন টোনি ক্রুজ। ম্যাচের শেষে দেখা যায়, মাঠ নয়, ইউরো থেকেই বাইরে চলে গিয়েছেন 'লা রোজা'-র অন্যতম নির্ভরযোগ্য মিডিও।
মাঠে দুই তরফে ফাউল হয়েছে মোট ৩৯ টি। স্পেন ফাউল করেছে ১৭ বার, জার্মানি ২২ টি। যার ফলে কার্ড সমস্যায় স্পেনের দুই মহারথী রবিন লা নরম্যান্দ ও দানি কার্ভাহাল বাইরে। লুইস দে লা ফুয়েন্তেকে অতএব সাজানো বাগানকে আবার নতুন করে সাজাতে হবে। বিশেষ করে রক্ষণ। সম্ভবত রিয়াল মাদ্রিদের নাচো ও সেভিয়ার জেসুস নাভাসকে নামাবেন ফুয়েন্তে। সঙ্গে অবশ্য আয়মেরিক লাপোর্তে ও চেলসির মার্ক কুচুরেলা থাকছেন। কিন্তু স্পেনের বড় ঝামেলা হয়ে গেল পেদ্রি বাইরে গিয়ে। ফ্রান্সের যেটুকু যা খেলা, সব মাঝমাঠেই হয়েছে। কামাভিঙ্গা-কন্তের মহড়া নেওয়ার জন্য পেদ্রি জায়গায় অতএব নিশ্চিতভাবেই নামতে চলেছেন দানি ওলমো। সঙ্গে থাকছেন রদ্রি ও ফাবিয়ান রুইজ। সামনের জন্য অবশ্য ফুয়েন্তের চাপ কম। রটে গিয়েছিল, কার্ড দেখেছেন আলভারো মোরাতা। দেখলে তিনিও বাদ পড়তেন। কিন্তু উয়েফা পরে জানায়, মোরাতা কার্ড দেখেননি। ফলে নিকো উইলিয়ামস ও লামিন ইয়ামালের সঙ্গে মোরাতাই শুরু থেকে থাকবেন।
বাস্তিলের পতন ঘটানোর জন্য অতএব স্পেনীয়দের বাড়তি সতর্ক থাকতে হবে গতির দিকে। ফরাসিদের পা থেকে বল জালে ঢুকছে না। কিন্তু এমবাপে-দেম্বেলে নিমেষে বিপজ্জনক প্রতি-আক্রমণ তুলে দিতে পারেন। মাঝমাঠে রদ্রিদের ছোট পাস খেলার পাল্টা ফ্রান্সের গতি সেক্ষেত্রে বড় ফ্যাক্টর হয়ে যাবে। দুর্ভেদ্য ফরাসি দুর্গে ফাটল ধরাতে গেলে স্পেনকে বাড়তি জোর দিতেই হবে আক্রমণে। এটা একদিক দিয়ে ভাল, কারণ স্পেনীয় আক্রমণ এবারের ইউরোয় গোলের বিচারে সফলতম। নয়ত যতই মাস্ক থাকুক এমবাপের বা যতই গোল না করুক ফ্রান্স, লা রোজাদের ছবিটা কয়েক সেকেন্ডে বদলে দিতে পারে লা ব্লুজ।
দ্বিতীয় সেমিফাইনাল: ইংল্যান্ড বনাম নেদারল্যান্ডস
(বুধবার রাত ১২.৩০, ওয়েস্টফ্যালেন স্টেডিয়াম, ডর্টমুন্ড)
ইংল্যান্ড
ইতিহাসে অন্তত উনিশ শতক অবধি ইংলিশ চ্যানেলের দু'পারের দুই মহাশক্তিধর পড়শির হাত ধরাধরি করে মিলিজুলি থাকার নজির খুব একটা নেই। এখন ইঙ্গ-ফরাসি গলায় গলায় বন্ধুত্ব যা দেখা যায়, সে নেহাতই হাল আমলের। ফুটবলে অবশ্য কড়া প্রতিদ্বন্দ্বিতা আছে। কিন্তু এবারের ইউরোতে মোটামুটি খারাপ খেলায় ফরাসিদের সঙ্গে দিব্যি পাল্লা দিচ্ছে ইংরেজরা। খাতায়-কলমে সম্ভবত ইউরোপের সবচেয়ে শক্তিশালী দল হিসেবে জার্মানি এসেছে ইংল্যান্ড। কিন্তু খাতা-কলম ছেড়ে মাঠে নামলেই মনে হচ্ছে, অধিক সন্ন্যাসীতে গাজন নষ্ট! যে হারে গ্যারেথ সাউথগেটের সমালোচনা চলছে ব্রিটিশ মিডিয়ায় (মাঠেও ভক্তরা বিয়ারের গ্লাস ছুঁড়েছেন), অভিমানী সাউথগেট বলে দিয়েছেন, 'যথেচ্ছ তামাশা করা, যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা বা সমালোচনা, এই পেশায় থাকলে সবই শুনতে হবে। বিয়ারের গ্লাস ছোঁড়াটাকে যদিও আমি স্বাভাবিক বলে ধরি না। কিন্তু জীবন আমায় অনেক বেশি কঠিন হতে শিখিয়েছে।'
