শেষ আপডেট: 26th June 2024 15:29
দ্য ওয়াল ব্যুরো: জোট নির্ভর নরেন্দ্র মোদী সরকারকে বিরোধীরা শুরু থেকেই চাপে রাখার কৌশল নিয়েছে। অন্যদিকে, সরকারও যে প্রতি আক্রমণে প্রস্তুত বুধবার নতুন লোকসভার প্রথম অধিবেশনের দ্বিতীয় দিনে স্পিকার নির্বাচনের পর থেকেই তা স্পষ্ট হয়ে গেল।
বিজেপির ওম বিড়লা দ্বিতীয়বার লোকসভার স্পিকার নির্বাচিত হওয়ার পর রাহুল গান্ধী, সমাজবাদী পার্টির অখিলেশ যাদব, তৃণমূলের সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, এনসিপির সুপ্রিয়া সুলহেরা তাঁকে অভিনন্দন জানানোর পাশাপাশি দলের ঊর্ধ্বে উঠে ‘সবকা সাথ’ থাকার পরামর্শ দিয়েছেন। রাহুল গান্ধী সরাসরি বলেছেন, সরকারের সংখ্যা বেশি বটে, কিন্তু স্পিকারকে মনে রাখতে হবে বিরোধীরাও জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে এসেছেন। তাঁদেরও কণ্ঠ ছাড়ার সুযোগ দিতে হবে। বিগত লোকসভায় ওম বিড়লার স্পিকার হিসাবে ভূমিকার ঘুরিয়ে সমালোচনা করেন অখিলেশ, সুদীপ, সুপ্রিয়ারা। রাহুল সংক্ষিপ্ত ভাষণেই একাধিকবার সংবিধান মেনে চলার কথা বলেন স্পিকারকে।
বরাবরের মতো হাসিমুখেই বিরোধীদের কথা শুনেছেন বিড়লা। বুধবার তিনি দ্বিতীয়বার স্পিকার নির্বাচিত হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেন, আমাদের স্পিকারের মুখে সর্বদা হাসি। তিনি সকলের পছন্দের মানুষ হতে পারার এটাও একটা কারণ। প্রধানমন্ত্রী জানান, ওম বিড়লা এক বিরল রাজনীতিক যিনি সারা বছর গরিব মানুষের পাশে থাকেন। দুঃস্থদের নানাভাবে সাহায্য করে থাকেন।
প্রধানমন্ত্রী বুধবার প্রথা মেনে তাঁর মন্ত্রিসভার সদস্যদের সঙ্গে সাংসদদের পরিচয় করিয়ে দেন। এরপর বলতে উঠে স্পিকার ওম বিড়লা বলেন, ২৫ জুন স্বাধীন ভারতের ইতিহাসে এক অন্ধকারময় দিন। ১৯৭৫ সালের এই দিন মাঝরাতে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী জরুরি অবস্থা জারি করে দেশবাসীর মৌলিক অধিকার হরণ করেছিলেন। তিনি বিরোধী নেতাদের জেলে পুরে দেন। সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা কেড়ে নেন। অনেক সাংবাদিককে গ্রেফতার করেন। বহু মানুষ পুলিশি নির্যাতনের শিকার হন।
এই বলে স্পিকার ঘোষণা করেন, জরুরি অবস্থা এবং তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরার ভূমিকার নিন্দা করে এই সভা প্রস্তাব গ্রহণ করছে। এরপর জরুরি অবস্থার সময় রাষ্ট্রীয় নিপীড়নে বলি নাগরিকদের স্মরণে দু মিনিট নীরবতা পালন করার কথা ঘোষণা করেন। তার আগে অবশ্য অধিকাংশ বিরোধী সাংসদ সভা ছেড়ে বেরিয়ে যান।
স্পিকারের এই ভূমিকা থেকে স্পষ্ট বিরোধীরা যতই তাঁকে নিরপেক্ষ থাকার কথা বলুক না কেন, সুযোগ পেলে তিনিও ছাড়বেন না। রাজনৈতিক মহল মনে করছে, আসলে স্পিকারকে দিয়ে শাসক দলই বার্তা দিল বিরোধীরা আগের বারের তুলনায় সংখ্যায় বেশি হলেও সরকার চুপ করে থাকবে না। স্পিকারও বলেন, আমি কারও বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে চাই না। কিন্তু সদস্যদের মনে রাখতে হবে তাঁদেরও সংসদের মর্যাদা রক্ষা করে চলা দরকার।