Advertisement
Advertisement
শেষ আপডেট: 13 November 2023 11:19
দ্য ওয়াল ব্যুরো: বাতাসের গুণমান কোথাও ৫০০, কোথাও ৯০০, আবার কোথাও ৯০০ ছাড়াল। এমন দূষণ গত কয়েকবছরে দেখেনি কেউ। কালো বিষাক্ত ধোঁয়ায় ঢেকেছে রাজধানীর আকাশ। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ, পুলিশের চোখ রাঙানি, পরিবেশবিদদের অনুরোধকে থোড়াই কেয়ার করে দীপাবলির রাতে দেদার বাজি ফাটাল দিল্লিবাসী। একেই দিল্লির বাতাসে বিষাক্ত ধোঁয়াশা ছিলই, তার উপর বাজির ধোঁয়া মিশে গিয়ে দূষণ ‘অতি ভয়ঙ্কর’ পর্যায়ে পৌঁছেছে।
ধোঁয়াশায় ঢেকেছে রাজধানীর বাতাস। দৃশ্যমানতাও অনেক কমে এসেছে। দিল্লিতে যে কোনও রকম বাজি পোড়ানোতেই নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল সুপ্রিম কোর্ট। যানবাহন চলাচলেও জোড়-বিজোড় নীতি চালু হয়েছিল। আর কিছুদিন পরে দৃষণ ধুতে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রস্তুতিও চলছে। তার মধ্যেই দিল্লিবাসীর বেপরোয়া মনোভাব আরও বড় বিপদ ডেকে আনল বলেই মনে করছেন পরিবেশবিদরা। গোলে মার্কে, রামনগর মার্কে, পাহারগঞ্জ, মন্দির মার্গ প্রভৃতি এলাকায় পোড়া বাজি ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে থাকতে দেখা গেছে রাস্তায়। আতস বাজির সঙ্গে শব্দবাজির তাণ্ডবেও প্রাণ ওষ্ঠাগত হয়েছে গতকাল রাতে।
কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ (সিপিসিবি) জানিয়েছে, রবিবার সকালে দিল্লিতে বাতাসের গুণমান (এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স বা একিউআই) কিছুটা ভালর দিকে ছিল। একিউআই পরিমাপ করা হয় ২১৮। কিছুটা স্বস্তিতে ছিলেন পরিবেশবিদরা। কিন্তু সন্ধ্যা নামতেই বাজি পোড়ানোর ধূম পড়ে যায়। বাজির ধোঁয়ায় ফের বিষ-বাষ্পে ঢাকতে শুরু করে দিল্লির আকাশ। রাতে দেখা যায় দিল্লির বাতাসের গুণমান ৫০০ ছাড়িয়ে গেছে। জওহরলাল নেহেরু স্টেডিয়ামের আশপাশে এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স ছিল ৯১০ যা অতি বিপজ্জনক। লাজপত নগরে রাতে একিউআই ওঠে ৯৫৯, কারোল বাগ এলাকায় ৭৭৯।
দিল্লির স্বাস্থ্য বিভাগ জনসাধরণের জন্য একটি সতর্কবার্তা জারি করেছে। যেখানে বলে হয়েছে পরিস্থিতি বিচারে বর্তমান সময়ে প্রাতঃভ্রমণ ও ব্যায়াম এড়িয়ে চলতে হবে। গর্ভবতী মহিলা, প্রবীণ নাগরিক এবং শিশু, যারা কোনও না কোনওভাবে চিকিৎসাধীন, তাদের রাস্তায় বেরোতে নিষেধ করা হয়েছে। আবহাওয়ার পরিস্থিতি দেখে আগামী ২০-২১ নভেম্বর দিল্লিতে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানো হবে দিল্লিতে।
চিকিৎসকরা বলছেন, বাড়তে থাকা দূষণ স্কিৎজোফ্রেনিয়া, অবসাদ বা ডিপ্রেশন, স্মৃতিনাশ বা ডিমেনশিয়ার কারণ হয়ে উঠছে। কারণ বাতাসে ভাসমান বিষাক্ত কণা কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলছে। শিশুর মানসিক বৃদ্ধিও থমকে যাচ্ছে দূষণের কারণেই। বিশেষ করে সদ্যোজাতরা যদি দূষিত আবহাওয়ায় বেশি সময়ে কাটায়, তাদের উপর প্রভাব বেশি পড়ে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, বায়ুদূষণ যত বাড়বে, ততই কমবে মস্তিষ্কের বৃদ্ধি। তাই দূষণের মাত্রা কমাতে না পারলে আগামী দিনে আরও ভয়ঙ্কর জটিল মানসিক ও শারীরিক ব্যধির মুখোমুখি হতে হবে।
Advertisement
Advertisement