এই জীবনমুখী দর্শন অবশ্য মাঠে খাটছে না। জুড বেলিংহ্যাম, বুকায়ো সাকা নিজেরা দারুণ কিছু ঝলক দেখাচ্ছেন। ফিল ফোডেনকেও মোটের ওপর ছন্দে দেখা যাচ্ছে। সামনে যদিও বিপাকে রয়েছেন অধিনায়ক হ্যারি কেন। যার ফলে ভাল গোলের সুযোগ পেয়েও হারাচ্ছে ইংরেজরা। কিন্তু সেমিফাইনালে ইংল্যান্ডের সবচেয়ে বড় চাপ, নেদারল্যান্ডসের দুর্ধর্ষ আক্রমণ! কোডি গ্যাকপো তুফানি মেজাজে আছেন। মেম্ফিস দিপাই গোল পাচ্ছেন না, কিন্তু অনেকটা জায়গা জুড়ে খেলেন। এই অবস্থায় চার ডিফেন্স খেলানোর কথা কি ভাববেন সাউথগেট? ভাবতে হবে তাঁকে। তাঁর হিসেবের দিকে বারবার আঙুল তুলছেন সমালোচকরা। বলা হচ্ছে, কোচের ভুল স্ট্র্যাটেজিতেই ইংল্যান্ডের এই ছন্নছাড়া দশা। লিভারপুলের রাইট ব্যাক ট্রেন্ট আলেকজান্ডার আর্নল্ডকে ডেনমার্কের বিরুদ্ধে মাঝমাঠে খেলিয়ে ৫৪ মিনিটের মাথায় তুলে নিতে বাধ্য হয়েছেন সাউথগেট। কনর গ্যালাহারকেও স্লোভেনিয়ার বিরুদ্ধে হাফটাইমে তুলে নিয়েছিলেন তিনি। নিউকাসলের কিয়েরান ট্রিপিয়ারকে খেলানো নিয়েও বিস্তর কথা উঠেছে। এখন থেকেই বলাবলি হচ্ছে, লুক শ' ফিট হলে কি তাঁকে নামাবেন? কিন্তু ট্রিপিয়ারকে সাউথগেট বসাবেন না। তাহলে?
তাহলে আর কি! ভরসা সেই বুকায়ো সাকা ও জুড বেলিংহ্যাম! ইংরেজরা এবার বড় বেশিমাত্রায় তাকিয়ে রয়েছে সাকার দিকে।
নেদারল্যান্ডস
নেদারল্যান্ডস ফুটবল দলের সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডলে ঢুকলেই দেখা যাবে, ফুটবলের চাইতে বেশি ছবি সমর্থকদের। এমনিতে ইউরোয় খেলা দেখতে এক দেশের সমর্থকদের অন্য দেশে ভিড় জমানো খুব একটা কঠিন নয়। যার ফলে দলে দলে বিভিন্ন দেশের সমর্থকরা এবারে ভিড় করেছেন জার্মানিতে। সেই নিরিখেও ডাচ ভক্তরা খানিক আলাদাভাবে নজর কাড়ছেন। মাঠের বাইরে, ফ্যান জোনে সর্বত্র কমলা ঢেউ বইছে। বার্লিনে তুরস্কের বিরুদ্ধে অবশ্য সমর্থকদের কড়া চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছিলেন তুর্কিরা। প্রায় লাখ দুয়েকের মত তুর্কি বংশোদ্ভূত বসবাস করেন জার্মানিতে। তুরস্কের বাইরে জার্মানিই বৃহত্তম তুর্কি জনতার দেশ।
