শেষ আপডেট: 8th October 2023 13:53
পুজো এসে গেল। আকাশে-বাতাসে আগমনী সুর। সামনের সপ্তাহেই মহালয়া। তারপর আর ৭ দিনের অপেক্ষা। এবারে ঘোড়ায় আসছেন মা দুর্গা। এর মধ্যে বেশিরভাগেরই নতুন জামা-কাপড় কেনাকাটি শেষ পর্যায়ে, বেড়ানো কিংবা প্যান্ডেল হপিংয়ের ফাইনাল ম্যাপ রেডি। এমন সময় সেলেবরা কী করছেন? এবারের পুজোটা কেমনভাবে কাটানোর পরিকল্পনা করছেন তাঁরা? 'দ্য ওয়াল'-এর পুজোর আড্ডায় সেসব কথাই জানালেন জনপ্রিয় অভিনেত্রী তনিমা সেন।
বর্তমানে বাংলা ধারাবাহিক কিংবা ছবির জগতে তর্কযোগ্যভাবে শ্রেষ্ঠ মহিলা কমেডিয়ান তিনিই। পর্দায় তাঁকে দেখলেই আট থেকে আশি-সকলের মুখে ফুটে ওঠে হাসি। তবে শ্যুটিং-এর বাইরে এবার খোশগল্পে মজলেন অভিনেত্রী।
পুজোর গন্ধ কেমন লাগছে?
এখন তো শপিং সারা বছর হয়,পুজোর বাজার এখন আর নতুন করে মন টানে না। আমাদের ছোটবেলা কেন, বেশ বড়বেলা অবধি পুজোর একটা আলাদা আমেজ ছিল। আগে পুজো আসছে, পুজোর জিনিস কেনা হবে,পুজোর ছুটিতে কোথাও ঘুরতে যাওয়া হবে- এগুলো খুব বড় ব্যাপার ছিল। কিন্তু এখন সারাবছর এত কেনাকাটা, ঘরে বসে অনলাইন শপিং, কতজন শাড়ির ব্যবসা করছেন, তাঁদের থেকে দু একটা শাড়ি কেনা, আজকাল পুজোর জামাকাপড়ের আলাদা গন্ধটাই আর নাকে লাগে না। এমনকী, এখনকার ছোটদের মধ্যেও পুজো আসছে বলে খুব একটা উন্মাদনা দেখি না। নীল আকাশে সাদা সাদা ছেঁড়া মেঘ দেখে আমাদের তবু হয়তো একটু মনে হয় পুজো আসছে।
পুজোয় বেড়ানো নিয়ে কী পরিকল্পনা তনিমার?
প্রতিবারের মতো এবারও পুজোতে ঘুরতে বেরিয়ে পড়ব। ষষ্ঠীর দিন কলকাতার ঠাকুর দেখে কাটিয়ে সপ্তমীর দিন ভোরবেলা বেরিয়ে যাই ঘুরতে। কোনও বুকিং না করেই গাড়ি করে ক'জন বন্ধু মিলে দল বেঁধে বেরিয়ে পড়ব। এবার ইচ্ছে আছে ওড়িশার দারিংবাড়ি যাবার। ভোরে বেরিয়ে রাতে গিয়ে পৌঁছাব। থাকার কিছু না কিছু ব্যবস্থা হয়েই যাবে। কোনওবারই ফিরে আসিনি। এরকমভাবেই যাই আমরা।
পুজোর প্রেম:
অল্প বয়সেই বিয়ে হয়ে গেছিল অভিনেত্রীর। পুজোর প্রেম কতটা উপভোগ করতে পেরেছেন তনিমা?
শরতের মেঘের মতো পুজোর প্রেম উড়ে উড়ে এসেছে। আবার বিজয়া দশমীর পর বিসর্জন হয়ে গেছে। পুজোর চারদিন মনে হয়েছে একে না দেখে থাকব কী করে? পাগল হয়ে যাবার অবস্থা। তারপর যেই বিজয়া দশমী হয়ে গেল, সে প্রেমিক কোথায় চলে গেল। হয়তো অন্য পাড়া থেকেই আমাদের পাড়াতে এসেছিল। পুজো শেষ, চারদিনের প্রেমও শেষ। আবার দু'বছর খেলা হয়েছে, সেই প্রেমও আছে।
আর প্রেম তো সব কিছুতেই। যতদিন আছি আমার সঙ্গে রবীন্দ্রনাথ আছেন, হেমন্ত মুখোপাধ্যায় আছেন। তাঁরাই আমার এখনকার প্রেম। আমাদের পুজোর যে প্রেম বিজয়া দশমীতে বিসর্জন হয়ে যেত সেই প্রেমকে হেমন্তর গানের মতোই বলতে হয়, 'তুমি চলে গেলে,কিছু বললে না, কিছু শুনলে না... চলে গেলে অবুঝ মনের পথ ধরে।'
পুজোর খাওয়া-দাওয়া নিয়ে কী প্ল্যান?
আসলে পঞ্চমীর দিন আমার মেয়ের জন্মদিন। আবার কালী পুজোর দিন আমার জন্মদিন। ভাল ভাল পুজোর দিনে জন্মেছি বলে এসব দিনে বাড়িতেই খাওয়া-দাওয়া করি। আমার নাতি আবার আরেক ধাপ এগিয়ে। তার বিশ্ব নারী দিবসের দিন জন্মদিন। সে প্রেমে টগবগ করছে সারা বছর (হাসি)।
পুজোয় পঞ্চমীর দিন মেয়ের জন্মদিনে নিজেই রান্না করি। এখনও দেখলাম রান্নাটা করতে ভালই লাগে। রান্না আমার প্যাশন, নেশা। রান্না করতে এখনও পর্যন্ত আমার কোনওদিন কষ্ট হয়নি।
তনিমার আগামী কাজ কী কী?
দুটো খবর রয়েছে। এবছর বইমেলায় আমার ছোটগল্পগুলো নিয়ে একটা বই বেরোচ্ছে। আর আমার লেখা তিনটে ছোট গল্প নিয়ে ট্রিলোজি ফিল্ম হচ্ছে, যার ডিরেক্টরও আমি। তিন নারীর গল্প। অভিনয় করবেন সুদীপ মুখোপাধ্যায়, আমি এবং আরও অনেকে। কুড়ি-পঁচিশ মিনিট করে তিনটে ছোট ছবি, কিন্তু একসঙ্গে একটা ছবি হিসেবে থাকবে। আমি এর আগেও ডিরেকশন দিয়েছিলাম 'পথের শেষ কোথায়' ছবিতে। এই ট্রিলজি ফিল্ম অত পুরস্কারের দৌড়ে পাঠাবার ইচ্ছে নেই, যাঁরা আমার সাধারণ দর্শক তাঁদের দেখানোর জন্যই বানাব।