শেষ আপডেট: 3rd August 2024 16:15
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ২০২২ সালের অগস্ট মাস থেকে স্তব্ধ হয়ে রয়েছে স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইব্যুনাল। চেয়ারম্যান না থাকার কারণে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে চাকরি ও নিয়োগ প্রক্রিয়া সংক্রান্ত মামলার শুনানি বন্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে।
স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইব্যুনালে মূলত রাজ্য সরকারের বিভিন্ন দফতরের নিয়োগ সংক্রান্ত মামলার শুনানি হয়। ২০২৩ সালের মার্চ মাসে হাইকোর্টের বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন নির্দেশ দিয়েছিলেন, দ্রুত চেয়ারম্যান নিয়োগ করে মামলার শুনানি করতে হবে। সেই নির্দেশের এক বছর পেরিয়ে গেলেও আজও দরজা খোলেনি স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইব্যুনালের।
হাইকোর্টে সেই সংক্রান্ত একটি মামলা দায়ের হয়েছে। বিচারপতি তপব্রত চক্রবর্তী ও বিচারপতি পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চে মামলাকারীদের পক্ষের আইনজীবী আশীষ কুমার চৌধুরী সওয়াল করেন, "কলকাতা হাইকোর্টের হস্তক্ষেপ ছাড়া স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইব্যুনালের ঘুম ভাঙ্গানো যাবে না। কলকাতা হাইকোর্ট যদি মামলাকারীদের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তা না করে তাহলে তারা কোথায় যাবেন? হাইকোর্টেও যদি মামলার শুনানি না হয় তাহলে বিচার প্রার্থীরা বঞ্চনার শিকার হবে। আর এই সুযোগে রাজ্য সরকার একটার পর একটা অবৈধভাবে নিয়োগ প্রক্রিয়া চালিয়ে যাবে।"
মামলাকারীর আইনজীবীর বক্তব্যের প্রেক্ষিতে রাজ্যের আইনজীবী তপন মুখোপাধ্যায়ের কাছে উত্তর জানতে চান বিচারপতি তপব্রত চক্রবর্তী। ভর্ৎসনার সুরে বিচারপতি বলেন, "স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইব্যুনালে রাজ্য সরকার কি পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে? দীর্ঘদিন এভাবে চলতে পারেনা, রাজ্য সরকারকেই স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইবুনাল চালানোর দায়িত্ব নিতে হবে।"
মামলাকারীদের অভিযোগ, ২০১৯ সালে আইসিডিএস সুপারভাইজারের জন্যে ২৯৫৪টি শূন্যপদে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। ২ লক্ষ ৮৮ হাজার ৮৮০ জন এই পদের জন্য পরীক্ষায় বসেছিলেন। এখনও পর্যন্ত ১৬২৯ জনকে নিয়োগ করা হয়েছে। বাকি শূন্যপদে আজও নিয়োগ করা হয়নি। এই পরিস্থিতিতে ট্রাইবুনালে মামলা করার জায়গা পাচ্ছেন না তাঁরা। নিরুপায় হয়ে কলকাতা হাইকোর্টে দ্বারস্থ হয়েছেন।
এর আগে পাবলিক সার্ভিস কমিশনেরের কাছে মামলাকারী প্রার্থীরা আবেদন জানিয়েছিলেন, সমস্ত পরীক্ষার খাতা পুনর্মূল্যায়ন করতে হবে । কিন্ত তারই মধ্যে নিয়োগ প্রক্রিয়া চলতে থাকে। অবশেষে হাইকোর্টে দ্বারস্থ হয় মামলাকারীরা। পুনর্মূল্যায়ন এবং স্বচ্ছ নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।
হাইকোর্টের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, তারা এই মামলা শুনতে পারবেন না, স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইবুনালকেই এই মামলা শুনতে হবে। কিন্তু আদালতের সেই নির্দেশ আজও কার্যকর হয়ে উঠতে পারেনি।
রাজ্যে যখন বেকারত্বের সংখ্যা বাড়ছে তখন কলকাতা হাই কোর্ট এবং স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইবুনালের মধ্যে এই দীর্ঘ পথ পেরিয়ে কবে চাকরি প্রার্থীরা চাকরি পাবেন,তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন হাইকোর্টের আইনজীবী মহলের একাংশ।