কিন্তু সমর্থকরা গ্যালারি ভরালেও মাঠে ডাচদের অবস্থা খুব একটা আঁটোসাঁটো ছিল না। গ্রুপ থেকেই প্রায় বিদায় হয়ে যাচ্ছিল। শেষে তৃতীয় স্থানে থেকে শেষ ষোলো নিশ্চিত করেছে নেদারল্যান্ডস। কিন্তু যত সময় গড়াচ্ছে, নিজেদের গুছিয়ে নিচ্ছে রোনাল্ড কোম্যানের দল। ইউরোর আগেই দল থেকে ছিটকে গিয়েছেন মাঝমাঠের অন্যতম সেরা অস্ত্র ফ্রেঙ্কি দে ইয়ং। আয়ান মাৎসেন, টেউন কুপমেইনারসও চোট-সমস্যায় বাইরে। সেই খামতি পুষিয়ে দিয়েছেন লিভারপুলের তারকা ফরোয়ার্ড কোডি গ্যাকপো। বাঁ দিকে গ্যাকপোর পিছনে জাভি সিমনসকে রেখে একটা ফ্লুইড সাপ্লাই লাইন তৈরি করছেন কোম্যান। সামনে মেম্ফিস দিপাই সেই অর্থে খানিক ছন্নছাড়া থাকলেও মাঝমাঠ থেকে এগিয়ে আসছেন জের্ডি শোটেন। ফরোয়ার্ড ম্যালেনকে নামিয়েছেন ডান উইংসে। যাকে সাপ্লাই দিচ্ছেন ডেঞ্জেল ডামফ্রিজ।
কিন্তু নেদারল্যান্ডসের সবচেয়ে বড় শক্তির জায়গা, দরকার মত নিজেদের বদলে ফেলা। অস্ট্রিয়া তিন গোল মেরেছিল ডাচদের। ওই রাতটা ভোলেননি গ্যাকপোরা। ওটাই তাঁদের কাছে একটা অ্যালার্ম ঘড়ির মত ছিল। তুরস্কের কাছে পিছিয়ে পড়ে তড়িঘড়ি ওয়েগহর্স্টকে নামান কোম্যান। পরিস্থিতি পাল্টে যায়। দ্বিতীয়ার্ধে ৭০ ও ৭৬ মিনিটে পর পর দুই গোল দিয়ে বেরিয়ে যান ডাচরা। কিন্তু ইংল্যান্ডের মহড়া নেওয়া সোজা কথা নয়। সেই অর্থে, এবারের ইউরোয় ফ্রান্স ছাড়া কোনও বড় দলের মোকাবিলা করেনি ডাচরা। ফলে সেমিফাইনালেই কোম্যানের একেবারে অগ্নিপরীক্ষা হতে চলেছে।
হিসেব মত, স্পেন-ফ্রান্স যুদ্ধে আড়ে-বহরে স্পেনই অনেকটা এগিয়ে। এর আগে তিনবার ইউরো জিতেছে স্পেন। ২০০৮ ও ২০১২ সালে পর পর দু'বার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে 'লা রোজা'। ২০১২ সালে ইউরো হয়েছিল পোল্যান্ড-ইউক্রেনে। কিভের অলিম্পিক ন্যাশনাল স্টেডিয়ামে ফাইনালে ইতালিকে চার গোল মেরেছিল স্পেন। তার আগের ইউরো জয় অবশ্য ১৯৬৪ সালে। ফাইনালে স্পেনের বিরুদ্ধে ছিল সোভিয়েত ইউনিয়ন। ফ্রান্স ইউরো জিতেছে ২ বার। প্রথমবার ১৯৮৪ সালে জিতেছিল মিশেল প্লাতিনির নেতৃত্বে, দ্বিতীয়বার ২০০০ সালে আজকের কোচ দিদিয়ের দেশোঁর অধিনায়কত্বে।
ইংল্যান্ডের ফুটবলভাগ্যে ইউরো একবারও জোটেনি। প্রথম ফাইনালে উঠেছে গতবার। ফলে ইংরেজ ভক্তরা আবার 'কামিং হোম'-এর স্বপ্নে বিভোর। নেদারল্যান্ডস জিতেছে একবারই। ১৯৮৮ সালে। মিউনিখের পুরনো অলিম্পিক স্টেডিয়ামে সোভিয়েত ইউনিয়নকে হারিয়েছিল রুড গুলিটের নেদারল্যান্ডস। ম্যাচে ছিলেন আজকের কোচ রোনাল্ড কোম্যান। ওলন্দাজ-ইংরেজদের যুদ্ধে অবশ্য ইংরেজদেরই খানিক এগিয়ে রাখতে হয়। সেক্ষেত্রে স্পেন-ইংল্যান্ড ফাইনাল হতে পারে। কিন্তু সমালোচকরা অনেকেই বলছেন, স্পেনীয় ও ডাচদের মধ্যেও ফাইনাল হওয়ার সম্ভাবনা বেশ ভাল।
তাতেও অবশ্য পাল্লা ভারি স্পেনেরই।