শেষ আপডেট: 20th July 2024 14:53
দ্য ওয়াল ব্যুরো: সিনেমার নায়ককে বাঁচাতে পোষা কুকুর, বাঁদর, হাতিকে 'আত্মত্যাগ' করতে দেখা গিয়েছে। এবার একটা পুলিশ কুকুর ঘনঘোর বৃষ্টির মধ্যে অন্ধকার রাতে, গন্ধ শুঁকেশুঁকে টানা ৮ কিমি ছুটে গিয়ে এক মহিলাকে খুনের হাত থেকে বাঁচাল। এরকমই অসাধ্য সাধন করেছে কর্নাটক পুলিশের ডোবারম্যান প্রজাতির মেয়ে কুকুর তুঙ্গা-২।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, রাত পৌনে ১০টা নাগাদ দেবাঙ্গেরে জেলার সান্তেবেন্নুর-এ রাস্তার ধারে এক ব্যক্তিকে মৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে হাইওয়েতে টহলরত পুলিশ। ১০টা ১০ মিনিট নাগাদ তদন্তের স্বার্থে স্থানীয় পুলিশ স্নিফার ডগ তুঙ্গা-২কে নিয়ে আসে। ১০টা ২৫ মিনিট নাগাদ তুঙ্গা গন্ধ শুঁকে ছুটতে শুরু করে। পঁয়তাল্লিশ মিনিট ধরে সে লাগাতার ছুটতে থাকে। তখন আকাশ ভেঙে বৃষ্টি চলছে। জঙ্গলের অন্ধকার পথে মাঝেমাঝে সে দাঁড়িয়ে পড়ে গন্ধ শুঁকতে। আবার দৌড়। তুঙ্গার দেখানো জায়গায় পুলিশ একটি ঘরের দরজা ভেঙে সন্দেহভাজন খুনিকে দ্বিতীয় খুন করার আগে পাকড়াও করে ফেলে।
ঘটনাটি একটি ত্রিকোণ সম্পর্কের জের বলে পুলিশ জানিয়েছে। পরকীয়া সম্পর্কের সন্দেহে এক ব্যক্তি তার স্ত্রীর পুরুষ বন্ধুকে প্রথমে খুন করে রাস্তার ধারে ফেলে দেয়। পরে সে তার স্ত্রীকে খুন করার চেষ্টা করে। জখম অবস্থায় পুলিশ সেই মহিলাকে উদ্ধার করে এই ডোবারম্যানের দৌলতে।
তুঙ্গার দেখভালকারী পুলিশ কনস্টেবল শফিউল্লা বলেন, মুদিখানার দোকানদার রঙ্গস্বামীর স্ত্রী ৩০ বছরের যুবতী আর রূপার সঙ্গে প্রেম ছিল পেশায় রাজমিস্ত্রি ৩০ বছরের সন্তোষ কুমারের। পুলিশের হাতে ধরা পড়ার সময় রঙ্গস্বামী কবুল করে যে, তোমরা আমাকে ধরে না ফেললে একেও আমি খুন করতাম যেমন একটু আগে ওর প্রেমিককে মেরে দিয়েছি। কাঠের টুকরো দিয়ে রূপাকে বেদম পেটানোয় রক্তাক্ত অবস্থায় পুলিশ তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করেছে।
পুলিশ জানিয়েছে, ডোবারম্যান প্রজাতির মেয়ে কুকুর তুঙ্গার বয়স ২ বছর। ঘটনাস্থলের গন্ধ শুঁকে সে রঙ্গস্বামীকে খুঁজে বের করেছে। পুলিশ যখন রাস্তার ধারে তদন্তের কাজে ব্যস্ত, তখন হঠাৎই ছুট দেয় তুঙ্গা। কনস্টেবল রফিউল্লা বুঝতে পারেন সে গন্ধ শুঁকে কিছু টের পেয়েছে। তিনিও ছুটতে শুরু করেন তার পিছনে।
পুলিশের এক কর্তা জানান, কর্নাটক পুলিশের কাছে এর আগেও তুঙ্গা নামে একটি কুকুর ছিল। ২০২২ সালে সে মারা যায়। ওই কুকুরটি ৭০টি খুনের কেসের রহস্যভেদ করেছিল। তাই তার স্মৃতিতে এই কুকুরেরও নাম রাখা হয় দ্বিতীয় তুঙ্গা। ও যদি খুনির ঘর চিনিয়ে না দিত, তাহলে রঙ্গস্বামী তার স্ত্রীকেও মেরে ফেলত, বলেন তিনি।