শেষ আপডেট: 6th November 2023 19:59
দ্য ওয়াল ব্যুরো: সোমবার তাঁর নির্বাচন কেন্দ্র ভবানীপুরে বিজয়া সম্মিলনীর আয়োজন করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে বক্তৃতার সময়ে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়লেন তৃণমূল নেত্রী।
দলের নেতা কর্মীদের উদ্দেশে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন,“আমি মরে গেলে দেখবেন যাঁরা আমার নামে গালি দেয় তাঁরাই প্রথম মালা নিয়ে ঢুকবে। একটাকেও ঢুকতে দেবেন না। আমি বলে গেলাম। আমি নিজের নামে কিচ্ছু করিনি, স্টেডিয়ামও করিনি।” বুজে যায় নেত্রীর ভারী গলা।
দিদির মুখে এ কথা শুনে উত্তীর্ণ সভাঘরে যেন হঠাৎ নীরবতা নেমে আসে। যেন পিন পড়লেও শোনা যাবে। মন্ত্রী বিধায়করা একে অপরের মুখ চাওয়াচাওয়ি করতে শুরু করেন। খানিক থেমে মুখ্যমন্ত্রী বলেন,“আমি মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে এক টাকাও নিই না। আমি কেন্দ্রের মন্ত্রী ছিলাম, সেখান থেকে পেনশন নিই না। আমি সাংসদ হিসাবেও পেনশনের টাকা নিই না। আমার যা রোজগার তা ওই বই বিক্রি করে রয়্যালটি থেকে যা পাই। যদি সব কিছু নিতাম তাহলে আমার তো এখন ৪০-৫০ কোটি টাকা জমানোর কথা।”
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে যে কোনও সড়ক বা স্টেডিয়ামের নামকরণ হয়নি তা বাস্তব। এ ব্যাপারে মাইলফলক তৈরি করে রেখেছেন উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মায়াবতী। গোটা উত্তরপ্রদেশে নিজের কত যে মূর্তি বসিয়েছেন তিনি ইয়ত্তা নেই। আবার আমদাবাদে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নামে স্টেডিয়ামের নামকরণ হয়েছে। সম্ভবত কারও নাম না করে সেই সব স্মরণ করাতে চেয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
শিক্ষা, রেশন সহ একাধিক নিয়োগ কেলেঙ্কারির তদন্ত করছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। জেলে রয়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়, প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের প্রাক্তন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্য সহ আরও অনেকে। সদ্য ইডির হাতে গ্রেফতার হয়েছেন প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকও। শাসকদলের একাধিক নেতী, মন্ত্রীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় অনেকেই তৃণমূল এবং নেত্রীর দিকেও অভিযোগের আঙুল তুলছেন। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের অনেকের মতে, হতে পারে সেই কারণেই পাল্টা আক্রমণাত্মক হয়েছেন তৃণমূল নেত্রী।
এদিন বিজয়া সম্মিলনীর মঞ্চেও কেন্দ্রীয় বঞ্চনার প্রতিবাদে সরব হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, “১০০ দিনের কাজের টাকা দেয়নি। বাংলার আবাস যোজনার টাকা দেয়নি। আবার এখন বলছে ঘর ঘর মে জল। আমরা ৪০ শতাংশ দিই, ওরা ৬০ শতাংশ দেয়। তাতেও বলে সব ওরা করছে। ইসরো যদি কিছু করে তাতেও বলে ওরা করেছে।”
একই সঙ্গে তিনি বলেন, “এক কোটি রেশন কার্ড আমরা বাদ দিয়েছি। কারণ ওই এক কোটি রেশন কার্ডে ভুয়ো চাল তোলা হতো, ভোট দেওয়া হতো বাম আমলে। আমার তো সাত আট বছর চলে গেছে এই এক কোটি ফলস রেশন কার্ড বাতিল করতে গিয়ে। অনেকে রেশন তোলেন না। তাঁদের জন্যে আলাদা সাদা রংয়ের কার্ড করে দিয়েছি। যাতে কখনও না এসে বলে যে আপনারা ভারতীয় নন।”
এরপরই কর্মীদের উদ্দেশে মমতা বলেন, “আপনারা আমার এই লড়াইয়ের সঙ্গে আছেন তো ? বাংলার সঙ্গে আছেন তো? যত লড়াই আসে আসুক, যত সংগ্রাম আসে আসুক। অন্যায়ের বিরুদ্ধে ফোঁস করাটা আমাদের অধিকার। এবং আমি আমৃত্যু এটা চালিয়ে যাব।”