দিল্লিতে নির্বাচন কমিশনের সদর কার্যালয়।
শেষ আপডেট: 22 May 2024 17:12
দ্য ওয়াল ব্যুরো: লোকসভা নির্বাচনের পাঁচ দফা ভোট হয়ে যাওয়ার পর আজ, বুধবার বিজেপি এবং কংগ্রেস পার্টিকে তুলোধনা করল নির্বাচন কমিশন। বিজেপি সভাপতি জেপি নাড্ডা এবং কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গেকে লেখা দুটি পৃথক সতর্কবার্তায় কমিশন বলেছে, ভোটের প্রচারে কোনওভাবেই দেশের সামাজিক-সাংস্কৃতিক পরিবেশকে বলি দেওয়া চলবে না।
নির্বাচনকে কেন্দ্র করে জনসভায় দুই দলেরই তারকা প্রচারকরা একে অপরের বিরুদ্ধে জাত-ধর্ম বিষয়ক বিদ্বেষ ভাষণ দিয়ে চলেছেন। যা নিয়ে দুই প্রধান রাজনৈতিক দল নির্বাচন কমিশনে একের পর এক অভিযোগ জমা দিয়েছে। বিশেষত বেশি অভিযোগ উঠেছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে।
ভোটপর্ব যখন শেষের দিকে, তখন এই প্রথম মুখ খুলল কমিশন। কমিশন চিঠিতে লিখেছে, নির্বাচন হল সেই প্রক্রিয়া যেখানে রাজনৈতিক দলগুলি জয়ের জন্য লড়াই করে। এর মধ্য দিয়ে তারা নিজেদের আদর্শগত শ্রেষ্ঠত্ব তুলে ধরার সুযোগ পায়। ভোটারদের মধ্যে আস্থা ও আশা গড়ে তোলে। দ্বিতীয় অংশ হল, আরও অমূল্য। ভারতের নির্বাচনে দেশের ঐতিহ্য এবং গণতন্ত্রকে রক্ষা করার কাজ। কোনওভাবেই কাউকে এই সংস্কৃতিকে দুর্বল করতে দেওয়া যায় না।
কমিশন আরও বলেছে, ভোট আসে, ভোট চলে যায়। কিন্তু আপনাদের মতো দলের কাজ হল দেশের সামাজিক-সাংস্কৃতিক পরিবেশকে অক্ষুণ্ণ রাখা। দেশের বর্তমান এবং ভবিষ্যৎকে পুষ্ট করা রাজনৈতিক নেতাদের নৈতিক কর্তব্য। এর আগে কমিশন অভিযোগ প্রসঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলির কাছে তাদের বক্তব্য তলব করেছিল। কিন্তু আজকের নির্দেশে বোঝা গেল যে, আত্মপক্ষ সমর্থনে তারা যা বলেছিল তা মানতে রাজি হয়নি কমিশন।
বিজেপিকে লেখা চিঠিতে কমিশন নির্দেশ দিয়েছে, কেন্দ্রের শাসকদল হিসেবে আপনাদের দায়িত্ব বেশি। আপনারা আপনাদের প্রচারকদের বলে দেবেন, ভাষণদানকালে যেন সংযম দেখান তাঁরা। কোনওভাবেই আদর্শ আচরণবিধি ভঙ্গ করা যাবে না। যাতে স্পষ্ট বলা আছে, কোনও দল বা প্রার্থী ঘৃণা বা বিদ্বেষমূলক কথা বলতে পারেন না। যার ফলে জাতি, সম্প্রদায়, ধর্ম কিংবা ভাষাগত প্রভেদকে রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার না করা হয়।
সমাজে ভাঙন ধরাতে পারে এমন কথা বলা থেকে সংযত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বিজেপি সভাপতিকে। ভাষার প্রয়োগ সম্পর্কেও সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে কমিশনের তরফে। একইভাবে কংগ্রেস সভাপতি খাড়্গেকেও সাবধান করে দিয়ে কমিশন বলেছে, কোনওভাবেই দেশের প্রতিরক্ষা নিয়ে কোনও বিদ্বেষমূলক ভাষণ যাতে কেউ না দেন। সেনাবাহিনীর মনের উপর প্রভাব ফেলে এমন কথা প্রচারে আনা যাবে না। দেশের সংবিধান ধ্বংস করে ফেলা হবে অথবা বিক্রি হয়ে যাবে এমন কথা বলা থেকেও বিরত থাকতে বলেছে কমিশন।